ধানের শীষ নিয়ে ভোটে লড়বে ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
অবশেষে প্রতীক ঠিক করেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে সামনে রেখে গড়ে ওঠা বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। কয়েক দফা বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ প্রতীকেই নিবার্চনে অংশ নেয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে ঐক্যফ্রন্টের শীষর্ নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জোটের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা জানান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন। এ সময় জোটের অন্যান্য শরিক দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আগামী নিবার্চনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটবদ্ধভাবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোটে অংশ নেবে।’ এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি দল (আওয়ামী লীগ) নিবার্চন না পেছাতে নিবার্চন কমিশনকে (ইসি) হুমকি দিচ্ছে। ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন-তার চিন্তা সরকারি দলের না করলেও চলবে,’ বলে মন্তব্য করেন মান্না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, ‘বুধবার বিএনপি নেতাকমীের্দর ওপর পুলিশ বাহিনীর নিমর্ম হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একদিকে সরকার পক্ষ চার দিন ধরে সমস্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে একটি উৎসব করল, সেই উৎসবের ফসলে দুজন মারা পযর্ন্ত গেল। তখন পুলিশ কোনো কিছু-ই করেনি।’ ‘অথচ এদিকে দেখা গেল, বিএনপির মনোনয়নপত্র বিতরণ উপলক্ষে যখন নেতাকমীর্রা জমা হয়েছে তার এক দিন আগে নিবার্চন কমিশন সড়ক পরিষ্কার রাখতে বিবৃতি দিলেন এবং তার পরদিনই এই হামলা হলো। আমরা মনে করি, নিবার্চন কমিশনের এ ব্যাপারে সতকর্ থাকা উচিত ছিল।’ নাগরিক ঐক্যের নেতা মান্না আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে, এই হামলার পর পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য সরকারি দলের হাত আছে। অসমথির্ত কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য খবরে জানা গেছে, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কমীর্রা হেলমেট পরে (যে হেলমেট বাহিনী আমরা কোটা আন্দোলনোর সময় দেখেছিলাম) নয়াপল্টনে তৎপর ছিল। আমরা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি ও নিন্দা জানাই।’ মান্না বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি- সরকার চেষ্টা করছে, বিরোধীদল যেন নিবার্চনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেই উসকানি দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করব। আমাদের সিদ্ধান্ত সব রকমের বাধা উপেক্ষা করে নিবার্চন করব। সেই নিবার্চনে একটা ভোট বিপ্লব হবে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে।’ আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হয়েছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে জোটগতভাবে ধানের শীষ প্রতীকে নিবার্চন করার বিষয়টি অবহিত করতে বিকালে নিবার্চন কমিশনে (ইসি) যাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে এক চিঠিতে নিবার্চন কমিশনকে জানানো হয়, ২০ দলীয় জোটের নিবন্ধিত ৮টি দল ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেবে। ইসিতে চিঠি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত নিবন্ধিত দলগুলো ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করা সংক্রান্ত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় নিবার্চন কমিশনে দেয়া হয়েছে। গণফোরামের কাযর্করী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ইসিতে চিঠিটি জমা দেন। এ চিঠি জমা দেয়ার পর সুব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলো যার যার দল থেকে নিবার্চন করবে এবং প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ ব্যবহার করবে।’ তিনি আরও জানান, ‘এর আগে গণফোরাম দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূযর্ প্রতীকে নিবার্চন করার বিষয়টি নিবার্চন কমিশনকে জানিয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমরা ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করব। এ বিষয়টিই নিবার্চন কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিএনপিসহ নিবন্ধিত দল রয়েছে চারটি। এর মধ্যে আ স ম আবদুর রবের দল জেএসডির ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার বিষয়টি নিবার্চন কমিশনকে আগেই অবহিত করেছে। অপরদিকে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ তাদের দলীয় প্রতীক গামছা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীকে অংশ নেবে বলে জানিয়েছিল। এখন তারাও ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেবে।