পাপুয়া নিউগিনিকে উড়িয়ে দিল ওমান

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

ম সুলতান মাহমুদ রিপন
ওমানের মাসকাটে আল আমিরাত স্টেডিয়ামে গতকাল টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে উইকেট পাওয়ার পর ওমানের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস -ওয়েবসাইট
রানের খাতা খোলার আগেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলল পাপুয়া নিউগিনি (পিএনজি)। আর সেই বিপর্যয় সামলে দলকে ভালো সংগ্রহের আশা দিলেন অধিনায়ক আসাদ ভালা ও চার্লস আমিনি। কিন্তু তাদের জুটি ভাঙার পর ওমানের অধিনায়ক জিসান মাকসুদ উঠলেন জ্বলে। তার বাঁ-হাতি স্পিনে দিশেহারা পাপুয়া নিউগিনি আটকে গেল সাদামাটা সংগ্রহে। সেটা পেরিয়ে যেতে একটুও বেগ পেতে হলো না স্বাগতিকদের। দুই ওপেনার আকিব ইলিয়াস ও জতিন্দর সিং মিলে শেষ করে দিলেন সপ্তম টি২০ বিশ্বাপের উদ্বোধনী ম্যাচের খেলা। আল আমিরাত স্টেডিয়ামে রোববার বিকালে টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে ওমান। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৯ রান করে পাপুয়া নিউগিনি। জবাবে ৩৮ বল বাকি থাকতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩১ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে ওমান। টি২০ ক্রিকেটে এটাই উইকেটের হিসাবে ওমানের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। আগে কখনোই কোনো দলকে এই ব্যবধানে হারাতে পারেনি মধ্যপ্রচ্যের দলটি। ২০১৯ সালে কানাডার বিপক্ষে ৮ উইকেটে জিতেছিল তারা। গত বছরও তারা একই ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল বাহরাইনকে। প্রথম পর্বের স্বাগতিক তারা। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতেই নিজেদের ভয়ংকর চেহারা দেখাল ওমান। এই গ্রম্নপেই রয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের যেন বড় ধরনের সতর্কবার্তা দিয়ে রাখল স্বাগতিকরা।র্ যাংকিংয়ে তিন ধাপ ওপরে থাকা পিএনজিকে পাত্তাই দেয়নির ওমান। ১০ উইকেটের (৪৪ বল হাতে রেখে) বিশাল জয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা করেছে স্বাগতিকরা। ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ তাদের। ওমানের আসল কাজটা অবশ্য করে দিয়েছিলেন বোলাররাই। ব্যাটসম্যানদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩০ রানের। টি২০ ফরম্যাটে যেটাকে মামুলি লক্ষ্যই বলা যায়। তাই বলে এত মামুলিও নয় যে ১০ উইকেট হাতে রেখেই এমন অনায়াস জয় পাওয়া যাবে।র্ যাংকিংকে যদি শক্তিমত্তার মানদন্ড ধরা হয়, তবে দুই দলের মধ্যে তো কিছুটা পিছিয়ে ছিল ওমানই (পিএনজি ১৫, ওমান ১৮)। তবে ঘরের মাঠের সমর্থন যেন স্বাগতিক দলের দুই ওপেনার আকিবল ইলিয়াস আর জতিন্দর সিংকে পেছনে তাকাতেই দিল না। ইলিয়াস ৪৩ বলে ৫০ আর জতিন্দর ৪২ বলে ৭৩ রানের ঝড় তুলে বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছেড়েছেন। এর আগে পাপুয়া নিউগিনির শুরুটা হয়েছিল ভয়াবহ, দলের রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান দুই ওপেনার। সেখান থেকে মাঝে হাল ধরেন টপঅর্ডারের দুই ব্যাটার। কিন্তু শেষদিকের ভয়াবহ ব্যাটিং ধসে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সংগ্রহটা বড় হয়নি পিএনজির। স্বাগতিক ওমানের বোলিং তোপে এক পর্যায়ে মাত্র ৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে পিএনজি। শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১২৯ রানে। এর আগে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ওমান অধিনায়ক জিশান মাকসুদ। তার বোলিং তোপেই পড়েছে পিএনজি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে চার বলে তিন উইকেট নিয়েছেন জিশান। সব মিলিয়ে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম বলেই সাজঘরে ফিরে যান টনি উরা। পরের ওভারের তৃতীয় বলে একই পথ ধরেন আরেক ওপেনার লেগা সিয়াকা। শূন্য রানে দুই উইকেট পতনের পর তবে তৃতীয় উইকেটে পাল্টা আক্রমণ করেন অধিনায়ক আসাদ ভালা ও চার নম্বরে নামা চার্লস আমিনি। এ দুজনের জুটিতে মাত্র ১০ ওভারেই আসে ৮১ রান। ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে রানআউটের মাধ্যমে ভাঙে এই জুটি। দুর্ভাগ্যজনক আউট হওয়ার আগে ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ২৬ বলে ৩৭ রান করেন আমিনি। তবে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন অধিনায়ক ভালা। ইনিংসের ১৫তম ওভারে কলিমউলস্নাহর বলে আউট হন ভালা। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৪৩ বলে ৫৬ রানের ইনিংস। দলীয় ১০২ রানের মাথায় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভালার বিদায়ের পরপরই মূলত মোড়ক লাগে পিএনজির ইনিংসে। শেষের ছয় ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৭ রান করতে পেরেছে পিএনজি। এর মধ্যে দলীয় ১১২ থেকে ১১৮ রানের মধ্যেই পাঁচটি উইকেট হারায় তারা। যার ফলে শেষ হয়ে যায় বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা। ওমানের পক্ষে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন জিশান। এ ছাড়া বিলাল খান ও কলিমউলস্নাহ ২টি করে উইকেট পান।