শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মৃতু্যঝুঁকিতেও জীবনের জয়গান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যার সময় বিদেশে থাকার কারণে রক্ষা পেয়েছিলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের টালমাটাল পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন ১৯৮১ সালে। কিন্তু ঘাতকচক্রের শ্যেন দৃষ্টি ছিল তার ওপরে। তাই বারবার তাকে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বরাবরই শেখ হাসিনা দেশ ও মানুষের জন্য লড়াই করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য সংগ্রাম করেছেন।

এই লড়াই সংগ্রামকালে তিনি যেমন একাধিকবার কারান্তরীণ হয়েছেন, তেমনি বারবার হামলার শিকার হয়েছেন। তাকে

হত্যার জন্য কমপক্ষে ২০ বার সশস্ত্র হামলা করা হয়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় তিনি রক্ষা পেয়েছেন বারবার। আর অবিরাম দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন।

১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রম্নয়ারি সামরিক সরকার শেখ হাসিনাকে আটক করে ১৫ দিন অন্তরীণ রাখে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রম্নয়ারি এবং নভেম্বর মাসে তাকে দুইবার গৃহবন্দি করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২ মার্চ তাকে আটক করে প্রায় ৩ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দি ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে এক মাস অন্তরীণ রাখা হয় তাকে। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হয়ে গৃহবন্দি হন। ১৯৯০ সালে ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অন্তরীণ করা হয়। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে গ্রেপ্তার তার করে সংসদ ভবন চত্বরে সাবজেলে পাঠায়। প্রায় ১ বছর পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। তবে এ সময় যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শেখ হাসিনাসহ তার গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও আওয়ামী লীগের ৩০ জন নেতা-কর্মী শহীদ হন। লালদীঘি ময়দানে ভাষণদানকালে তাকে লক্ষ্য করে দুইবার গুলিবর্ষণ করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে আবারও তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন চলাকালে তাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদী রেল স্টেশনে তার কামরা লক্ষ্য করে অবিরাম গুলিবর্ষণ করা হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় হেলিপ্যাডে এবং শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দু'টি বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। শেখ হাসিনা পৌঁছার পূর্বেই বোমাগুলো শনাক্ত হওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক প্রাণঘাতী হামলা হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওইদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির সমাবেশে বক্তব্য শেষ করার পরপরই শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোড়া হয়। লোমহর্ষক সেই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন এবং ৫শ'রও বেশি মানুষ আহত হন। শেখ হাসিনা নিজেও কানে মারাত্মক আঘাত পান; যার ক্ষত এখনো তিনি বহন করে চলেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে