উপহারের ৫ লাখ আসছে কাল

চীন থেকে কেনা টিকা পেতে থাকতে হবে অপেক্ষায়

প্রকাশ | ১১ মে ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চীন থেকে বাণিজ্যিকভাবে করোনা টিকা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষায় থাকতে হবে জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, 'চীনের টিকার চাহিদা অনেক দেশের আছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে যেটা বাংলাদেশ পেতে চায় সেই টিকা পেতে সময় লাগবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ এক সপ্তাহ আগে শুধু সিনোফার্মের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।' তবে উপহার হিসেবে সিনোফার্মের তৈরি পাঁচ লাখ করোনার টিকা ১২ মে আসছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের এই রাষ্ট্রদূত। সোমবার ডিপেস্নামেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, 'চীনের উপহারের টিকার জন্য বাংলাদেশকে ৩ ফেব্রম্নয়ারি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অথচ এই অনুমোদনের জন্য দীর্ঘ তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে টিকা পেতে বাংলাদেশ ৩০ এপ্রিল প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ আগেই অনুমতি দিলে চীনের টিকা আগে পেত।' লি জিমিং বলেন, টিকা নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং বাংলাদেশে টিকা পাঠানোর বিষয়টি চীন 'খুবই ইতিবাচকভাবে' দেখছে। কিন্তু সমস্যা হলো, টিকা পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের দীর্ঘ কিউ তৈরি হয়েছে। আর স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ টিকার জন্য সেই লাইনের সম্মুভাগের খুব কাছাকাছি অবস্থানে নেই। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমি বলতে চাইছি, সরকারি পর্যায়ে চীন থেকে কেনা টিকার প্রথম চালান হাতে পেতে আমাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।' কতদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে- সেই ধারণা দিতে গিয়ে লি জিমিং বলেন, 'আপাতত আমি যেটুকু বলতে পারি, বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশের টিকা কেনার জন্য আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা আমি করব। বেইজিংয়ে আমার সহকর্মীরা প্রথমে আমাকে যেটা বলেছে, ওই লাইন এত বেশি দীর্ঘ যে ডিসেম্বরের আগে টিকা পাওয়ার আশা না করাই ভালো। আমি তাদের বলেছি, যত দ্রম্নত সম্ভব এখানে টিকা দরকার। এরপর আমার মনে হচ্ছে, ডিসেম্বরের অনেক আগেই আমরা পারব, তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ বছরের প্রথমার্ধে সেটা হবে না।' প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতে চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, তার সরকারের উপহারে ৫ লাখ ডোজ টিকার চালান ১২ মে বাংলাদেশে আসবে। তিনি বলেন, 'টিকা উপহার দেওয়ার জন্য চীন যোগাযোগ করেছিল এ বছর ৩ ফেব্রম্নয়ারি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার টিকার জরুরি অনুমোদনের সময় নিয়েছে প্রায় ৩ মাস। ফলে বাংলাদেশে টিকা বিক্রির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়টি নানাভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। আমি আশা করব, বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের কাজে আরও উদ্যোগী হবে, বিশেষ করে মহামারির মতো বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা যখন আমাদের করতে হচ্ছে।' এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে 'যথেষ্ট খারাপ' করবে মন্তব্য করে লি জিমিং বলেন, 'চীন সব সময় মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়াড হচ্ছে চীনবিরোধী একটি ছোট গ্রম্নপ। আমি খুব স্পষ্ট করেই বলতে চাই, অর্থনৈতিক প্রস্তাবের কথা বললেও এতে নিরাপত্তার উপাদান আছে। এ ধরনের ছোট গোষ্ঠী বা ক্লাবে যুক্ত হওয়ার ভাবনাটা ভালো নয়। বাংলাদেশ এতে যুক্ত হলে তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যথেষ্ট খারাপ করবে।' গত মাসের শেষ সপ্তাহে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গহি ঢাকা সফর করেন। এ সময় কোয়াড, আইপিএস বিষয়গুলো নিয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা চেয়েছিল চীন। চীনের অনুরোধের জবাবে বাংলাদেশ কী বলেছে জানতে চাইলে চীনের রাষ্ট্রদূত প্রশ্নটির উত্তর এড়িয়ে যান। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ চলাচল 'অবাধ ও স্বাধীন' রাখার উপায় খোঁজার জন্য ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে 'কোয়াড' (কোয়াড্রল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) সংলাপের সূচনা হয়।