বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
লকডাউনের সপ্তম দিন

বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধিতে অনীহা

যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ জুলাই ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মানায় এখনো অনীহা দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে। বিধিনিষেধ না মেনে যারা রাস্তায় বের হয়েছেন তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। প্রতিদিনই মানুষ আর ব্যক্তিগত যানবাহনের উপস্থিতি বাড়ছে সড়কে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষিত কঠোরতম বিধিনিষেধের সপ্তম দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, বেইলি রোড, বিজয়নগর, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ধানমন্ডি, মিরপুর, গুলিস্তান, ফার্মগেট, বিমানবন্দর, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে রিকশা, মোটরবাইক ও ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি বেড়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। পরে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

পুলিশ বলছে, সোমবার থেকে ব্যাংক খুলে দেওয়ার পর সড়কে রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহনের উপস্থিতি বাড়ছে। তবে বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার বেশ চাপ ছিল। এরপরও প্রতিটি চেকপোস্টেই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ছিল। বিনা প্রয়োজনে বাইরে আসা যানবাহন ও মানুষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁর মোড়ে চেকপোস্টে প্রাইভেট কার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

\হএখানে অনেককে জরিমানাও করা হয়েছে। মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরার সড়কে সকালের দিকে প্রাইভেট কার, পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, রিকশার কারণে মাঝেমধ্যে যানজটও সৃষ্টি হয়েছিল। মালিবাগ, শান্তিবাগ, গুলবাগের অলিগলিতে মানুষের চাপ বেশি ছিল। অনেকের ধারণা, বৃহস্পতিবার বলেই সড়কে গাড়ির চাপ বেশি ছিল। আবার আজ শুক্রবার কমে যাবে।

মিরপুরে বিভিন্ন অলিগলির পাশাপাশি প্রধান সড়কেও মানুষের জটলা ছিল চোখে পড়ার মতো। রূপনগর, পলস্নবী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিত্যপণ্যের দোকান ও হোটেল রেস্তোরাঁ ছাড়া অন্যান্য দোকানে শার্টারের একাংশ খোলা রেখে বেচাকেনা হয়েছে।

পুরান ঢাকার আজিমপুর, লালবাগ, কেলস্নারমোড়, বকশীবাজার, ও পলাশীর অলিগলিতে মানুষ, ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা অনেক বেশি চলাচল করছিল। ওইসব এলাকায় সকালের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতেও থেমে ছিল না মানুষের চলাচল। আজিমপুর চৌরাস্তা, বকশীবাজার, চানখারপুলে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও ছিল না কোনো তৎপরতা। কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও ও মহাখালী এলাকায়ও রাস্তায় গাড়ির চলাচল অন্য দিনের চেয়ে বেশি ছিল। এই পথে অনেককে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছে। তেজগাঁওয়ের বিজি প্রেসের সামনের সড়কের দুই দিকেই পুলিশের চেকপোস্ট। যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে মামলা ও জরিমানা গুনতে হয়েছে এখানে। তবে বেশির ভাগই কোনো না কোনো কাজেই বের হয়েছিল। তাদের যাচাই-বাছাই করে ছেড়ে দিচ্ছিল পুলিশ।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আদাবর, রিংরোড এলাকার অলিগলি ও প্রধান সড়কে মানুষের চলাচল আর গাড়ি আগের দিনগুলো থেকে অনেক বেশি দেখা গিয়েছিল। অলিগলিতে ভ্যানগাড়িতে ফল আর সবজির পসরা আগের মতোই। সবজি দোকানদার, মুদি দোকানগুলোতে মানুষের আনাগোনা বেশি ছিল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঈদের পর নতুন করে শুরু হওয়া বিধিনিষেধের সপ্তম দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাস্তায় বের হওয়ার অভিযোগে ৫৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আর ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০৬ জনকে জরিমানা করেছেন ৩ লাখ ৪০ হাজার ১০০ টাকা। আর সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় ৪৩১টি গাড়িকে ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে ট্রাফিক বিভাগ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে