পিছিয়ে যাওয়া আমাদের নিয়তিতে পরিণত হয়েছে -সুলতানা কামাল

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পরও বৈষম্য বেড়ে চলেছে অভিযোগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধু তার ৭ মার্চের ভাষণে নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কথা বলেছিলেন। সেই পথ থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। পিছিয়ে যাওয়া আমাদের নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকারের চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পরও মানুষের বঞ্চনা কমেনি। বৈষম্য বরং আরও বেড়েছে।' বুধবার বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সুলতানা কামাল আরও বলেন, দেশে রাস্তাঘাট, কালভার্ট, সেতুর উন্নয়ন হচ্ছে। নতুন নতুন ভবন হচ্ছে। উন্নয়নের এই দিকই শুধু বেছে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন করে মানুষের মানসিকতা-মননের পরিবর্তনের চেষ্টা কম। আলোচনা সভায় ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা এক ব্যতিক্রমী জাতীয় নেতা ছিলেন। তিনি পিছিয়েপড়া মানুষ ও নারীদের অগ্রগতির কথা বলতেন। কোনো জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষাই যে সবচেয়ে প্রধান উপকরণ, সে কথা তিনি অনেক আগেই ভেবেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, বাংলাদেশ বহুজাতিক মানুষের দেশ। এই জাতিগত বৈচিত্র্যকে স্বীকার করতেই হবে। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সেই স্বীকৃতির জন্য লড়াই করেছেন। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে তার সেই লড়াইয়ের আংশিক বিজয় হয়েছে। কিন্তু আজও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অনেক কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন সব সময়। সেই মূল্যবোধগুলো এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রম্নত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেএসএস নেতা উষাতন তালুকদার বলেন, অনেক আশা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছিল। কিন্তু এর গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো এখনো অবাস্তবায়িত। আরও বক্তব্য রাখেন- বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, কাপিং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পলস্নব চাকমা প্রমুখ। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জীবনী পাঠ করেন উন্নয়নকর্মী চন্দ্রা ত্রিপুরা।