৩০ ডিসেম্বরই নিবার্চন: সিইসি

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
কে এম নুরুল হুদা
নিবার্চন আরও পেছানোর দাবি নাকচ করে প্রধান নিবার্চন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটের তারিখ ৩০ ডিসেম্বরের পরে নেয়ার সুযোগ নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন সামনে রেখে মঙ্গলবার আগারগঁাওয়ের নিবার্চন ভবনে রিটানির্ং কমর্কতাের্দর ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, ‘৩০ তারিখে নিবার্চনের তারিখ নিধাির্রত হয়েছে। এরপর আর নিবার্চনের তারিখ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।’ কেন সুযোগ নেই তার ব্যাখ্যাও দেন সিইসি। তিনি বলেন, বতর্মান সংসদের মেয়াদপূতির্ হবে ২৮ জানুয়ারি। ৩০ ডিসেম্বর ভোট হলে নতুন সরকার গঠনের জন্য হাতে সময় থাকছে ২৯ দিন। এই ২৯ দিন কিন্তু খুব বড় কোনো সময় না। নিবার্চনের যে ফলাফল আসবে সেগুলোর গেজেট করা, এই ৩০০ আসনের গেজেট করা কিন্তু যা-তা বিষয় না। এছাড়া জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লম্বা সময় ব্যস্ত থাকতে হয় বলে সে সময় নিবার্চন করা কঠিন বলে যুক্তি দেন সিইসি। নিবার্চন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে মতানৈক্যের মধ্যেই গত ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি নূরুল হুদা। সেখানে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ ধরে ১৯ নভেম্বর পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ রাখা হয়। বিএনপির ভোট বজের্নর মধ্যে গঠিত দশম সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি, সেই সংসদের মেয়াদ আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। ফলে তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নিবার্চন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির সামনে। তফসিলের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো মনোনয়নের প্রস্তুতি শুরু করলেও সাত দফা দাবি জানিয়ে আসা বিএনপি ও তাদের জোট শরিকরা স্পষ্ট ঘোষণা না দেয়ায় দশম সংসদের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা জাগছিল অনেকের মনে। বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রোববার সংবাদ সম্মেলন করে নিবার্চনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিলে সংশয় কাটে। তবে এ জোটের পক্ষ থেকে নিবার্চন এক মাস পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়। এই দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার নিবার্চন এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ রেখে পুনঃতফসিল ঘোষণা করে নিবার্চন কমিশন। সিইসি বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নিবার্চনে অংশ নিচ্ছে এটা কমিশনের জন্য ‘স্বস্তির বিষয়’। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পাটির্ এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশ ইসির ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও বিএনপির পক্ষ থেকে ভোট এক মাস পেছানোর দাবিতে অনড় থাকার কথা জানানো হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধমার্বলম্বীদের বড় ধমীর্য় উৎসব। থাটির্ ফাস্টর্ আর ইংরেজি নববষের্র কারণে বিদেশি পযের্বক্ষক ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত-হাইকমিশনার এবং মিশন কমর্কতার্রা ছুটিতে থাকেন। তাদের দৃষ্টির অন্তরালে একটা বড় ভোট চুরির নিবার্চন করতে সরকারের কৌশলী নিদেের্শ ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন নিধার্রণ করছে ইসি।’ অন্যদিকে নিবার্চন ভবনের ব্রিফিংয়ে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ‘৩০ তারিখ অত্যন্ত কমপ্যাক্ট টাইম আমি মনে করি। খ্রিস্টান সম্প্রদায় আমাদের বলেছে, আগে বা পরে তাদের অনুষ্ঠানের কাছাকাছি যেন নিবার্চন না হয়। সে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি’ ৪ নভেম্বর তফসিল দিয়ে ২১ ডিসেম্বর ভোট করার ইচ্ছা ছিল জানিয়ে নূরুল হুদা বলেন, পরে যখন তারা (খ্রিস্টান সম্প্রদায়) অনুরোধ করল, তখন তফসিল ৮ তারিখে এবং নিবার্চন ৩০ তারিখ নিধার্রণ করেছি। এই ৩০ তারিখের পরে নিবার্চন পেছানোর কোনো সুযোগ নাই। এই প্রেক্ষাপটে ৩০ ডিসেম্বর সামনে রেখেই নিবার্চনের সব প্রস্তুতি নিতে এবং দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকতে রিটানির্ং কমর্কতাের্দর নিদের্শনা দেন তিনি।