স্কটল্যান্ডের সামনে নির্ভার আফগানিস্তান

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

সুলতান মাহমুদ রিপন
সপ্তম টি২০ বিশ্বকাপের বছাই পর্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে গ্রম্নপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে স্কটল্যান্ড। এবার স্কটিশদের সামনে আসল লড়াই। বৈশ্বিক এ টুর্নামেন্টে সুপার টুয়েলভে স্কটিশদের প্রথম প্রতিপক্ষ এশিয়ার আরেক দল আফগানিস্তান। যে দলটি কি না এবারের আসরে ডার্ক হর্স হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। বিশেষ করে শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের মতো দুটি দলকে পেছেনে ফেলে সরাসরি মূল পর্বে খেলছে তারা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে আফগানিস্তান-স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি। এ ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স। প্রতিটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট এলেই 'ডার্ক হর্স' নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। তেমনটা এবারের টি২০ বিশ্বকাপ নিয়েও হচ্ছে। আফগানিস্তানকে বলা হচ্ছে টুর্নামেন্টের অন্যতম 'ডার্ক হর্স'। মূলত এমনটা ভাবছেন দলটির দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ল্যান্স ক্লুজনার। প্রোটিয়াদের সাবেক এই অলরাউন্ডারের মতে, মরুর বুকে সারপ্রাইজ দেওয়ার মতো দল আফগানরা। ক্লুজনার আফগানিস্তানের দল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, 'আমাদের দলটি খুবই ভালো। দলে বেশকিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছেন। যেমন রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবির মতো তারকারা আছেন এই দলটিতে। আমাদের কেউ হালকা করে দেখতে পারবে না। আশা করছি, টি২০ বিশ্বকাপে ভালো কিছু করে দেখাতে পারব।' ২০১০ সালের টি২০ বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল আফগানিস্তান। এরপর ২০১২ ও ২০১৪ সালেও অংশ নিয়েছিল দলটি। নিজেদের প্রথম তিন আসরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় আফগানরা। ২০১৬ সালের আসরে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে পারে আফগানিস্তান। আর এবারর্ যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দলের মধ্যে থাকায় সুপার টুয়েলভে সরাসরি খেলার সুযোগ হয় আফগানদের। তাই সুপার টুয়েলভ দিয়ে সপ্তম বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করছে রশিদ-নবিরা। সুপার টুয়েলভে আফগানিস্তানের গ্রম্নপে ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের মতো দল রয়েছে। টুর্নামেন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪৯ টেস্ট ও ৭১টি ওয়ানডে খেলা ক্লুজনারের অভিমত, 'তালেবানরা ভালো সহযোগিতা করছে। এমনকি ক্রিকেটকে দারুণভাবে পৃষ্ঠপোষকতাও করছে। ছেলেরা বিশ্বকাপের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। এই কয়েক মাসে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও দ্য হান্ড্রেডে অনেকের বেশ কিছু ম্যাচ খেলা হয়েছে। তাই আমার মনে হয় ওরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে আছেন।' আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে টি২০ বিশ্বকাপ শুরু করছে আফগানিস্তান। অফিসিয়াল দুই ম্যাচের (প্রস্তুতি ম্যাচ) একটিতে জয় ও পরাজিত হয় দলটি। ২০১৮ সালের জুন থেকে আটটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের সাতটিতেই জিতেছে আফগানরা। একটি সিরিজ সমতায় শেষ করে তারা। তাই ভালো অবস্থায় থেকেই সপ্তম টি২০ বিশ্বকাপ শুরু করতে পারছে আফগানরা। অথচ এই বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের খেলা নিয়ে ছিল সংশয়। কারণ গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখল করে নেয় তালেবানরা। এরপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধের মুখে দেশটির ক্রীড়াঙ্গন। নারীদের ক্রিকেট নিষিদ্ধ করে দেয় তালেবানরা। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ মঞ্চে নামছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ নিয়ে আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি বলেন, 'যে কোনো আসরে প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জয় দিয়ে শুরু করা হলো মুল বিষয়। প্রতিপক্ষ যেমনই হোক না কেন, জয় দিয়ে আসর শুরু করতে চাই আমরা।' ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই খেলেছিল স্কটল্যান্ড। এরপর ২০০৯ সালে খেললেও, পরের তিন আসরে জায়গা পায়নি তারা। ২০১৬ সালে আবারও বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যায় তাদের। তিনটি টি২০ বিশ্বকাপেই প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় স্কটিশরা। এবারই প্রথম সুপার টুয়েলভে স্কটল্যান্ড। বিশ্বকাপের শুরুতেই চমক দেখায় স্কটিশরা। ফেভারিট বাংলাদেশকে ৬ রানে হারায় তারা। এরপর পাপুয়া নিউগিনিকে ১৭ রানে ও ওমানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নেয় স্কটিশরা। আর সুপার টুয়েলভেও চমক দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক কাইল কোয়েতজার। তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তবে বিশ্বসেরা দলগুলোকে আমরা চমকে দিতে চাই। এজন্য বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো করা দরকার। বাছাই পর্বের মতো মূল পর্বেও ভালো শুরু করার লক্ষ্য আমাদের।' এ পর্যন্ত চারটি টি২০ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ১৪ ম্যাচে ৫ জয়-৯ হার রয়েছে আফগানিস্তানের। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৬টি ম্যাচ খেলেছে আফগানরা। সবগুলোই জিতেছে মোহাম্ম নবির দল আফগানিস্তান। আর তাই আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে স্পষ্টভাবেই ফেভারিট আফগানরা। তবে আফগানিস্তানকেও চমকে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে স্কটিশরা।