আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ

প্রকাশ | ১২ মে ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর বছর ঘুরে আবার এলো খুশির উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আজ বুধবার চাঁদ দেখা গেলে কাল বৃস্পতিবার ঈদ হবে। নতুবা ৩০ রোজা শেষে শুক্রবার ঈদ-উৎসব পালিত হবে বাংলাদেশে। এবারের ঈদুল ফিতর এসেছে এমন এক মুহূর্তে, যখন বিশ্বব্যাপী করোনায় প্রতি মুহূর্তে মানুষের মৃতু্য হচ্ছে। মৃতু্যর মিছিল আর বিষাদময় শোকের মাঝেই উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা এবং পবিত্র ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে আজ সন্ধ্যায় \হইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ ও শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার তথ্য পর্যালোচনায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর কবে হবে, তা জানা যাবে আজ। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন বলে মঙ্গলবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বাংলাদেশের আকাশে বুধবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে ২৯ দিন রোজা শেষে বৃহস্পতিবার ঈদ হবে। আর চাঁদ দেখা না গেলে পুরো ৩০ দিন রোজা শেষে ঈদ হবে শুক্রবার। বাংলাদেশে আকাশে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে- ৯৫৫৯৪৯৩, ৯৫৫৫৯৪৭, ৯৫৫৬৪০৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭ নম্বরে ফোনে অথবা ৯৫৬৩৩৯৭ ও ৯৫৫৫৯৫১ ফ্যাক্স করে জানাতে অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। মহামারির কারণে সারা দেশে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের বিধি-নিষেধ চলছে এপ্রিল মাস থেকে। দূরপালস্নার বাস, লঞ্চ ও ট্রেনও বন্ধ রাখা হয়েছে। ঈদযাত্রার মধ্য দিয়ে ভাইরাস যাতে না ছড়ায় সেজন্য সবাইকে যার যার কর্মস্থলের এলাকায় ঈদ করতে বলা হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে। তারপরও বিপুল সংখ্যাক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির পথে ছুটছেন। মঙ্গলবার প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। গত রমজান ও কোরবানির ঈদের মতো এবার রোজার ঈদেও জামাত হবে কেবল মসজিদে, আর তাতে অংশ নিতে হবে বিধি-নিষেধ মেনে। সবাইকে বাসা থেকে ওজু করে মসজিদে যেতে হবে মাস্ক পরে। কাতারে দাঁড়াতে হবে নিরাপত্তা দূরত্ব বজায় রেখে। নামাজ শেষে কোলাকুলি বা হাত মেলানো যাবে না। ঈদগাহ বা খোলা মাঠে ঈদের জামাত হবে না। সেইসঙ্গে মসজিদে ঈদ জামাত আয়োজনের ক্ষেত্রে সুরক্ষার ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বেশ কিছু শর্ত দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব নির্দেশনা না মানলে 'আইনগত ব্যবস্থা' নেওয়া হবে। ঈদকে ঘিরে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে যে উৎসবের নানা আয়োজন ছিল, গত এক বছর ধরে সেটি অনেকটাই ম্স্নান করোনার কারণে। ছোট-বড় সবারই নতুন জামা-কাপড়ের পাশাপাশি চলত ভালো খাবার-দাওয়ারের নানা আয়োজন। গরিব কি ধনী সবারই চেষ্টা থাকতো সেরা আয়োজন টুকু করতে। ঈদের খাবার থেকে বাদ যেতেন না কেউ। কিন্তু এ বছর সেটি অনেকাংশেই হচ্ছে না। তবে, রোগীদের জন্য হাসপাতাল, এতিমদের জন্য এতিমখানা, শিশু সদন, ছোটমণি নিবাস, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে আশ্রয় কেন্দ্র- সবখানেই থাকবে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। জেলখানা ও কিশোর সংশোধন কেন্দ্রগুলোতে থাকবে উন্নত খাবার। ঈদে বড় শহরগুলো কিছুটা উৎসবের সাজে সাজানো হবে। রাজধানীতে বনানী থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা এবং বাংলা ও আরবিতে ঈদ মোবারকখচিত ব্যানার দিয়ে সাজানো হবে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে। ঈদ মানেই একে অপরকে আপন করে নেওয়া ও শুভেচ্ছা জানানোর রীতি চিরন্তন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি' ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ সব শীর্ষ রাজনীতিক পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।