খালেদা জিয়ার দাতব্য ট্রাস্ট মামলার রায় ২৯ অক্টোবর

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
খালেদা জিয়া
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৯ অক্টোবর তারিখ ঠিক করেছে আদালত। রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ তারিখ ঠিক করেন। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতের কাছে আবেদন করেন, খালেদা জিয়াসহ মামলার অপর আসামিদের আইনজীবীরা যুক্তিতকর্ উপস্থাপন করছেন না। খালেদা জিয়া আদালতে আসতে চান না। তাই মামলার রায় ঘোষণার তারিখ চেয়ে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করে আদালত বলেন, আড়াই বছর ধরে আসামিপক্ষ যুক্তিতকর্ শুনানি না করে নানা কারণ দেখিয়ে কালক্ষেপণ করছে। আইনে যুক্তিতকের্র বিধান না থাকলেও আসামিপক্ষকে তা করার জন্য বলা হয়। মঙ্গলবার আসামিপক্ষ যুক্তিতকর্ না করে সময় চেয়েছে। তাই রায় ঘোষণার তারিখ চেয়ে দুদকের আবেদন মঞ্জুর করা হলো। রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করার আদেশকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়ার দুই আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও সানাউল্লাহ মিয়া। মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তিতকের্র শুনানির সুযোগ না দিয়ে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করার এমন আদেশ আগে কখনো হয়নি। তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। গতকাল শুনানির শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেন। তিনি আদালতকে বলেন, খালেদার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন। উচ্চ আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন। এ জন্য আদালতের কাছে এক সপ্তাহ সময় চান তিনি। খালেদার অপর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, উচ্চ আদালতের (হাইকোটর্) আদেশই চ‚ড়ান্ত নয়। আপিল বিভাগে তারা আবেদন করবেন। আপিল বিভাগের আদেশই চ‚ড়ান্ত আদেশ। এ জন্য তারা আদালতের কাছে সময় চান। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন আদালতকে বলেন, উচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। এই আদালতকে বিচার চালাতে নিদের্শ দিয়েছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ পাওয়ার পর সময় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল চেয়ে করা দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন। আদালত বলে, খালেদা জিয়া ২৯ অক্টোবর (রায়ের দিন) পযর্ন্ত জামিনে থাকবেন। এর আগে গত ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় দÐিত হন খালেদা জিয়া। এরপর তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। সেখান থেকে সম্প্রতি তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন। জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগঁাও থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলার অপর আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী পলাতক। সরকারের নিদেের্শই রায়ের তারিখ : মিজার্ ফখরুল এদিন জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৯ অক্টোবর তারিখ নিধার্রণ ‘সরকারের নিদেের্শই’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিকালে উত্তরায় আ স ম আবদুর রবের বাসায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে বেরুনো সময় রায়ের তারিখ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রীর অনুপস্থিতিতে বিচার কাযর্পরিচালনা করা সম্পূণর্ বেআইনি কাজ এবং তার অনুপস্থিতিতে বিচারের রায় ঘোষণা করাও সম্পূণর্ বেআইনি। যুক্তিতকর্, আত্মপক্ষ সমথর্নসহ অন্যান্য বিষয়গুলো বাকি ছিলো। কোনোটাই করা হয়নি। এটা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানন তিনি। মিজার্ ফখরুল বলেন, রায়ের যে তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে এটা একেবারেই সরকারের নিদেের্শ করা হয়েছে। বিনা বিচার এবং ন্যায় বিচার ছাড়াই দেশনেত্রীকে সাজা দেয়ার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে। এখানে আদালতে সেটাই নিয়ে আসতে চায়। এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় বাংলাদেশে যে বিচার ব্যবস্থা সম্পূণর্ ভেঙে পড়েছে, সরকার যে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে এটা তারই একটি প্রমাণ।