বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

'ভেরিফিকেশনে' আটকে আছে ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ

সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অতীত ও ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে পুলিশের মাধ্যমে। এ লক্ষ্যে দেওয়া নির্ধারিত ফরমে তথ্য সংগ্রহ করেছে এনটিআরসিএ
আমানুর রহমান
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
আপডেট  : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১২

নতুন করে 'পুলিশ ভেরিফিকেশনের' শর্ত যুক্ত করায় আটকে আছে ৩৮ হাজার ২৬৮ জন শিক্ষক নিয়োগ। এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সব শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে, বিপুল সংখ্যক শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ বিলম্বের কারণে শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বিষয়ভিত্তিক মানসম্পন্ন শিক্ষক বাছাই করলেও এ সব শিক্ষকদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেহেতু শিক্ষকরা বেতনের শতভাগ সরকারের পক্ষ থেকে পেয়ে থাকেন, তাই এ প্রথমবার এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অতীত ও ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে পুলিশের মাধ্যমে। এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্ধারিত ফরমে তথ্য সংগ্রহ করেছে এনটিআরসিএ। এ তথ্য প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটি ভেরিফিকেশনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারের অফিসে পাঠাবে। এরই ধারাবাহিকতায় ফাইলগুলো মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে। এরপর ফের ঢাকায় ফেরত আসবে। প্রশাসনিক এ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও দীর্ঘ সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রশাসনিক নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও সময় লাগার বিষয়টি স্বীকার করে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কারিগরি শিক্ষকদের নির্ধারিত ফরমে তথ্য প্রদান শেষ হবে। এরপরই সব ফাইল মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারব। ভেরিফিকেশনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশ সুপারের অফিস হয়ে ফাইলগুলো মাঠপর্যায়ে যাবে। এরপর ফের ঢাকায় ফেরত এলে আমরা কাজ করব। এ ক্ষেত্রে কিছু সময় তো লাগবেই।

এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে,

গত ৩০ মার্চ বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৪ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। গত ১৫ জুলাইয়ে এনটিআরসিএ'র তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থীদের মধ্য থেকে ৩৮ হাজার ২৮৬ জনকে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক সুপারিশপত্র ২৯ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় এনটিআরসিএ। কিন্তু গত ১৬ সেপ্টেম্বর সেসিপ'র (সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) অধীনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য সর্বশেষ দফায় সুপারিশকৃত ৬শ' কারিগরি শিক্ষকের নির্ধারিত ফরমে তথ্য প্রদান শেষ না হওয়ায় ৩৮ হাজার ২৬৮ জনের তথ্য-উপাত্ত এখনো পুলিশের কাছে পাঠানো হয়নি।

বিষয়টি স্বীকার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. সৈয়দ ইমামুল হক যায়যায়দিনকে বলেন, সর্বশেষ দফায় সুপারিশকৃত ৬শ' কারিগরি শিক্ষকের তথ্য যত দ্রম্নত শিক্ষকরা দেবেন, তত দ্রম্নত সবার তথ্য যাচাইয়ের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনে পাঠানো হবে। সবার তথ্য পাওয়া গেলে দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ করা যাবে।

এদিকে, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে যায়যায়দিনকে বলেন, 'তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ফল ঘোষণার পর প্রায় তিন মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এখনো পুলিশ ভেরিফিকেশনই শুরু হয়নি। এটি আমাদের জন্য কতটা হতাশার ব্যক্ত করার ভাষা নেই। আবেদনের চার মাস পর ফল প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার তিন মাস পরও নিয়োগ পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত আমাদের মানসিক, আর্থিক ও সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হতে হচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে