একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন

আ’লীগ মাঠে, বিএনপি ঘরে

ল²ীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ)

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

সাইফুল ইসলাম স্বপন, ল²ীপুর
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জোরালো হচ্ছে সম্ভাব্য প্রাথীের্দর গণসংযোগ, বাড়ছে দান ও অনুদান। এ ক্ষেত্রে বিএনপির প্রাথীের্দর চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রাথীের্দর তোড়জোড় বেশি। বিএনপির প্রাথীর্রা অপেক্ষা করছে নিবার্চন কার অধীনে কীভাবে হবে, আর হলেও বিএনপি নিবার্চনে যাবে কি না সে সিদ্ধান্তের। জেলার রায়পুর উপজেলা ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ল²ীপুর-২ আসনটি। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নিবাির্চত হন জাতীয় পাটির্র (এরশাদ) বতর্মান জেলা সভাপতি মো. নোমান। আগামী নিবার্চনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, কুয়েতস্থ আওয়ামী লীগের আহŸায়ক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম পাপুল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. এহসানুল কবির জগলুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ল²ীপুর বারের পিপি মো. জসিম উদ্দিন। বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির আইন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদের (ভিপি) ও কনের্ল (অব.) আবদুল মজিদের এলাকায় তৎপরতা রয়েছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রাথীর্রা এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে আসছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনেও বড় দুই জোটের প্রাথীর্রা নিবার্চনের জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বতর্মান এমপি নোমানের দল জাতীয় পাটির্র সংগঠন নিতান্তই দুবর্ল হওয়ায় আওয়ামী লীগের ওপরই ভর করতে হচ্ছে তাকে। আগামীতে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রাথীর্র মধ্যে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কারণে সাময়িকভাবে মো. নোমানকে মেনে নিলেও এখন তারা চান নিজ দলের প্রাথীর্। তাদের আশা জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রাথীর্ এ আসনে মনোনয়ন দিবেন এবং নৌকার প্রাথীের্ক বিজয়ী করে নেত্রীকে এই আসন উপহার তারা দিবেন । জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় সাংগঠনিক কাযর্ক্রম বৃদ্ধি করেছেন। সম্প্রতি পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্রা বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়াও দলীয় কমর্সূচিতে নেতাকমীর্ ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি চোথে পড়ার মতো। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় এলাকা ও বেশি ভোটার নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে এমন ব্যক্তি হতে হবে যিনি মাঠে ময়দানে সবসময় থাকেন। নেতাকমীর্রা যাকে সুখেদুখে কাছে পান, যারা মাঠে ময়দানের সমস্যা বোঝেন। তাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলেও তারা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবেন। কুয়েতস্থ আওয়ামী লীগের আহŸায়ক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল গত ২ বছর ধরে ল²ীপুর-২ আসনে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকমীর্ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছেন। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবাষির্কীতে গত ২ বছর ধরে প্রতিটি ইউনিয়নে গরু বিতরণ ও কাঙালি ভোজের আয়োজন করেছেন। রায়াপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন খোকন বলেন, এখানকার দলীয় কমর্সূচি সফল করার জন্য কাজী পাপুল তার ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে টাকা দিয়ে সফল করতেন। তিনি এ পযন্ত দলীয় কমর্সূচি ও সাধারণ মানুষের ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। অতি সম্প্রতি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের আশায় মাঠে নেমেছেন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির মালিক ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল। তিনি বলেন, তার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। তিনি নিতে আসেননি কিছু দিতে এসেছেন। তিনি জনগণের সেবা করতে চান। এ ব্যাপারে জনগণের সহযোগিতা চান, যাতে বৃহত্তর পরিসরে সেবা করতে পারেন। তিনি নিজস্ব তহবিল এবং সরকারি বরাদ্দ মিলিয়ে এলাকার জন্য বড় কিছু করতে চান। সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ ১৯৯৬ সালের উপনিবার্চনে এ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন। এরপর ২০০১ সাল থেকে তার সঙ্গে এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তিনি দলীয় নেতাকমীের্দর সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রক্ষা করতেন না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় নেতাকমীর্রা। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, এ এলাকা বিএনপির ঘাঁটি। ছাত্র রাজনীতি থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে দলের দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী। জোট সরকারের সময় প্রতিটি এলাকার বাড়ি, রাস্তাঘাট, পুল, কালভাটর্, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হয়েছে। যদি ২০ দলীয় জোট নিবার্চনে যায় তাহলে ভোটাররা অন্য কাউকে ভোট দেয়ার চিন্তা করবে না। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূইঁয়া বলেন, ছাত্রদল থেকে রাজনীতি করছেন। বতর্মানে বিএনপির আইনবিষয়ক সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী নিবার্চনে দল তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন দিলে তিনি জয়লাভ করবেন। এছাড়া দল থেকে যাকে মনোনয়ন দিবে তার জন্য কাজ করবেন।