ডবিস্নউএইচওর বিবৃতি অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলো এখন পর্যন্ত পেয়েছে এক শতাংশের কম টিকা

উৎপাদিত ৭৫ শতাংশ টিকাই মাত্র ১০ দেশের দখলে

প্রকাশ | ১১ জুন ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনার যত টিকা উৎপাদন ও বিক্রি হয়েছে, এর ৭৫ শতাংশই বিশ্বের মাত্র ১০টি দেশের দখলে রয়েছে। অর্থাৎ, টিকাগুলো তারা পেয়েছে। অন্যদিকে, কম জিডিপি বা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলো এখন পর্যন্ত পেয়েছে এক শতাংশেরও কম টিকা। বুধবার জার্মান সংবাদমাধ্যম 'ডয়েচে ভেলে'কে দেওয়া এক লিখিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। বিবৃতিতে ডবিস্নউএইচওর পক্ষ থেকে বলা হয়, উন্নত দেশগুলো যেখানে তাদের নাগরিকদের অর্ধেকের বেশি অংশকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছে, সেখানে বিশ্বের অনেক দেশ এখন পর্যন্ত টিকার ডোজের অভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরুই করতে পারেনি। উদাহরণ হিসেবে বিবৃতিতে বলা হয়, জার্মানির ৪৫ শতাংশ মানুষ এরই মধ্যে করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে। কিন্তু তাঞ্জানিয়া, শাদসহ অনেক দেশ এখন পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি শুরুই করতে পারেনি। \হকারণ, এই দেশগুলোর কাছে কোনো টিকা নেই। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে ২০২০ সালে 'গ্যাভি ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট'সহ কয়েকটি দাতা সংস্থার সহযোগিতায় 'কোভ্যাক্স' প্রকল্প চালু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে, তবে সেটা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। কোভ্যাক্স প্রকল্পের জন্য টিকা কিনতে অবশ্য দাতা দেশগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে ডবিস্নউএইচও। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে অনলাইনে একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনেরও আয়োজন করে সংস্থাটি। সম্মেলনে বিভিন্ন দাতা দেশের প্রতিনিধিরা করোনা টিকা ক্রয় বাবদ ১৯ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা দেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন। তবে জটিলতা দেখা দিয়েছে অন্য জায়গায়। বিভিন্ন দেশ কোভ্যাক্সে টিকা না দিয়ে কৌশলগত স্বার্থের বিষয় বিবেচনা করে সরাসরি বন্ধু দেশকে টিকা দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আট কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যার তিন-চতুর্থাংশ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে দেওয়া হবে। বাকিটা সরাসরি বিভিন্ন দেশকে দেওয়া হবে। ক্ষুধা নিবারণে কাজ করা বৈশ্বিক সংস্থা 'ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ড'র কর্মকর্তা মারাইকে হাসে বলেন, 'আমরা মনে করি, বিতরণে সমতা আনতে হলে কোভ্যাক্সের মাধ্যমেই টিকা বিতরণ করতে হবে।' তবে কোভ্যাক্স প্রকল্পের কিছু দুর্বলতাও তুলে ধরেছেন মারাইকে হাসে। তিনি বলেন, 'কোভ্যাক্স কর্মসূচির একটি অন্যতম সমস্যা হচ্ছে, এটি ঐচ্ছিক ভিত্তিতে কাজ করে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কোভ্যাক্স প্রয়োজনীয় টিকাও কিনতে পারছে না। আর টিকা কোম্পানিগুলো কোভ্যাক্সের সঙ্গে কাজ করার চেয়ে যারা বেশি দাম দিতে পারবে, তাদের সঙ্গেই কাজ করতে বেশি আগ্রহী। ডবিস্নউএইচও জানিয়েছে, দাতাদের কাছ থেকে যে পরিমাণ অর্থের প্রতিশ্রম্নতি পাওয়া গেছে, এতে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ১৫ কোটি ডোজ করোনা টিকা বিতরণ করতে পারবে কোভ্যাক্স। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য ছিল, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৫ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করা।