প্রতিমা বিসজের্নর মধ্য দিয়ে শেষ দুগোর্ৎসব

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
শুক্রবার বিকালের পর রাজধানীর ওয়াইজঘাট বীণাস্মৃতি ঘাটে প্রতিমা বিসজর্ন দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় সনাতন ধমার্বলম্বীদের চারদিনের দুগোর্ৎসব Ñফোকাস বাংলা
বিজয়া দশমীতে মতর্্য ছেড়ে পুনরায় কৈলাসে গেলেন দুগির্তনাশিনী দেবী দুগার্। আর প্রতিমা বিসজের্নর মধ্য দিয়ে সনাতন ধমার্বলম্বীদের সবচেয়ে বড় এ ধমীর্য় উৎসব শেষ হলো। শুক্রবার বিকাল ৩টার পর থেকে রাজধানীর ওয়াইজঘাট বীণাস্মৃতি ঘাটে শুরু হয় বিসজর্ন। এর আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমাসহ ভক্তরা জড়ো হন। বাদ্য আর আরতির মাধ্যমে একে একে বিসজর্ন দেয়া হচ্ছে প্রতিমা। শেষবারের মতো তেল-সিঁদুর পরিয়ে চোখের জলে মাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানান ভক্তরা। মাকে ভক্তির পর চোখের জলে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন হাজার হাজার ভক্ত। ওয়াইজঘাট বীণাস্মৃতি ঘাটে শুরু হয় এক আবেগঘন মুহূতর্। বিথীজা মজুমদার নামে এক ভক্ত বলেন, ‘মায়ের বিদায় যেন সইতে পারছি না। তারপরও বিদায় জানাতে হলো। এক বছর পর আবার ফিরে আসবেন মা।’ তিনি বলেন, ‘মা এবার ঘোড়ায় চড়ে এসেছিলেন, যাচ্ছেন দোলায়। তাই বিশ্ব এবার ভালো থাকবে।’ এদিকে প্রতিমা বিসজর্ন উপলক্ষে ওয়াইজঘাটে নেয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবার প্রতিমা বিসজর্ন মধ্যরাত পযর্ন্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ডিআইজি শেখ মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, শুক্রবার জুমার দিন হওয়ায় দেরিতে প্রতিমা আনা শুরু হয়। তাই অন্যবারের চেয়ে কিছুটা দেরি হতে পারে। এ বছর সারাদেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মÐপে পূজা হয়েছে। সিঁদুর মেখে ‘দেবী বরণ’ মেয়ে যাচ্ছে স্বামীর বাড়ি। তাই বরণ করে নেয়া। আর দ্রæতই যেন ফিরে আসে এই কামনায় সিঁদুর পরানো। সেখান থেকে নিজেও পরে নেয়া। সনাতন ধমার্বলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুগার্পূজায় এভাবে করা হয় ‘দেবী বরণ’। বিজয়া দশমীতে দেবী বরণ শুরু হয় সিঁদুর পরানোর মাধ্যমে। সধবা নারীরাই এতে অংশ নেন। মূলত স্বামী ও সংসারের মঙ্গল কামনায় তারা এ আয়োজনে অংশ নেন। প্রায় ৪শ’ বছর আগে এই বরণ বা সিঁদুর খেলার প্রচলন শুরু হয়। সধবা নারীরা মা দুগাের্ক পরিয়ে দেয়ার পর নিজেও মেখে নেন সিঁদুর। সে হাত গিয়ে পড়ে অন্যের গায়েও। এভাবেই সিঁদুর মাখামাখির মাধ্যমে এক আনন্দঘন পরিবেশে নেচে গেয়ে স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনায় মেতে ওঠেন তারা। হাল আমলে শুধু সধবাই নন, কিশোরী-যুবতীরাও অংশ নেন এতে। শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে দেখা গেল, দুগার্ মা কি জয়ধ্বনি তুলে সব বয়সী নারীরা নাচে গানে মেতে উঠেছেন। সকালে শীতল ভোগের আয়োজন করা হয় দেবীর জন্য। প্রথা অনুযায়ী, এই ভোগ হয় পান্তা, কচুশাক এবং ইলিশ মাছ দিয়ে। এরপর শুরু হয় পূজা। পূজা শেষ হলেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় দেবী বরণের। সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে লম্বা লাইন করে দঁাড়িয়ে যান নারীরা। দেবীকে সিঁদুর মাখানোর পরই শুরু হয় সিঁদুর খেলা। সব বয়সী নারীরা যখন সিঁদুর খেলায় মত্ত, তখন অন্য ধমার্বলম্বীদের দেখা গেছে মন্দির প্রাঙ্গণে। এমনকি বিদেশিরাও এসেছেন উপভোগ করতে।