বাজারদর

পেঁয়াজের দাম কমলেও বেড়েছে সবজি ও ডিমের

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সপ্তাহ ব্যবধানে যথারীতি চড়া দামেই স্থিতিশীল রয়েছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এসব বাজারে বেড়েছে সবজি ও ডিমের দাম। এদিকে চালের দাম পাড়া-মহলস্নায় কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বাড়লেও বড় বাজারে তা আগের দামেই রয়েছে। তবে গত সপ্তাহের দামেই মিলছে ভোজ্যতেলসহ মাছ মুরগি ও গরুর মাংশ। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর ১, মোহাম্মাদপুর, আগারগাঁও ও শ্যামলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি পিস ফুলকপি ৭ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আকার ভেদে লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হয় ৪০ টাকা আর গোল বেগুনের কেজি ৬০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি। এদিকে কিছুটা দাম বেড়ে বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটোর কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা আর ঝিঙ্গের কেজি বিক্রি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কাঁচকলার হালিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। লাউয়ে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি পিস বিক্রি হয় প্রায় ৭০ টাকা দরে। এছাড়াও দাম বেড়েছে পেঁপে ও ওচ্ছেয়, প্রতি কেজি পেঁপে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর ওচ্ছের কেজি বিক্রি হয় প্রায় ৮০ টাকা দরে।। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে শসা, পটল ও ঢেঁড়সের দাম। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পটলের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর ঢেঁড়সের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সবজির দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, ভরা বর্ষার মৌসুমে কাঁচাবাজারের সব ধরনের সবজির দাম একটু বেশিই থাকে। আগামী মৌসুমের অর্থাৎ শীতের আগে সবজির বাজার এমন চড়াই থাকবে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। এদিকে রাজধানীর বাজরের হঠাৎ করেই বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি ডজনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে। অন্যদিকে করোনায় সীমান্ত এলাকায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ও বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই নিত্যপণ্যেটির দাম ৬০ টাকায় উঠে গিয়েছিল। তবে ফের আমদানি শুরু হওয়ায় ও দেশি পেয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধিতে তা আবার কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা দরে। তবে পাড়া মহলস্নায় তা এখনো ৫৫ থেকে ৬০ দরেই বিক্রি করতে দেখা গেছে। মিরপুর ১ বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আসলাম জানান, হঠাৎ করেই আমদানি বন্ধ হওয়ায় বেশি দাম পাওয়ার আসায় অনেকে ব্যবসায়ী পেঁয়াজের মজুত বাড়িয়ে দেয়, ফলে বাজারে পণ্যটির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়। তবে আমদানি শুরু হওয়ায় এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে দামও কমেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকার নিচে নামতে পারে বলে জানান এই ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রায় গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে রাজধানীর চালের বাজার। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি মিনিকেট ৬২-৬৩ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বস্তা বা পরিমাণে বেশি কিনলে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৬০ টাকা করে। প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা দরে। আর মান ভেদে প্রতিকেজি নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকায়। যথারীতি অপরিবর্তিত দামেই অর্থাৎ ৯৫ টাকায় খোলা পোলাও চাল ও ১২০ টাকায় প্যাকেট চাল বিক্রি হয়। কাটারি আতপ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে আর মোটা আতপ ৪৫ টাকায়। রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মিল মালিকরা গত দু-সপ্তাহে বস্তা প্রতি প্রায় ১৫০ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই মোটা ও চিকন উভয় ক্ষেত্রেই কেজি ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়ে ছিল। তবে এই সপ্তাহে অর্থাৎ শুক্রবার পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম না থাকায় খুচরা পর্যায়ে সব ধরনের চালে কেজিতে প্রায় ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে অনেক ক্ষেত্রেই আগের বাড়তি দামেই চাল বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব ব্যবসায়ীরা জানান, তারা এখনো আগের কেনা চাল বিক্রি করছেন, তাই কম নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে নতুন দামের চাল আসলে অবশ্যই দাম কিছুটা কমবে। এদিকে বাজার ভেদে প্রতি কেজি মোটা মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। রসুন প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় আর চিনি বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। লুজ সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, আর পাম সুপার বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন হাফ লিটার বিক্রি হয় ৮০ টাকা আর এক লিটার ১৫১ টাকা দরে। তবে অনেক বাজারে পুরানো তেলের মজুদ থাকায় তা আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির মাংশের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা দরে। পাকিস্তানি কক ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ২১০ টাকায়। আর আগের দামেই দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫২০-৫৩০ টাকা দরে এবং প্রতি কেজি লেয়ার বিক্রি হয় ২২০ টাকায়। এছাড়া প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে গরু মাংশের দাম। প্রতি কেজি ৫৯০-৬০০ টাকা দরে। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে অনেকটা আগের দামেই রয়েছে মাছের বাজার। এদিন রাজধানীর বাজারগুলোতে আকার ভেদে প্রতি কেজি শিং মাছ বিক্রি হয় ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই (আকার ভেদে) বিক্রি হয় ২৭০ থেকে ৩৫০ টাকায়, পাঙাস মাছের কেজি ২০০ টাকা দরে। কাতল মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। বাড়তিই রয়েছে আইর ও শৌল মাছের দাম। আকার ভেদে যথাক্রমে বিক্রি হয় ৪০০ ও ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায়। আর কৈ মাছে ২০০ টাকা দরে। এছাড়াও বাড়তি রয়েছে বিভিন্ন ছোট মাছের দাম। মলা ২৩০ থেকে ২৮০ টাকায়। দেশি চিংড়ি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। হরিণা, বাগদা ও গলদা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। পাবদা আকার ভেদে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা।