রোববার চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া চাকামইয়া ইউনিয়নের নাগরিকরা। ছবিটি নিশান বাড়িয়া কেন্দ্র থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া চতুর্থ ধাপে ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও তিনটি পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, চতুর্থ ধাপে ৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদ ও তিন পৌরসভার ভোটগ্রহণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। বাকি ইউপিতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।
চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট দেওয়া, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, এজেন্টদের মারধর, ভোট বর্জন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিবর্ষণসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার, প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
কটিয়াদীতে গুলিবর্ষণ ও কেন্দ্র স্থগিত
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই, সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ ও কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলার ১০নং জালালপুর ইউনিয়নের ৬৮নং উত্তর চরপুক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ ও ৭ নং বুথে ভোট ছিনতাই, আনারস প্রতীক ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ।
৬৮নং কেন্দ্রের উত্তর চরপুক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মো. মাসুদুল হক জানান, 'নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা জোরপূর্বক ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে ভোটগ্রহণ সাময়িক স্থগিত করা হয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাফসা নাদিয়া বলেন,
\হ'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'
কলাপাড়ায় ভোটারদের মারধর : কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, কলাপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে আসায় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের তিন সমর্থককে মারধর করে আহত করেছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া সাইক্লোন শেল্টার ভোট কেন্দ্রের অদূরে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- মো. মুসা হাওলাদার (৩৫) সজিব হাওলাদার (৩০) ও শাখাওয়াত হোসেন (৩৫)। তাদের গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের বাড়ি টিয়াখালীর নাচনাপাড়া গ্রামে।
কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত ) মো.আসাদুর রহমান জানান, ভোটারদের উপর হামলার ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
আনারস প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সুজন মোলস্না জানান, নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে হামলা অব্যাহত রেখেছেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মশিউর রহমান শিমু জানান, তার সমর্থকরা কোনো ভোটারদের উপর হামলা চালায়নি। নিজেরা ঘটনা সাজিয়ে অন্যের উপর দোষ চাপাতে চাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২ কর্মীকে কুপিয়ে জখম
চুয়াডাঙ্গার স্টাফ রিপোর্টার জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসলাম উদ্দিন বিশ্বাসের দুই কর্মীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের আবুল কালাম আজাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র ঝোড়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- ইউনিয়নের জোড়াঘাটা গ্রামের হুচুকপাড়ার আব্দুস সাত্তারের দুই ছেলে রাজু আহমেদ ওরফে রাজিব (২৮) ও তারই ছোট ভাই রাসেল (২৩)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ও আলুকদিয়া ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের ইসলাম উদ্দিন বিশ্বাস।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াদেহ মাহমুদ রবিন জানান, একজনের পশ্চাৎদেশে ও অপর জনের হাতে কোপের চিহ্ন রয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চন্দনাইশে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১২
চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ১০নং ধোপাছড়ি ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ২৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টায় নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ৬নং ওয়ার্ডস্থ ধোপাছড়ি বাজারে নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে অংশ নেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোরশেদুল আলম। এ সময় গালিগালাজসহ বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব?্যবহার করে জনৈক ব্যক্তি। এ সময় মোরশেদের সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে রক্ষার জন?্য চেষ্টা করে। পরে এর জের ধরে নৌকার প্রার্থী আব্দুল আলীমের সমর্থকরাও এগিয়ে আসলে দু'পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে সমর্থকদের বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর আহত ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গুরুতর আহতের মধ্যে একজনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
ভৈরবের কালিকাপ্রসাদে আহত-১০, পুলিশের রাবার বুলেট
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জ ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আৎকাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একে অন্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ফারুক মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. লিটন মিয়ার সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রিগান, উজ্জ্বল, রফিক, সজল, আমির হামজা, বাক্কি মিয়া, আপন, সাইদ, শরীফ ও মামুন মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে। এ সময় পুলিশ ২০/২৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় প্রায় এক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে ওই কেন্দ্রে।
ভৈরব থানার ওসি মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আৎকাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে পুলিশ,র্ যাব, বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের দ্রম্নত তৎপরতায় পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বকশীগঞ্জে নৌকার কর্মীদের ওপর স্বতন্ত্রপ্রার্থীর কর্মীদের হামলা
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাধুরপাড়া ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাইসহ ৮ জন আহত হয়েছে। আহতরা বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল আলম বাবুর নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তার কর্মীরা। বটতলা থেকে পূর্ব কামালের বার্ত্তী পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার কর্মীদের ওপর লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের লোকজন। এক পর্যায়ে নৌকার কর্মীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়।
হামলায় আহতরা হলেন- আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর বড় ভাই ও স্থানীয় কেবি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএইচ কবির (৫০), আমজাদ হোসেন (৫৫), ভিক্কু মিয়া (৬৫), আলম মিয়া (৩০), জিয়াউল হক জিয়া (৩৫), লিখন মিয়া (৩০) ও মিষ্টার মিয়া (৩২)।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, এই ঘটনায় বকশীগঞ্জ থানায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামি করে ১১৫ জনকে নামীয় আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেশবপুরে নৌকার সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্রপ্রার্থীর ৩ কর্মী আহত
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের কেশবপুরের ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছুর রহমানের ৩ কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনী কার্যালয়সহ বাড়িঘর ও মোটর সাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ ওয়াহিদুজ্জামানের নির্দেশে এ হামলা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে রোববার বিকালে উপজেলার ত্রিমোহিনী বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিছুর রহমানের ভাই ইউনুস আলীর স্ত্রী বিলকিস নাহার।
সংবাদ সম্মেলনে বিলকিস নাহার বলেন, নির্বাচনে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম আনিছুর রহমানের কর্মী-সমর্থকরা শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন পাড়া মহলস্নায় ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে যান। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ ওয়াহিদুজ্জামানের নির্দেশে সরাপপুর এলাকার কুন্ডুপাড়ায় তাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এ ঘটনায় রেজাউল ইসলাম, হাবিবুর রহমান ও রবিউল ইসলাম নামে দুইজন কর্মী আহত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপরেই সরাপপুর, মির্জানগর ও গোপালপুর এলাকায় আমাদের আনারস প্রতীকের তিনটি নির্বাচনী কার্যালয়, বাড়িঘর ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা।
এ বিষয়ে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। কোনো জায়গায় যদি এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেটি আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কুমিলস্নার কয়েক কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পুলিশের ফাঁকা গুলি
কুমিলস্না স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুমিলস্নায় কয়েকটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের ফাঁকা গুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে রোববার জেলার ৩টি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা প্রাথমিক বিদ্যালয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কনকাপৈত ইউনিয়নের জগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের বেলাল হোসেনের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাই কামরুজ্জামানকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়। বাতিসা ইউনিয়নের সোনাপুর কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। চিওড়া ইউনিয়নের সাঙ্গিশ্বর কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী, দেড়কোটা, শুভপুর ইউনিয়নের ধনিজকরা ও গুণবতী ইউনিয়নের রামপুর ও গুণবতী কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের শালধর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ককটেল বিস্ফোরণ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একই উপজেলার দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের আলেখারচর দারুসসুন্নাত মাদ্রাসা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা বহিরাগতরা। এ সময় পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কুমিলস্না আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদার জানান, ছোটোখাট ঘটনা ছাড়া তিনটি উপজেলায় ইউপি নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
হামলায় আহত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী
মাদারীপুরের স্টাফ রিপোর্টার জানান, রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের গাংকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলার শিকার হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। রোববার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আপন মামার নির্বাচনে এসে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার ইউপি নির্বাচনে ইশিবপুর ইউনিয়নে গোলাম রাব্বানীর মামা সালাহ উদ্দিন আহমেদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে মামার পক্ষে বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার ভোট চলাকালে ৭নং ওয়ার্ডের গাংকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রতিপক্ষ মোশারফ মোলস্নার লোকজন জাল ভোট প্রদান করছে- এমন খবরের ভিত্তিতে সেখানে যান গোলাম রাব্বানী। এ সময় মোশারফ মোলস্নার ছেলে সোহেল মোলস্না ও তার লোকজনের সঙ্গে রাব্বানীর তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে সোহেল তার সঙ্গে থাকা ছুড়ি দিয়ে রাব্বানীকে কোপ দেয়। এতে রব্বানীর ডান হাতের দুটি আঙ্গুল কেটে যায়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় উভয়পক্ষের আরও ৫ জন আহত হয়। স্থানীয়রা গোলাম রাব্বানীসহ আহতদের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে রব্বানীর হাতে সেলাই দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে মোশারফ মোলস্নার লোকজন প্রকাশ্যে ভোট নেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমিসহ কিছু লোক গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে আমাকে অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে ঠেকাতে গিয়ে হাত কেটে যায়। বিষয়টি নিয়ে আমি থানায় অভিযোগ করব।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, কেন্দ্রের ভেতর কোনো কিছু হয়নি। কেন্দ্রের বাহিরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. সাদিক বলেন, রাব্বানীর উপর হামলার কথা শুনেছি। থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদগঞ্জে আ'লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯নং গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নে ৫ম ধাপে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ'লীগ বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী শাহ আলম শেখের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার রাতে ওই ইউনিয়নের উত্তর ধানুয়া গ্রামের শেখ বাড়িতে প্রার্থীর নিজ বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেন।
স্থানীয়রা জানায়, রাতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা টের পেয়ে বাড়ির বাসিন্দারাসহ দীর্ঘসময় চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষতিগ্রস্ত শাহ আলম শেখ জানান, নির্বচনী প্রচারণায় নামার পর থেকে আমাকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি ধমকি দিয়ে আসছেন। তারই জের ধরে এই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত বলে আমি মনে করি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার প্রার্থনা করছি।
ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই এজেন্টকে কারাদন্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টাফ রিপোর্টার জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোটকক্ষে টাকা নিয়ে যাওয়ার অপরাধে হাবিবুল বাশার (৩৮) ও মহসিন মিয়া (৩৫) দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপশি একটি ভোট কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার অশোক কুমার চক্রবর্তীকে বরখাস্ত করা হয়।
রোববার সকালে পৃথক সময়ে জেলার আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলার দু'টি ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের আটক করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়। হাবিবুল বাশারকে ৬ মাসের এবং মহসিন মিয়াকে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। মহসিন মিয়া বিজয়নগর উপজেলার আদমপুর গ্রামের রাসু মিয়ার ছেলে ও হাবিবুল বাশারের বাড়ি আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, রোববার সকালে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে ইউনিয়নের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুর রহমানের (ঘোড়া প্রতীক) পক্ষে পোলিং এজেন্ট হাবিবুল বাশার ১৭ হাজার টাকার একটি খাম ও দু'টি মোবাইল ফোন নিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্দেহ হলে তারা হাবিবুল বাশারকে আটক করে। পরে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকাভর্তি খাম উদ্ধার করে। ওই খামের ওপর একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। পরে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট সাইফুল ইসলাম নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে এজেন্ট হাবিবুল বাশারকে ছয় মাসের কারাদন্ড ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার অশোক কুমার চক্রবর্তীকে বরখাস্ত করেন।
এদিকে সকালে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ৩৪ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান রতনের এজেন্ট মহসিন মিয়া। বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে ওই কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বে থাকা নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একরামুল সিদ্দিক আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে মহসিনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
পাবনায় ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা, গোলাগুলি
পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকরা ভোটকেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
রোববার বিকাল ৩টার দিকে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া একই ইউনিয়নের নাজিরপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বতস্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে মারধর করে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক নৌকায় সিল মারার অভিযোগ উঠেছে।
হেমায়েতপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, ওই কেন্দ্রে সকাল থেকেই বহিরাগত নৌকার লোকজন হামলা করার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের কড়াকড়িতে কেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা নস্যাৎ হওয়ায় দিশেহারা হয়ে কেন্দ্রে হামলা করে গুলি ছুড়েছে তারা। জনসমর্থন হারিয়ে নৌকার প্রার্থী কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছেন।
তবে নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মধু বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী নিশ্চিত পরাজয় জেনে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। গোলাগুলির কোনো ঘটনা আমার সমর্থকরা করেননি। বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকেরাই অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের ইনচার্জ (এসআই) তরিকুল ইসলাম বলেন, ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করা হলে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ২৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি রাবার বুলেট ও ২০টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
চরঘোষপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের প্রায় শেষের দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ব্যালট পেপার ছিনতাই করার চেষ্টা করলে আনসার ও পুলিশ সদস্যরা বাধা দিয়েছেন।
বোরহানউদ্দিনে বোমা বিস্ফোরণ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
ভোলার বোরহানউদ্দিনের হাসাননগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবেদ চৌধুরী ও মোটর সাইকেল প্রতীকের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মানিক হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সিহান নামে এক যুবককে আটক করা হয়।
রোববার দুপুর ২টায় ভোট চলাকালীন হাসান নগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে মির্জাকালু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ, কোস্ট গার্ড, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় উভয় পক্ষ প্রায় ২০টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দেয়। এ ঘটনায় সাময়িক সময়ের জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান বলেন, দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও বিজিবির সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কিছু সময়ে জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। পরে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
ফেনীতে ভোটকেন্দ্রের সামনে তিনজনকে কুপিয়ে আহত
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সামনে তিনজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। আহতরা অভিযোগ করেছেন, তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন এই আক্রমণ চালায়।
আহতদের দুইজন হলেন ইউনিয়নের স্বরাজপুর এলাকার রবিউল হক (৫৫) ও সুজন মিয়া (৪০)। আহত অপরজনের নাম জানা যায়নি। তার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর।
রবিউল হক বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা স্বরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। কেন্দ্র থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় পথ আগলায় একদল লোক।
'সদস্য প্রার্থী শাহ আলমের ছেলে রনি (২৫) জিজ্ঞেস করেন, "কাকে ভোট দিয়েছেন? আমার বাবাকে ভোট দিয়েছেন?' আমি তখন বলি, 'আমরা আমাদের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।" এ কথা বলতেই রনিসহ তার লোকজন চাপাতি ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমাদের কুপিয়ে চলে যায়।'
আহতরা সদস্য প্রার্থী আজাদ হোসেন কিরণের সমর্থক বলে জানান রবিউল হক।
সোনাগাজী উপজেলার এই কেন্দ্রে সে সময় সাংবাদিকরা ছিলেন। আহতদের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, তিনজনের হাতে, কোমরে ও পাছায় কোপানো হয়েছে। সেখান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা তিনজনকে হাসপাতালে পাঠান।
তবে সদস্য প্রার্থী শাহ আলম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'এই হামলার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমার ছেলে রনিও এ হামলার সঙ্গে জড়িত না। সে কেন্দ্রের আশপাশেও ছিল না।'
পটিয়ায় দুই কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের পর ভোটগ্রহণ বন্ধ
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে দু'টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এরপর ওই কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার সকালে পটিয়ার ছনহরা ইউনিয়নের রমেশ ফনিন্দ্র স্মৃতি পাঠাগার ও ধাউরডেঙ্গা সারদাচরণ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।
দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম জানান, দুইটি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। পরে ব্যালট ছিনতাইয়ের সত্যতা মেলায় ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরাফাত আল হোসাইন বলেন, সকালে দু'টি কেন্দ্র থেকে ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনার পর ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়েছে।