হারিয়ে যেতে বসেছে ধমর্পাশার শীতলপাটি

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ধমর্পাশা (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের ধমর্পাশা সদরের মহদীপুর দাসপাড়া শীতল পাটির জন্য একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। একসময় গ্রামটির জৌলুস ছিল, মানুষ ছিল সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে। গ্রামটিতে সারা বছর ধরে চলত শীতল পাটি তৈরির কমর্যজ্ঞ। কিন্তু কালের বিবতের্ন হারিয়ে যেতে বসেছে এ শিল্প। তবে ওই গ্রামের কিছু মানুষ পূবর্ পুরুষের এ পেশাকে এখনও বহন করে চলছে। প্রায় ২০০ বছর যাবত গ্রামটির ১৭০ থেকে ২১০টি পরিবার এ পাটি শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বৃদ্ধি এবং বৈষম্যের কারণে এ শিল্প এখন চরমভাবে বিপযর্স্ত। গ্রীষ্মকালে পাটির চাহিদা কিছুটা থাকলেও শীতকালে থাকে না। তখন পরিবার নিয়ে তাদের দুভোের্গ পড়তে হয়। ওই গ্রামের পাটির কারিগর সত্যবান জানান, বতর্মানে পাটির কদর কম থাকায় লাভ খুব কম হচ্ছে। একটি ৪-৫ হাত মাপের পাটি ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হয়। এ ছাড়া আতি ও বেতি মিলিয়ে রং করা পাটি ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। কারিগররা জানান, একজন শ্রমিক ১৫দিন শ্রম দিয়ে একটি পাটি তৈরি করতে পারেন। বেত ও শ্রমিকের দাম দিয়ে ১০০০ টাকার একটি রঙিন পাটিতে লাভ হয় মাত্র ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আর একটি জামদানী পাটিতে লাভ হয় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। একটি শীতল পাটি বিক্রি করে লাভ হয় মাত্র ২০০ টাকা। বতর্মানে এ পেশার সঙ্গে জড়িত অনেকেই মূলধন হারিয়ে পথে বসছে। অনেকেই বিভিন্ন এনজিও/সমিতির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। ফলে দিনরাত পরিশ্রম করেও পরিবার নিয়ে তাদের থাকতে হচ্ছে অধার্হারে-অনাহারে। ওই গ্রামের বারেশ চন্দ্র কর জানান, এত কিছুর পরও বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এখনো এ পেশাকে অঁাকড়ে ধরে আছি। পাটি কারিগররা জানান, তারা সরকারিভাবে অথৈর্নতিক কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না। তারা মনে করেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমিয়ে অনলে ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।