শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উসকানিদাতাদের জবাব দিতেই হবে :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, উসকানি দিচ্ছেন, তাদের খুব শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। তাদের জবাব দিতেই হবে। মঙ্গলবার র্'যাবের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন' শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। র?্যাবের সব ব্যাটালিয়ন ও ক্যাম্প পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ও সার্বিক ব্যবহার বিস্তৃত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার দুপুরের্ যাব সদর দপ্তরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন

করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো পূজামন্ডপে কোনো কিছু ঘটেনি। কিন্তু

এবার দেখছি অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। কুমিলস্নার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু উগ্র মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। সেখানে পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। ঘটনায় ৪ জন মারা গেছেন। আরেকজন মেডিকেলে মারা গেছেন। কেন এই হত্যাকান্ড, কেন এই মৃতু্য; কার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য এই মৃতু্য?

কুমিলস্নার ঘটনার মূল অভিযুক্তকে শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কুমিলস্নার পূজামন্ডপে যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। সে বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাকে আমরা ধরে ফেলতে পারব। কুমিলস্নায় কেন সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা জানতে পারব।

মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখলাম পরিতোষ নামে এক অল্প বয়সি ছেলে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেটা কেন্দ্র করে সহিংসতা। আমাদের পুলিশ বাহিনী তার বাড়ি-ঘর রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে তার পাশের গ্রামে অগ্নিসংযোগ লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। অতীতেও ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে রামু, নাসিরনগর ও ভোলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১৬ মে রাজধানীর পলস্নবীতে একটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। দুই যুবক একজনকে চাপাতি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করছে। সেই ঘটনা দেখে সবার হৃদয় কেঁপে উঠেছে। সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ক্লিপ আকারে প্রচার করে একটি মহল নোয়াখালীর যতন সাহাকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে মর্মে অপপ্রচার করছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক ও অমানবিকও বটে।

মন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা এই ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করবে। জবাব দিতে হবে তাদের, কেন তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করছে।

অপপ্রচারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমগুলোকে আরও সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যখনই এসব ঘটনা আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) ফেসবুকে দেখেন, তার সত্যতা যাচাই করবেন। উত্তেজনা সংবরণ করবেন। শুধু শুধু উসকানিতে অন্যায় কান্ড ঘটিয়ে বসবেন না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ও সার্বিক ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করতের্ যাব আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আমি প্রত্যাশা করব, সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের্ যাব আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।র্ যাবের দাপ্তরিক কাজ, প্রাইভেট কাজ, গুরুত্বপূর্ণ নথি, তথ্য সংরক্ষণে সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

অনুষ্ঠানের্ যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তথ্য এক জায়গায় করব। প্রযুক্তির ব্যবহার অপরাধ দমনেও সহায়তা করবে।

পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মঈনুর রহমান চৌধুরী বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে।'

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন বলেন, 'যারাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদের-ই আইনের আওতায় আনা হবে।'

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, 'উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের তদন্ত সংস্থা, নিরাপত্তা সংস্থাসহ যেসব বাহিনী রয়েছে তাদের প্রযুক্তির ব্যবহার করতেই হবে, তা না হলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। অপরাধ দমনে প্রযুক্তির ব্যবহার করতেই হবে।' তিনি বলেন, 'অন্যান্য সংস্থাও এর সুফল পাবে বলে আমি মনে করি।'

সঞ্চালক আলী আশরাফ তুষারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেনর্ যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।

অনুষ্ঠানের্ যাব ডাটা হাব ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স (ওএসআইএনটি),র্ যাব ডিজিটাল অব ম্যানেজমেন্টে সিস্টেম ওর্ যাব প্রাইভেট ক্লাউডের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের উদ্ভাবিত 'ডাটা হাব'র সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমের্ যাব ফোর্সেস আরও দ্রম্নততম সময়ে অপরাধী প্রোফাইলিং, অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারে সক্ষমতা অর্জন করেছে।

এছাড়া ওএসআইএনটি কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে গুজব তৈরি ও বিভিন্ন বিষয়ে উসকানিদাতা ও অন্যান্য অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। ফলশ্রম্নতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সব ধরনের অপরাধ মোকাবিলায়র্ যাব ফোর্সেসের আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। এ প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করেছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন সেন্টার।

র্

যাব ফোর্সেসের প্রশাসনিক সক্ষমতা বাড়াতে উদ্বোধন করা ডিজিটাল অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ওর্ যাব প্রাইভেট ক্লাউড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।র্ যাবে কর্মরত সব সদস্যের চাকরি, যোগদান, পদায়ন, ছুটি, প্রশিক্ষণসহর্ যাবের ক্রয় করা সব মালামাল, গাড়ি, রেশন ও মেডিকেল সার্ভিসের বিস্তারিত ডিজিটালি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজের্ যাবের সক্ষমতা আরও বাড়বে এবং পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।র্ যাব প্রাইভেট ক্লাউডে আভিযানিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি ডিজিটালি সংরক্ষণের মাধ্যমের্ যাবের সার্বিক সক্ষমতা বাড়বে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে