চট্টগ্রাম টেস্ট আরেকটি হার বাংলাদেশের জন্য উঁকি দিচ্ছে
প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
ম আমিনুল ইসলাম লিটন
পঞ্চম দিনে গড়াল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার চট্টগ্রাম টেস্ট। যেখানে সহজ জয়ই দেখতে পাচ্ছে সফরকারী পাকিস্তান। মঙ্গলবার ম্যাচের শেষ দিন ম্যাচ জিততে হলে অবিশ্বাস্য কিছু একটা করতে হবে বাংলাদেশকে।
প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনার আবিদ আলী-আব্দুলস্নাহ শফিক খেলেছেন দুর্দান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসেও যথারীতি তাই হচ্ছে। ২০২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দারুণ শুরু করে পাকিস্তান। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১০৯ রান, কোনো উইকেট না হারিয়ে। আবিদ আলি ৫৬* ও আব্দুলস্নাহ শফিক ৫৩* রানে অপরাজিত আছেন। আলোক স্বল্পতায় খেলা শেষ হয়েছে আগেভাগেই। পঞ্চম দিনে ৯০ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন মাত্র ৯৩ রান, বাংলাদেশের প্রয়োজন ১০ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২০২ রানের লক্ষ্য খুব কম নয়। মাঝারি পুঁজিতে যেমন বোলিং দরকার ছিল, সেটি করতে পারল না বাংলাদেশ। দুই ওপেনারের অপরাজিত ফিফটিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে জয়ের পালস্না ভারী পাকিস্তানের। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনে নাটকীয়
কিছু করতে না পারলে আরেকটি হার বাংলাদেশের জন্য উঁকি দিচ্ছে।
মূলত উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের পথ সুগম করে ফেলেছে পাকিস্তান। এদিন বাংলাদেশি বোলারদের কোনো সুযোগই তৈরি করতে দেননি আবিদ-শফিক। এক প্রান্তে টানা বল করে যাচ্ছেন তাইজুল ইসলাম, আরেক প্রান্তে এবাদত হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ ও আবু জায়েদ রাহী বল করছেন, কিন্তু কেউই উইকেটের দেখা পাচ্ছেন না।
আব্দুলস্নাহ শফিক যেভাবে খেলছেন, যেভাবে শাসন করছেন টাইগার বোলারদের, বোঝার কোনো উপায় নেই যে এটা তার অভিষেক টেস্ট। প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন, এবার মেহেদি হাসান মিরাজকে লং অনে ছক্কা মেরে ৮৮ বলে দ্বিতীয় ইনিংসেও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান। নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দুই ইনিংসেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি (৫৩*)।
অন্যপ্রান্তে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন পাকিস্তানের ওপেনার আবিদ আলীও। ৯২ বলে ৬টি চারের মারে ফিফটির দেখা পান এই ওপেনার ব্যাটসম্যান। ২০২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইতিমধ্যে দুই ওপেনারই ১০৯ রান তুলে ফেলেছেন। টাইগারদের বোলিং উইকেটের সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারছে না।
এর আগে তাইজুলের আউটে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রানে থামে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের ৪৪ রানসহ বাংলাদেশ ২০১ রানের লিড দিয়েছে। জয়ের জন্য পাকিস্তানকে করতে হবে ২০২ রান। আর বাংলাদেশের চাই ১০ উইকেট। এতে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, বড় হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন লিটন। প্রথম ইনিংসে ১১৪ রান করেছিলেন তিনি। এর আগে রোববার বাংলাদেশ ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে। এরপর মুশফিক-ইয়াসির দিন শেষ করে আসেন। সোমবার চতুর্থ দিন তৃতীয় বলে ফেরেন মুশফিক। সাইফ হাসান ১৮, মুশফিকুর রহিম ১৬ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১১ রান করেন। এবার লিটন-ইয়াসির মিলে দারুণ জুটি গড়ে এগুচ্ছিলেন। ব্যক্তিগত ৩৬ রানের সময় মাথায় আঘাত পেয়ে কনকাশন হয়ে মাঠ ছাড়েন। তার পরিবর্তে ব্যাটিংয়ে নামেন নুরুল হাসান সোহান। তিনি ১৫ রান করেন। পাকিস্তানের পক্ষে বল হাতে ৩২ রানে ৫ উইকেট নেন পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। সাজিদ খান ৩টি ও হাসান আলি ২টি উইকেট নেন।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৩৩০ ও পাকিস্তান ২৮৬ রান করেছিল। এতে ৪৪ রানে লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ১৫৭ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : প্রথম ইনিংসে ৩৩০/১০
পাকিস্তান : প্রথম ইনিংসে ২৮৬/১০
বাংলাদেশ : দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৬.২ ওভারে ১৫৭/১০ (মুশফিক ১৬, ইয়াসির আহত অবসর ৩৬, লিটন ৫৯, মিরাজ ১১, সোহান ১৫, তাইজুল ০, আবু জায়েদ ০, ইবাদত*; আফ্রিদি ৫/৩২, হাসান ২/৫২, ফাহিম ০/১৬, নুমান ০/২৩, সাজিদ ৩/৩৩)। (বাংলাদেশের লিড ২০১)
পাকিস্তান : দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ ওভারে ১০৯/০ (আবিদ ৫৬*, শফিক ৫৩*; তাইজুল ০/৩৭, ইবাদত ০/২৩, মিরাজ ০/৩৬, আবু জায়েদ ০/১৩)। ৪র্থ দিন শেষে।