করোনা বায়ুবাহিত স্বীকারোক্তি সিডিসির

প্রকাশ | ১০ মে ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত- প্রথমবারের মতো এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। শনিবার করোনাভাইরাস সংক্রান্ত হালনাগাদ গাইডলাইনে এ স্বীকারোক্তি দিয়েছে সংস্থাটি। এতে বায়ুবাহিত হয়ে করোনা সংক্রমণের দিকটি জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি 'সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন' (সিডিসি) জানিয়েছে, আক্রান্তের থেকে ছয় ফুটের বেশি দূরে থাকা কোনো ব্যক্তি বায়ুবাহিত করোনাভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারেন। বিশেষ করে, হাঁচি, কাশির সময়ে যে সূক্ষ্ণ ড্রপলেট, অ্যারোসল উড়ে আসে, তার মাধ্যমে হতে পারে সংক্রমণ। নাক, মুখ; এমনকি চোখের মাধ্যমেও তা দেহে প্রবেশ করতে পারে। জর্জ ওয়াশিংটন স্কুল অব পাবলিক হেলথের এপিডেমোলজিস্ট ডেভিড মাইকেলসের ভাষায়, 'এতদিন সবাই ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ে বেশি আলোচনা করেছেন। কিন্তু বায়ুবাহিত অ্যারোসলের মাধ্যমে যেভাবে সংক্রমণ ঘটে, সে বিষয়ে সে রকম আলোচনা বা সতর্কতা নেওয়া হয়নি।' ড. মাইকেলস আরও বলেন, হাঁচি বা কাশির পর সূক্ষ্ণ অ্যারোসলের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বাতাসে ভেসে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। বিশেষ করে জানালা-দরজা খোলা নেই, এমন ঘরে এটি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ফলে ঘরে কেউ না থাকলেও কয়েক ঘণ্টা আগেও কোনো করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সেখানে গিয়ে থাকলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের গবেষক ডোনাল্ড মিল্টনের মতে, ভাসমান করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য আরও ভালো উপায় প্রয়োজন। তার ভাষায়, 'আমাদের আরও বেশি সুরক্ষিত ব্যবস্থা প্রয়োজন। সার্জিকাল মাস্ক পরলেও সেটি কখনোই সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয় না। গাল-নাকের ফাঁক দিয়ে সহজেই বাতাসে ভাসমান ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।' কর্মসূত্রে যাদের বের হতে হচ্ছে বা বহু মানুষকে কোনো পরিষেবা দিতে হচ্ছে, তাদের মাস্ক পরলেও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাছাড়া চোখের মাধ্যমেও হতে পারে সংক্রমণ। এক্ষেত্রে আপাতত কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের পরামর্শ, করোনা থেকে রক্ষা পেতে দুটি মাস্ক পরা যেতে পারে। একটি সার্জিকাল মাস্কের ওপর কাপড়ের মাস্ক। মাস্কের ফাঁক দিয়ে যাতে বাতাস প্রবেশ না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাস্কে বার বার হাত দেওয়া চলবে না। মুখমন্ডলে মাস্ক যাতে সম্পূর্ণ ফিট হয় এবং খুলে না আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে বের হওয়ার আগেই। বড় চশমা, ফেসশিল্ড পরা যেতে পারে বলেও পরামর্শ দিয়েছে। এতে সামান্য হলেও চোখের মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে। এ ছাড়া বারবার হাত ধোয়ার মতো অভ্যাসগুলোও ধরে রাখতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এরআগে, আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নাল 'ল্যানসেট'-এও এ বিষয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। গবেষকদের দাবি, কোভিড সৃষ্টিকারী ভাইরাস সার্স-কোভ-২ প্রধানত বায়ুর মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, ড্রপলেটের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর প্রবণতা এখন প্রথম সারির দেশগুলোয় নেই বললেই চলে। এর যথেষ্ট প্রমাণও পাওয়া গেছে। আর সে কারণেই বিশ্বকে এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।