নুরুল ইসলামের হাতে 'আলাদীনের চেরাগ'

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
নাম তার নুরুল ইসলাম। মাত্র ১৩০ টাকায় দৈনিক চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন টেকনাফ স্থলবন্দরে ২০০১ সাল থেকে। ২০০৯ সালে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের আস্থাভাজন আরেকজনকে ওই পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে জড়িয়ে পড়েন দালালি সিন্ডিকেটে। এরপরই তার অবস্থা আঙুল ফুলে কলাগাছ। তিনি যেন পেয়ে গেছেন 'আলাদীনের চেরাগ'। ঘষা দিলেই যেন সেই দৈত্য এনে দিচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। এখন তিনি ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। একাধিক পস্নট, ফ্ল্যাটের মালিক নুরুল ইসলাম নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন একাধিক প্রতিষ্ঠান। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। র্ যাবের দাবি, টেকনাফ বন্দরে নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালির কৌশল রপ্ত করে বন্দরে দালালির বিভিন্ন সিন্ডিকেট গড়ে অবৈধভাবে অর্জন করেছে সাড়ে ৪শ' কোটি টাকার বেশি সম্পদ। নামে-বেনামে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারর্ যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ওর্ যাবের যৌথ অভিযানে সোমবার \হমধ্যরাতে ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. নুরুল ইসলামকে (৪১) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ভোলা সদরের পশ্চিম কানাই নগরের মো. আব্দুল মোতালেবের ছেলে। অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, মিয়ানমারের ৩ লাখ ৮০ হাজার মূল্যমানের মুদ্রা, ৪ হাজার ৪শ পিস ইয়াবা এবং ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা। র্ যাব বলছে, নুরুলের সিন্ডিকেটে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দালালি কার্যক্রমগুলো করে থাকে। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহণ সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কাঠ, শুঁটকি, বরইয়ের আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসত। চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাকস্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ করত। এ ছাড়া অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সঙ্গে সমন্বয় এবং চতুরতার সঙ্গে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েস কারসাজি করত নুরুল ইসলাম। অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন তিনি। নানা অপকর্মের মাধ্যমে অর্জিত অর্থে ঢাকা শহরে ৬টি বাড়ি ও ১৩টি পস্নট কিনেছেন তিনি। সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে ৩৭টি জায়গা, পস্নট, বাগানবাড়ী রয়েছে। অবৈধভাবে তার অর্জিত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা।