কারখানা খোলায় সংক্রমণ বাড়বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ায় ফের সংক্রমণ বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে ২০২০-২১ সালের প্রথম বর্ষের এমবিবিএস ক্লাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, 'করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালগুলোতে যতটুকু বেড বাড়ানো দরকার আমরা বাড়িয়েছি। হাসপাতালগুলোর ভেতরে আর একটা বেডও বাড়ানোর জায়গা নেই। এরই মধ্যে আজ (রোববার) থেকে গার্মেন্ট খুলে দেওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানেনি। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে।' স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখনো ঊর্ধ্বমুখী। দক্ষিণাঞ্চলে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিলস্নায় এখনো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তবে উত্তরবঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সেবা দেওয়ার জন্য। এখনো আমরা জায়গা, ভবন খুঁজছি (হাসপাতাল নির্মাণে) কিন্তু পাচ্ছি না। ভবন পাওয়া গেলেই তো হবে না, ডাক্তার থাকতে হবে, নার্স থাকতে হবে, যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। আমরা সেটারও চেষ্টা করছি।' স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'প্রতিদিন করোনায় দুই শতাধিক লোকের মৃতু্য হচ্ছে। ১০ হাজারের ওপরে লোক আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা মৃতু্য ও সংক্রমণ কমিয়ে আনতে চাই। কিন্তু সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানি তবে করোনার সংক্রমণ কমবে না। আপনারা জানেন সংক্রমণ হলে তার ১ দশমিক ৬ শতাংশ মৃতু্য হয়। তবে আমাদের জীবন-জীবিকা দুটোই করতে হবে। আবার জীবিকার জন্য জীবনও থাকতে হবে। দু'টির ব্যালান্স আমাদের করতে হয়। কিন্তু ব্যালান্স সবসময় রাখা যায় না।' চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত রয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিধিনিষেধ তো থাকতে হবে। আমরা তো এখনো করোনা ফ্রি হইনি। করোনা সংক্রমণ এখনো ঊর্ধ্বমুখী। বিধিনিষেধ থাকতে হবে, বিধিনিষেধ মেনেই কাজ করতে হবে। আমরা টিকার কর্সসূচি শুরু করেছি।' তিনি আরও বলেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে করোনা টিকাদানের কেন্দ্র করা হবে। একটি কেন্দ্রে ৩টি বুথ থাকবে। সারাদেশে ১ সপ্তাহে এক কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসে বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, তারাই মারা যাচ্ছেন বেশি উলেস্নখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা মৃতু্যর হার কমাতে চাইছি। তাই এই কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। বয়স্করা যদি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও টিকাদান কেন্দ্রে আসেন তাদের টিকা দেওয়া হবে। যদি কারও কোনো আইডি কার্ডও না থাকে তবে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের টিকা দেওয়া হবে।' করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গত ২ এপ্রিল যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেন। এতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষায় ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমএনডিসি) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ বি এম মাকসুদুল আলম, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি এম এ মুবিন খান প্রমুখ।