বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত, ভারত যাচ্ছে সরকারি প্রতিনিধি

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:১৩

যাযাদি রিপোটর্
এবারের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে। নিবার্চন ও তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দ্ব›েদ্বর কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে বসা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষই জানুয়ারিতে পৃথক তারিখে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার ঘোষণা দিয়েছিল। ভারতের তাবলিগের মুরুব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে তাবলিগ ও সরকারি কমর্কতাের্দর সমন্বয়ে গঠিত ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারত যাবে। একাধিক মন্ত্রণালয় ও তাবলিগের শীষের্নতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। জানতে চাইলে ধমর্ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘নিবার্চনের আগে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ। একইসঙ্গে তাবলিগের জামাতের মধ্যে বিরোধও রয়েছে। এসব বিবেচনায় তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাবলিগের দুই পক্ষের সব কাযর্ক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তারা কোনো জোড় (জমায়েত), ওজহাতি জোড় (স্পষ্টকরণ জমায়েত) কিছুই করতে পারবেন না। এ ছাড়া একটি প্রতিনিধি দল ভারত যাবে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করবেন।’ বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত প্রসঙ্গে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘নিবার্চন শেষ হলে দুই পক্ষ বসেই তারিখ নিধার্রণ করবে। সেক্ষেত্রে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে।’ জানা গেছে, ভারতের তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীরা গত বিশ্ব ইজতেমার পর ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমার জন্য ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি তারিখ নিধার্রণ করেন। অন্যদিকে ভারতে মাওলানা সাদবিরোধীরা ও হেফাজতপন্থি কওমি আলেমদের নিয়ে সম্প্রতি ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নিধার্রণ করেছিল। একইসঙ্গে দুই পক্ষই পৃথক তারিখে জেলাভিত্তিক জমায়েতের তারিখ নিধার্রণ করেছিল। আর এই জমায়েতকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে বসা বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খঁান কামাল। এ ছাড়া তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের মধ্যে শুরা সদস্য মাওলানা যুবায়ের আহমদ ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আলেমদের মধ্যে শোলাকিয়া ঈদগাহর খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ ও গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসানও উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নাল আবেদিন, পুলিশের আইজি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ধমর্ সচিব, সেতু বিভাগের সচিব, আওয়ামী লীগের ধমির্বষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ। বৈঠক সূত্র জানায়, আসন্ন জাতীয় নিবার্চনের কথা বিবেচনা করে ইজতেমার তারিখ চ‚ড়ান্ত না করার আহŸান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘নিবার্চন যথাসময়ে হলে ইজতেমা করা যাবে। না হলে হয়তো ইজতেমা পেছানো লাগতে পারে। নিবার্চনের তারিখ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন নিবার্চন কমিশন। তাই ইজতেমার তারিখ চ‚ড়ান্ত বলে ঘোষণা না করাই ভালো।’ বৈঠকে দুই পক্ষই নিজদের পক্ষে সাফাই বক্তব্য রাখেন। একপক্ষ জানায়, মাওলানা সাদ ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। অন্যপক্ষের দাবি, মাওলানা সাদ ভুল স্বীকার করেননি। এ কারণে বিষয়টি পরিষ্কার হতে একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবেন। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, তাবলিগের আহলে শুরা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মদ যোবায়ের, ধমর্সচিব মো. আনিছুর রহমান ও আওয়ামী লীগের ধমির্বষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ। এ প্রসঙ্গে শোলাকিয়া ঈদগাহর খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান হওয়া জরুরি। আলোচনার মধ্যে সমাধান হতেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে বলেও তিনি জানান।