করোনায় এক মাসে সর্বাধিক ৪৭ মৃতু্য, শনাক্ত ২৪৩৬

প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের তুলনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগী ও মৃতু্য উভয়ই বেড়েছে। এ সময় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমিত আরও ৪৭ জনের মৃতু্য হয়েছে, যা গত এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড। এর আগে গত ৯ মে এক দিনে এর চেয়ে বেশি ৫৬ জনের মৃতু্য হয়েছিল। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার ১১৮ জন হয়েছে। এছাড়া গত একদিনে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৩৬ জন। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৯২২ জন হয়েছে। তবে আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৩৭ জন। ওই সময় করোনায় মৃতু্য হয় ৩৯ জনের। রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ। প্রতিদিনের মতো রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল আটটা থেকে রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ১৮ হাজার ৪৭৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে আগে জমা কিছু স্যাম্পল নিয়ে (এন্টিজেন টেস্টসহ) ৫১২টি সরকারি-বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ১৮ হাজার ৭৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় আরও ২ হাজার ৪৩৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ১১২টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা হয়েছে ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪১১টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৭০১টি। এদিকে গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ২৪২ জন। এ নিয়ে আক্রান্ত-পরবর্তী মোট সুস্থ হলেন ৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৪৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৩২ ও নারী ১৫ জন। এ সময় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪২ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩ জন এবং দুইজন বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত ১৩ হাজার ১১৮ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৪৩৮ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৬৮০ জন নারী। করোনায় সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ২৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৮ জন খুলনা বিভাগের, বরিশাল বিভাগে ১ জন, সিলেট বিভাগের ২ জন, ৪ জন রংপুর বিভাগের ও ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। গত বছর ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ বছরের ৩১ মে তা ৮ লাখ পেরিয়ে যায়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃতু্যর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা অন্তত দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এদিকে করোনা সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এর মধ্যেই সীমান্তবর্তী ২১টি জেলায় সংক্রমণ বাড়তে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।