করোনাভাইরাস

মৃতু্যতে শীর্ষে ইন্দোনেশিয়া আক্রান্তে যুক্তরাজ্য

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের হিসাবে এখন শীর্ষে অবস্থান করছে এশীয় দেশ ইন্দোনেশিয়া। বলা হচ্ছে, দেশটি এখন করোনার 'এপিসেন্টার' বা কেন্দ্রস্থল। অন্যদিকে, নতুন আক্রান্ত রোগীর হিসাবে শীর্ষে অবস্থান করছে যুক্তরাজ্য। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে এ রোগে আক্রান্ত, মৃতু্য ও সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট 'ওয়ার্ল্ডোমিটার' এ তথ্য জানিয়েছে। তবে ওয়ার্ল্ডোমিটারের তালিকা আরও বলছে, বিশ্বজুড়ে কমছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা। গত দুদিন ধরে এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংবাদসূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা ওয়ার্ল্ডোমিটার জানিয়েছে, রোববার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৪১ হাজার ২৮৯ জন এবং মারা গেছেন ছয় হাজার ৭০০ জন। আগের দিন শনিবার প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল চার লাখ ৮৪ হাজার ১৬৩ জন এবং ওই দিন করোনায় মৃতু্য হয়েছিল সাত হাজার ১৯১ জনের। অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৪২ হাজার ৮৭৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা কমেছে ৪৯১ জন। গত শুক্রবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার ৯০৯ জন এবং এ রোগে ওই দিন মারা যান আট হাজার ৬৩৬ জন। শুক্রবারের তুলনায় শনিবার নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার কম ছিল এবং মৃতের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছিল দেড় হাজারের বেশি। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল থেকে সোমবার) করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেখা গেছে যুক্তরাজ্যে। রোববার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ১৬১ জন এবং এদিন করোনায় দেশটিতে মৃতু্য হয়েছে ৪১ জনের। অন্যদিকে, এশিয়ায় করোনার 'এপিসেন্টার' হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ইন্দোনেশিয়ায় রোববার ঘটেছে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃতু্যর ঘটনা। এদিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৯৩ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৭২১ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ ও মৃতু্যতে দ্বিতীয় অবস্থনে যৌথভাবে আছে ব্রাজিল ও ভারত। যুক্তরাজ্য-ইন্দোনেশিয়ার মতো চিত্র দেখা গেছে এই দুই দেশের ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, আক্রান্তের হিসাবে এগিয়ে আছে ভারত, মৃতু্যর হিসাবে ব্রাজিল। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ভারতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩২৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫০১ জন। অন্যদিকে, ব্রাজিলে রোববার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ১২৬ জন এবং এদিন দেশটিতে মৃতু্য হয়েছে ৯৩৯ জনের। এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা দেশটির নাম রাশিয়া। রোববার বিশ্বের বৃহত্তম দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ১৮ জন এবং মারা গেছেন ৭৬৪ জন। এছাড়া আরও যেসব দেশে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে, সেই দেশগুলো হলো- ইরান (আক্রান্ত ২২ হাজার ১৮৪, মৃতু্য ১৯৫), কলম্বিয়া (আক্রান্ত ১৮ হাজার ২০৬, মৃতু্য ৪৭৬), মেক্সিকো (আক্রান্ত ১২ হাজার ৬৩১, মৃতু্য ২২৫) ও বাংলাদেশ (আক্রান্ত ১১ হাজার ৫৭৮, মৃতু্য ২২৫)। রোববারের পর বিশ্বে আক্রান্ত করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে মোট ১৯ কোটি ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৩৮ জনে। তাদের মধ্যে এই রোগের মৃদু উপসর্গ বহন করছেন এক কোটি ২৮ লাখ ৬১ হাজার ১১১ জন এবং গুরুতর অবস্থায় আছেন ৮০ হাজার ৫৩১ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বে এ রোগে মৃতু্য হয়েছে ৪১ লাখ আট হাজারের বেশি। তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। রোববার বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন তিন লাখ ৩৪ হাজার এবং মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৭ কোটি ৪২ লাখ ৫৭ হাজারের বেশি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরে সাধারণভাবে এই ভাইরাসটি পরিচিতি পায় নতুন বা 'নভেল করোনাভাইরাস' নামে। করোনায় প্রথম মৃতু্যর ঘটনাটিও ঘটেছে উহানেই। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখন জানানো হয়েছিল, 'অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়' আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যাওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে ওই বছর ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে ডবিস্নউএইচও।