শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিতে থাকতে পারবেন না এমপি প্রাথীর্রা

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির কোনো পদে থাকতে পারবেন না জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অংশ নেয়া এমপি প্রাথীর্রা। শুধু তাই নয়, এমপি প্রাথীর্র মনোনীত ব্যক্তিও এসব পদে থাকতে পারবেন না। নিবার্চনের সময় দলের পদধারীরাও পারবেন না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকতে। নিবার্চনের আগেই তাদের পদত্যাগ করতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে নিবার্চন কমিশন (ইসি) এসব পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘সংসদ নিবার্চনে রাজনৈতিক দল ও প্রাথীর্র আচরণ বিধিমালা’ সংশোধনের প্রস্তাব করেছে ইসির আইন সংস্কার কমিটি। আজ অনুষ্ঠিতব্য কমিশন সভায় এসব বিধি চ‚ড়ান্ত হতে পারে। আজ বিকাল ৩টায় কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকের এজেন্ডা হচ্ছে সংসদ নিবার্চনে রাজনৈতিক দল ও প্রাথীের্দর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ সংশোধন, স্বতন্ত্র (প্রাথীর্ সমথর্ন যাচাই) প্রাথীর্ বিধিমালা ২০১১ সংশোধন ও বিদেশি পযের্বক্ষক বিধিমালা ২০১৮। কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান আচরণ বিধিমালার ৬-এর (১) এর খ দফায় পরিবতর্ন আসছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে নিবার্চনী সভার অনুমোদনের বিষয়টি সহজ করার কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান অনুমোদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কতৃর্পক্ষকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সভার অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে না দেয়া হলে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে গণ্য হবে। অনুমোদন পাওয়ার নিশ্চয়তার জন্য এই প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সংস্কার কমিটি তাদের সুপারিশের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। আচরণবিধির ৭-এর উপবিধি ৫-এর পর ৫ (ক) সন্নিবেশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিবার্চনে প্রচারণায় ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিধির ৯ উপবিধির পর ৯ (ক) যুক্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রাথীর্র প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিধি ১৪-এর উপবিধি ৪ সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীর্ বা প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কমিটির সদস্য/নেতা/কমীর্, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষের্দ আগে সভাপতি বা সদস্য হিসেবে নিবাির্চত বা মনোনীত হয়ে থাকলে বা কোনো মনোনয়ন পেয়ে থাকলে নিবার্চনের আগে তিনি বা তদকতৃর্ক মনোনীত ব্যক্তি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষের্দ থাকতে পারবেন না। ইসির আইন সংস্কার কমিটি মনে করছে, এতে শিক্ষক-কমর্চারীদের ওপর প্রভাব কমবে। ভোটগ্রহণ কমর্কতার্ হিসেবে শিক্ষকদের নিরপেক্ষভাবে কাজের পথ সুগম হবে। ভোটগ্রহণে যেসব প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার থাকেন তাদের বেশির ভাগই শিক্ষক। পরিচালনা পষের্দর সভাপতি বা সদস্যের হাতে শিক্ষকদের চাকরি-সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয় সংরক্ষিত আছে। এতে শিক্ষকরা এক ধরনের মানসিক চাপে থাকেন। বিদ্যমান বিধিমালায় প্রতিদ্ব›দ্বী প্রাথীের্দর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পষের্দ থাকার সুযোগ রয়েছে। তবে তারা নিবার্চনের আগে প্রতিষ্ঠানের কোনো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতে পারবেন না বা প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে জড়িত হতে পারবেন না বলে বিধান রয়েছে। আচরণ বিধিমালার সংশোধন প্রস্তাব সম্পকের্ জানতে চাইলে ইসির আইন ও বিধিবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘আচরণবিধিতে সামান্য কিছু সংশোধনের সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি চ‚ড়ান্ত নয়। কমিশন সভায় এটি উপস্থাপন করা হবে। কমিশন অনুমোদন দিলেই তা চ‚ড়ান্ত হবে।’ জানা গেছে, সারাদেশে বতর্মানে প্রায় দেড় লাখ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি-অনাসর্ মাস্টাসর্ বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষের্দ সংসদ সদস্যরা সভাপতি হিসেবে আছেন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সভাপতিসহ বিভিন্ন পদে আছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধিমালা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পষর্দ অসীম ক্ষমতার অধিকারী। নিয়োগ, বরখাস্ত, চাকরিচ্যুতি, পদোন্নতি এবং ইনক্রিমেন্ট দেয়াসহ সব ধরনের কাযর্ক্রম পরিচালনা পষের্দর হাতে ন্যস্ত। শিক্ষক বা কমর্চারীদের কেউ কোনো অপরাধ করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সরাসরি অ্যাকশন নিতে পারে না। এ জন্য সরকার বা মন্ত্রণালয়কেও পরিচালনা পষের্দর কাছে ধরনা দিতে হয়।