ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

দুই দিনব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের উদ্বোধন

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শনিবার বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন -স্টার মেইল
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই এবং পারস্পরিক শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত না করি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য সুরক্ষিত পৃথিবী রেখে যেতে পারব না। যা ইতোমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কবলে পড়েছে। শনিবার ঢাকায় বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্য নিয়ে শনিবার দু'দিনের এ শান্তি সম্মেলন শুরু হয়। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে উদ্বোধন পর্বে ভিডিও কনফারেন্সে বঙ্গভবন থেকে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ সম্মেলন 'ঢাকা শান্তি ঘোষণা' শীর্ষক একটি সর্বসম্মত ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হবে। সমাপনী পর্বে সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজনের জন্য স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সভাপতি ও সায়মা ওয়াজেদকে সদস্য সচিব করে ৪৬ সদস্যের আয়োজক কমিটি গঠন করা হয়। গত মার্চ মাসে এ সম্মেলনের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আমাদের অবশ্যই ধর্ম, বিশ্বাস, বর্ণ এবং জাতিগত বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একটি সুষম বিশ্বব্যবস্থা সবার জন্য অপরিহার্য। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, আমরা সবাই ভাগাভাগি করে এমন একটি গ্রহে বাস করি যার দায়িত্বও আমরা ভাগ করে নিয়েছি। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সর্বোত্তম পন্থা। আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘাতের সমাধান এবং বিশ্বব্যাপী শান্তির প্রচারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রম্নতা নয়' বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই নীতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি-উলেস্নখ করে রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের পর মানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার অর্জনের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, ওটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্তি। যার ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। শান্তি সম্মেলনে যোগদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের সবাইকে একটি মূল্যবোধ, একটি আদর্শ এবং একটি স্বপ্ন রয়েছে এবং তা হলো শান্তি। আমরা শান্তি লালন করি। বিশ্বজুড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আমরা শান্তিকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে দেখি। এবং আমরা যেকোনো মূল্যে শান্তি অর্জন, টেকসই, প্রসার এবং শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। তাই আমরা সবাই এখানে যোগদান করেছি। এর চেয়ে মহৎ আর কিছু হতে পারে বলে আমি মনে করি না। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ভারতের সাবেক মন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ হামিদ আলবার, বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক ও জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, মিসরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লীগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসা। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের ধারণকৃত ভিডিওবার্তা অনুষ্ঠানে দেখানো হয়।