শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
নির্বাচনী সহিংসতা

চরফ্যাশনে মনিরের মৃতু্য নিয়ে ধূম্রজাল

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
  ২৫ জুন ২০২১, ০০:০০

ভোলার চরফ্যাশনে ২১ জুন ভোগগ্রহণের দিন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে নিহত মনির হোসেনের মৃতু্য নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মনির মারা গেছেন-এমনটা পুলিশসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করলেও কার গুলিতে তার মৃতু্য হয়েছে এই প্রশ্নের কোনো উত্তর মিলছে না। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের গুলিতে মনির মরেননি। মনিরের প্রাণহরণকারী গুলির উৎস নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. আকতারুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারসহ পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে মহিলা ও পুরুষ ভোটারদের জন্য পৃথক কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল নির্বাচনের দিন। পাশাপাশি দু'টি কেন্দ্র প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর বাড়িসংলগ্ন হওয়ায় ভোটের দিন সহিংসতার আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। ওই ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াছিন মাঝি এবং টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ সিকদার। তাদের মধ্যেই সহিংসতা হয়। যার বলি যুবক মনির।

মহিলা ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী একজন পুলিং এজেন্ট জানান, মহিলা ভোটকেন্দ্রে হামলার সময় সাধারণ সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩ প্রার্থীর সবাই কেন্দ্রের মধ্যে ছিলেন। ঘটনার সূত্রপাত হয় দেড় থেকে ২ কিলোমিটার দূরে পুরুষ ভোটকেন্দ্র থেকে। সকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাড়িসংলগ্ন পুরুষ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান ফুটবল মার্কার প্রার্থী ইয়াছিন মাঝি। সেখানে টিউবওয়েল মার্কার কর্মীরা তাকে লাঞ্ছিত করেন। এই ঘটনার পরপর ইয়াছিন মাঝি তার বাড়িসংলগ্ন মহিলা ভোটকেন্দ্রে ফিরে আসেন। তিনি আসার পর লাঞ্ছনার খবর কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং কর্মী-সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ইয়াছিন মাঝির উত্তেজিত কর্মীরা ধারালো অস্ত্র, লোহার রড এবং লাঠি নিয়ে কেন্দ্রের পাশে উপস্থিত টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ সিকদার ও তার কর্মীদের ওপর হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।

প্রিজাইডিং অফিসার মো. ইমাম হোসেন জানান, হামলাকারীরা গেট ভেঙে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থল থেকে আহত মনিরকে চরফ্যাশন হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

ভোটকেন্দ্রের একজন পোলিং এজেন্টের দাবি, নিহত মনিরও হামলাকারীদের একজন ছিলেন। ঘটনার সময় পুলিশের রাবার বুলেটের আঘাত লাগে। কিন্তু এ সময় তিনি ছিটকে নিচে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এই ঘটনায় নিহতের বাবা বশির সিকদার বাদী হয়ে শশীভূষণ থানায় হত্যা মামলা করেছেন, যেখানে প্রতিপক্ষ টিউবওয়েল মার্কার প্রার্থী ইউসুফ সিকদার ও তার কর্মী-সমর্থকদের আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে প্রতিপক্ষের গুলিতে মনিরের মৃতু্য হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

শশীভূষণ থানার অফিসার ইন চার্জ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এজারভুক্ত প্রধান আসামি রিয়াদ সিকদারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। রিয়াদ টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ সিকদারের ছেলে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে