জয়পুরহাটে পুড়ে মরল একই পরিবারের ৮ জন

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে বৈদ্যুতিক শটর্সাকিের্টর আগুনে দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের ৮ জনের মমাির্ন্তক মৃত্যু হয়েছে। এতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে পুরো জেলাবাসী। এর আগে এ ধরনের ঘটনা কখনও কেউ দেখেনি বলে জানিয়েছেন অনেকেই। ঘটনাস্থল ঘুরে জানা গেছে, জয়পুরহাট শহরের আরামনগর এলাকায় বুধবার রাত ৯টার দিকে দুলাল হোসেনের নিজ বাড়িতে হঠাৎ আগুন লাগে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলের দিকে যান এবং তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। বাড়ির প্রধান দরজা বন্ধ থাকায় কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তৎক্ষণাৎ এলাকাবাসী ফায়ার সাভিের্স খবর দিলে ফায়ার সাভিের্সর ২টি ইউনিট সেখানে পেঁৗছে তাদের উদ্ধার তৎপরতা চালায়। এ সময় ফায়ার সাভির্স কমীর্রা জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাদের উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে ৩ জনের পুড়ে যাওয়া লাশ পাওয়া যায়। বাকি ৫ জনকে দগ্ধ অবস্থায় জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভতির্ করা হলে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের বানর্ ইউনিটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা যাওয়ার পথে রাত ২টার দিকে যমুনা সেতুর কাছে ৪ জন মারা যায়। ভোরে ঢাকায় বাকি একজন মারা যায়। মৃতরা হলেনÑ গৃহকতার্ দুলাল হোসেন (৬৬), গৃহকতীর্ মোমেনা বেগম (৬২), ছেলে মোমিন আহমেদ (৩৫), মোমিনের স্ত্রী পরিনা বেগম (৩১) মোমিনের মেয়ে জেএসসি পরীক্ষাথীর্ বৃষ্টি (১৫), যমজ মেয়ে হাসি (১৩) ও খুশি (১৩) এবং দেড় বছরের ছেলে আ. নুর। এ খবর রাতেই ছড়িয়ে পড়ার পর পুরো জেলাসহ এলাকায় মাতম ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জয়পুরহাট-২ আসনের এমপি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ আলী মÐলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করেন। এ ব্যাপারে ফায়ার সাভির্স ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদশর্ক সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাইস কুকারের বৈদ্যুতিক শটর্সাকির্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে উপ-সহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৭ কাযির্দবসের মধ্যে তদন্ত রিপোটর্ দেবে। জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী পেঁৗছে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়কে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোনিয়া বিনতে তাবিবকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি আগামী ৩ দিনের মধ্যে রিপোটর্ পেশ করবে। তিনজনের লাশ জয়পুরহাট পেঁৗছাতে দেরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জয়পুরহাট শহীদ জিয়া কলেজ মাঠে মৃত ৫ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় জয়পুরহাট-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম সোলেমান আলী, পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানসহ প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও হাজার হাজার মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। অপর ৩ জনের লাশ জয়পুরহাট পেঁৗছালে বাদ আসর জানাজা শেষে সরকারি গোরস্তানে তাদের দাফন করা হয়। বতর্মানে জেলাবাসী শোকে মুহ্যমান। একসাথে একই পরিবারের ৮ জনের লাশ এর আগে কেউ দেখেনি বলে মন্তব্য করেন দেখতে আসা অনেকেই।