শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
'হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১' পাস

হজ এজেন্সি অনিয়ম করলে নিবন্ধন বাতিলসহ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা

বিশেষ প্রতিনিধি
  ১৬ জুন ২০২১, ০০:০০

হজ এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন হারানোর সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। এ ছাড়াও হজ ও ওমরা এজেন্সি সৌদি আরব গিয়ে অপরাধ করলেও বাংলাদেশে সেই অপরাধের বিচার করার বিধান রেখে 'হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১' পাস হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ওই বিলে বলা হয়েছে, হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পরে কেউ সৌদিতে গিয়ে ঠকালে, ওই অপরাধ বাংলাদেশে হয়েছে বলে গণ্য করে এই আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানো প্রস্তাব করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিদ্যমান হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা নীতিমালাকে আইনে রূপ দিতে গত ৪ এপ্রিল বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলে বলা হয়েছে, হজ এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন হারানোর সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া জামানত বাজেয়াপ্ত, নিবন্ধন স্থগিত, সতর্কীকরণ ও তিরস্কারের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এজেন্সি পরপর দুইবার তিরস্কৃত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নিবন্ধন দুই বছরের জন্য স্থগিত হয়ে যাবে। কোনো এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল হলে ওই এজেন্সির অংশীদার বা স্বত্বাধিকারীরা পরে কখনও হজ বা ওমরা এজেন্সির নিবন্ধন পাবে না। অন্য এজেন্সির কাজেও সম্পৃক্ত হতে পারবে না বলে উলেস্নখ রয়েছে বিলে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করবে। হজ ও ওমরাহ এজেন্সিকে শর্ত মেনে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন পেতে হলে হজ এজেন্সিকে তিন বছর ও ওমরাহ এজেন্সিকে দুই বছরের ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। হজ এজেন্সিগুলো স্বত্ব পরিবর্তন করতে চাইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কোনো সংবিধিবদ্ধ আইন নেই। নির্বাহী আদেশ, নীতিমালা, পরিপত্র ইত্যাদি দ্বারা এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সংবিধিবদ্ধ আইন ও বিধি-বিধানের প্রয়োজন দীর্ঘদিন যাবৎ অনুভূত হচ্ছে। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য সরকারি সংস্থাসমূহের দায়-দায়িত্ব আইনি বিধি-বিধান দ্বারা সুস্পষ্ট করা হলে তা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ ও গতিশীল করতে সহায়ক হবে।

আলেম-বুজুর্গ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি :এদিকে বিলটি পাসের সময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, হেফাজত ইসু্যতে কোনো প্রকৃত আলেম ও বুজুর্গ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তাদের প্রতি সরকার অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও রুমিন ফারহানার সমালোচনার জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, 'ফৌজদারি অপরাধে আলেম নামধারী ক্ষমতালিপ্সুদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তারা রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক কাজে জড়িত ছিল।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে