বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ পালাের্মন্টের গভীর উদ্বেগ

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:১৩

যাযাদি ডেস্ক
ইউরোপীয় পালাের্মন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যম, শিক্ষাথীর্, মানবাধিকারকমীর্ ও বিরোধী রাজনীতিকদের ওপর চলমান দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা করেছে তারা। গত বুধবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবাগের্ ইউরোপীয় পালাের্মন্টের বিতকর্ শেষে নেয়া প্রস্তাবে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ও আইনজীবী মীর আহমেদ বিন কাশেমের গুমের ঘটনাসহ বিচারবহিভূর্ত হত্যাকাÐ ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাখাইনে অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টির আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মযার্দাসম্পন্ন প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পালাের্মন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে পাস হওয়া এ প্রস্তাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আথির্ক ও ত্রাণ সহায়তা জোরদার করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তজাির্তক সম্প্রদায়ের প্রতি আহŸান জানানো হয়। বিতের্ক অংশ নিয়ে ইউরোপীয় পালাের্মন্টের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেলিগেশন প্রধান জ্যঁ লিমবাডর্ বলেন, তৈরি পোশাক খাতে নিরাপদ কমর্পরিবেশ ও শ্রম অধিকার অক্ষুণœ রাখার জন্য ইউরোপীয় ক্রেতাদের সংগঠন অ্যাকডের্র দেয়া সুপারিশের পূণর্ সুবিধা বাংলাদেশ না নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সন্ত্রাসবাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূণর্ হতে হবে। বাংলাদেশে অব্যাহত গুম, বিচারবহিভূর্ত হত্যাকাÐ এবং কঠোর আইন প্রণয়নের বতর্মান ধারাতে আমি উদ্বিগ্ন। জ্যঁ লিমবাডর্ সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নিবার্চন অনুষ্ঠানের আশা করেন, যাতে বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন থাকবে। নাগরিক সমাজের ওপর আক্রমণ বন্ধ করার আহŸান জানিয়ে সুইডেনের সুরাইয়া পোস্ট বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আটক সাংবাদিক, মানবাধিকারকমীর্ ও ছাত্রদের মুক্তি দিতে হবে। তিনি জাতিসঙ্ঘের বিরোধিতা ও রোহিঙ্গাদের নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহŸান জানান। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় প্রখ্যাত ফটোসাংবাদিক শহীদুল আলমের আটকের বিষয়টি উল্লেখ করেন নেদারল্যান্ডসের মারিটজি। তিনি বলেন, এটি বাকস্বাধীনতার পরিপন্থি। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করতে হবে। দুঃখজনকভাবে শহীদুল আলমই বাংলাদেশের একমাত্র নিপীড়িত ব্যক্তি নন। হয়রানি, আটক ও গুমের একটি পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু রয়েছে। বতর্মান পরিস্থিতি ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেতে পারে কিনা তা যাচাই করার আহŸান জানিয়ে মারিটজি বলেন, মানবাধিকারের জন্য জবাবদিহিতা খুবই গুরুত্বপূণর্। আর তা সমুন্নত রাখতে আমাদের সম্ভব সবকিছু করা প্রয়োজন। চেক রিপাবলিকের টমাস বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির নিয়ে ইইউ চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। সেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার হচ্ছে। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক, মানবাধিকারকমীর্ ও আইনজীবীরা সরকারের নিযার্তনের শিকার হচ্ছে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।