দেশে গত একদিনে আরও ১৩ হাজার ৮৬২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১২ লাখ ৪০ হাজার ১১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে পুরনো আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২১২ জন মারা গেছেন। ফলে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ হাজার ৪৬৭ জনে।
প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যে দেখা যায় আগের দিন বুধবার সারা দেশে ১৫ হাজার ২৭১ জন নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃতু্য হয় ২৩৯ জনের। সে হিসাবে একদিনে শনাক্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা দুটোই কমেছে।
\হএকই সঙ্গে নমুনা পরীক্ষাও কমেছে প্রায় দশ হাজার।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশ থেকে ৪৫ হাজার ৫৬৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাছাই শেষে সরকারি ও বেসরকারি ৬৪৮টি ল্যাবে ৪৫ হাজার ৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭ লাখ ৯ হাজার ৯১৪টি। আর গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৭৫ জন। ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১০ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ জনে।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ২১২ জনের মধ্যে পুরুষ ১১৯ ও নারী ৯৩ জন। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৫৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৮ জন, বাড়িতে ৯ জন মারা যান এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত মৃতু্য হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২১২ জনের মধ্যে শূন্য থেকে দশোর্ধ্ব একজন, বিশোর্ধ্ব ৫ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ১৫ জন, চলিস্নশোর্ধ্ব ২৫ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪৮ জন, ষাটোর্ধ্ব ৬৯ জন, সত্তোরোর্ধ্ব ৩২ জন, আশির্ধ্ব ১১ জন এবং নব্বই বছরের বেশি বয়সি ৬ জন রয়েছেন। মৃতদের বিভাগওয়ারী হিসাবে দেখা গেছে, ঢাকায় ৬৫ জন, চট্টগ্রামে ৫৩ জন, রাজশাহীতে ১৩ জন, খুলনায় ৩৬ জন, বরিশালে ১১ জন, সিলেটে ১৭ জন, রংপুরে ৯ জন এবং ময়মনসিংহে ৮ জনের মৃতু্য হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, করোনার ডেলটা ধরনের কারণে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি মৃতু্যর সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। বিশ্বে গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে মৃতু্য বেড়েছে ২১ শতাংশ। আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
বর্তমানে করোনাভাইরাসের চারটি মিউটেশন (রূপান্তর) বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই ধরনগুলো ব্যাপক উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি বলেছে, এ পর্যন্ত আলফা ধরন ১৮২টি দেশে, বিটা ১৩১টি দেশে, গামা ৮১টি দেশে এবং ১৩২টি দেশে ডেলটা ধরন শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে আরও আটটি নতুন দেশে ডেলটা সংক্রমণ শনাক্ত হয়।