২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৫৪ মৃতু্য, শনাক্ত প্রায় ৪ হাজার

প্রকাশ | ১৯ জুন ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় গত এক দিনে আরও ৩ হাজার ৮৮৩ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭০ জনে। এ সময় আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৫৪ জন মারা যাওয়ায় দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৯৯ জনে দাঁড়াল। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশ থেকে ২১ হাজার ৩৭৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে এন্টিজেন টেস্টসহ ৫২৮টি সরকারি-বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ২০ হাজার ৮৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় আরও ৩ হাজার ৮৮৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৯টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা হয়েছে ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪০টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৯টি। এদিকে গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৯৫৫ জন। এ নিয়ে আক্রান্ত পরবর্তী মোট সুস্থ হলেন ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৪২১ জন। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ১২ শতাংশ এবং মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৪৭ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৫ ও নারী ৯ জন। এ সময় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫১ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১ জন এবং দুইজন বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত ১৩ হাজার ৩৯৯ জনের মধ্যে ৯ হাজার ৬২৩ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ৭৭৬ জন নারী। করোনায় সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৮ জন খুলনা বিভাগের, বরিশাল বিভাগে ৪ জন, সিলেট বিভাগের ২ জন ও ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। গতবছর ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ বছরের ৩১ মে তা ৮ লাখ পেরিয়ে যায়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মে তা ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯ এপ্রিল রেকর্ড ১১২ জনের মৃতু্যর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা অন্তত দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এদিকে করোনা সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এর মধ্যেই সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়তে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় ৬৮ শতাংশ রোগী নতুন ধরন ডেল্টায় আক্রান্ত।