ইংল্যান্ড থেকে উঠে গেল বিধিনিষেধ

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ঢেউ শুরু হলেও অধিকাংশ বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। সোমবার মধ্যরাত থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর রাজধানী লন্ডনের অনেক তরুণ বাসিন্দা বিধিনিষেধমুক্ত একটি 'লাইভ' সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেন। সংবাদসূত্র :রয়টার্স, বিবিসি মহামারিতে বিশ্বে মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা দেশগুলোর একটি যুক্তরাজ্য। দেশটিতে সংক্রমণের নতুন ঢেউ শুরু হলেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইংল্যান্ডে অধিকাংশ বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছেন, যাকে কিছু লোক 'স্বাধীনতা দিবস' বলে অভিহিত করছেন। বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় এখন থেকে কতজন মানুষ একসঙ্গে দেখা করতে পারবেন বা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন, সে ব্যাপারেও থাকছে না কোনো নিয়মকানুন। পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে নাইট ক্লাব, মদের দোকান কিংবা রেস্তোরাঁতেও এখন আর টেবিল সার্ভিসের প্রয়োজন হবে না। কিছু জায়গায় মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। তবে তা আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলক নয়। তারপরও দেশের সব নাগরিককে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার থেকে বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেওয়ার ফলে মানুষ এখন থেকে একে অপরের সঙ্গে যেকোনো স্থানে দেখা করতে পারবেন। বিধিনিষেধের মধ্যে মানুষ ঘরে বসে কাজ করতেন। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। মানুষ এখন থেকে পুরোদমে সিনেমা হল ও নাইট ক্লাবে যেতে পারবেন। গণপরিবহণ, জনসমাগম স্থানে মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। তবে শারীরিক দূরত্ব এখন থেকে আর বাধ্যতামূলক নয়। বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া ঠিক হলো কিনা, এপিডিমিওলজিস্টরা (মহামারিবিদ) তা নিয়ে সংশয়ে থাকলেও যুক্তরাজ্যের তরুণ বয়সিরা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কঠোর লকডাউনে আছেন এবং এখন তারা বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ফূর্তি করতে চাইছেন। লন্ডনের হাকনি এলাকার ওভাল স্পেসের সংগীতানুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ৩১ বছর বয়সি জর্জিয়া পাইক বলেন, 'যেন চিরকালের জন্য আমাকে নাচার অনুমতি দেওয়া হয়নি, এমনটাই মনে হচ্ছে। আমি নাচতে চাই, আমি লাইভ মিউজিক শুনতে চাই, অন্য লোকজনের সঙ্গে সংগীতানুষ্ঠান উপভোগ করতে চাই।' তবে আনন্দের জন্য উদ্বেল হয়ে থাকা এই উৎসাহের পাশাপাশি সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়েও পরিষ্কার উদ্বেগ আছে। এদিকে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আইসোলেশনে আছেন। করোনার সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দেশটিতে ৬৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ফলে করোনায় আগের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি, তীব্র অসুস্থতা এবং মৃতু্যর হার কমে গেছে। রোববার টুইটারে একটি ভিডিও পোস্টে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার এটাই সঠিক সময়। তিন বলেন, 'এখন যদি আমরা এ সিদ্ধান্ত না নিতে পারি, তাহলে আমাদের নিজেদের কাছে প্রশ্ন করতে হবে, কখনো কি আমরা লকডাউন তুলে নিতে পারব? করোনাভাইরাস শীত ও শরৎকালে আবার বৃদ্ধি পেতে পারে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা খুব সাবধানতার সঙ্গেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ভাইরাসটি দুঃখজনকভাবে এখনো এখানে আছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণের তীব্রতা আমরা দেখতে পারি।' যুক্তরাজ্যে ২৮ দিনের মধ্যে রোববার নতুনভাবে ৪৮ হাজার ১১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতু্য হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। জানুয়ারির পর এই প্রথম শুক্র ও শনিবার ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।