শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সন্তানদের নির্মমতা!

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
  ২৬ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

রাখি মন্ডল। বয়স প্রায় ১০৭ বছর অতিক্রম করেছে। স্বামী রিকাত মন্ডল অনেক আগেই মৃতু্যবরণ করেছেন। রাখি মন্ডল এখন শ্রবণশক্তিও হারিয়েছেন। দুই সন্তানের অযত্ন-অবহেলায় পরপারের অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। আশ্রয় হয়েছে নিজ বাড়ির একটি ভাঙা ঝুপড়ি ঘরে। অথচ দুই ছেলে থাকেন রঙিন দালান-কোঠায়। এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দাদুয়া গ্রামে।

রাখি মন্ডল ও তার স্বামী মৃত রিকাত মন্ডল এক সময় জীবনের সবটুকু শ্রম দিয়েছেন পরিবারের জন্য। করেছিলেন নিজস্ব কিছু জমিও। অথচ বৃদ্ধ বয়সে সঁ্যাতসেঁতে পাঁচ হাতের মধ্যে তৈরি একটি পাটকাঠির ঝুপড়ি ঘরে জীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে। এখন তার বেঁচে থেকেও পরপারের দিন গুনতে হচ্ছে।

বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ও স্থানীয়রা জানান, দুই ছেলে রয়েছে রাখি মন্ডলের। বড় ছেলে আনছার মন্ডল ও ছোট ছেলে ছামছু মন্ডল। তাদেরও ছেলে-মেয়ে হয়েছে। সবাইকে বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে দালান-কোঠায় রেখেছেন। সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় কঠোর পরিশ্রম করে গড়েছিলেন চাষাবাদ করার জন্য কিছু জমি ও বসতভিটা। অনেক কষ্ট করে দুই সন্তানকে বড় করেছিলেন। অথচ সেই সন্তানরাই এখন তাকে অযন্ত-অবহেলায় ফেলে রেখেছে। দেখার যেন কেউ নেই। পাঁচ হাতের মধ্যে পাটকাঠি দিয়ে তৈরি একটি কাঁচা ঘরে একটি থালা, কলসি, গস্নাস ও মাটিতে ভেজা রয়েছে বিছানা। খাওয়া দাওয়া সবকিছু ওইটুকু জায়গার মধ্যেই করতে হয় তাকে।

রাখি মন্ডলের ছেলে আনছার মন্ডল জানান, তার মা অসুস্থ। ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারে না। বিছানায় প্রসাব করে দেয়। তারপর অনেক বয়স হয়ে গেছে। তাই ঝুপড়ি ঘরে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন জানান, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে