নিবার্চনে সংখ্যালঘুরা শঙ্কিত

সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রানা দাশগুপ্ত ও নিমচন্দ্র ভৌমিকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা Ñযাযাদি
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন নিয়ে দেশের ধমীর্য় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা শঙ্কিত। নিবার্চনকালে সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করতে নিবার্চন কমিশন, সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নিবার্চনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দলের প্রতি আহŸান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু- বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহŸান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। এতে বলা হয়, সংখ্যালঘুদের কাছে নিবার্চন উৎসব নয়, শঙ্কা ও উদ্বেগের কারণ। এ শঙ্কা ও উদ্বেগ থেকে সংখ্যালঘুদের মুক্ত করার দায়িত্ব নিবার্চন কমিশন, সরকার, রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিতে হবে। ভোটের রাজনীতিতে সংখ্যালঘুরাই নিয়ামকশক্তি বলে মন্তব্য করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘পাকিস্তানি আমলের মতো ‘রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘু’ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করিনি, সীমাহীন আত্মত্যাগ করিনি, নিবির্চারে ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যার শিকার হইনি। জাতীয় সংহতি তথা জাতীয় মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নেয়ার তাগিদে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক স্বাথের্ আমাদের এই অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন আজ বড় বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই, দেশের ১২ শতাংশ ভোটারকে উপেক্ষা করে, পাশ কাটিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল ও জোটের ক্ষমতায়ন যেমন সম্ভব নয় তেমনি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনিমার্ণও অসম্ভব। কেননা, ভোটের রাজনীতিতে এরাই নিয়ামকশক্তি।’ রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘নিবার্চনকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল ও জোটের মিলিত উদ্যোগে উৎসবের আবহ তৈরি হলেও এ দেশে ধমীর্য় জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী তাদের উদ্বেগ থেকে মুক্ত হতে পারছেন না। নব্বই পরবতীর্ বাদে স্থানীয় ও জাতীয় পযাের্য় যতগুলো নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়েছে তা সংখ্যালঘু জনজীবনে বিপযর্য় ও আর উদ্বেগের কারণ হিসেবে এসেছে। তাই নিবার্চন অনেকের কাছে উৎসবের হলেও সংখ্যালঘুদের কাছে উদ্বেগের কারণ। তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতিটি নিবার্চনের শুরুতে নিবার্চন কমিশন অতীতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রæতি দিলেও কখনো তা রক্ষা হয়নি। আশা করি, এবার তার ব্যত্যয় ঘটবে। নিবার্চন কমিশনের কাছে আমাদের আহŸান, নিবার্চনে মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গিজার্সহ সব ধমীর্য় উপাসনালয়কে নিবার্চনী কমর্কাÐের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে আহŸান জানাই, এমন কাউকে আপনারা মনোনয়ন দেবেন না যারা ইতোপূবের্ জনপ্রতিনিধি হয়ে ও থেকে ধমীর্য় জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বাথির্বরোধী কমর্কাÐে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন। এমন কাউকে প্রাথীর্ করা হলে তবে সেই নিবার্চনী এলাকায় তাদের সংখ্যালঘুদের ভোট দেয়া সম্ভব হবে না বলে মনে হয়। একই সঙ্গে আহŸান জানাই, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অপির্ত সম্পত্তি প্রত্যপর্ণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভ‚মি কমিশন গঠন, বণৈর্বষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং পাবর্ত্য ভ‚মি বিরোধ নিষ্পত্তি আইনের বাস্তবায়নসহ পাবর্ত্য শান্তি চুক্তির পূণর্ বাস্তবায়নেও নিবার্চনী ইশতেহারে প্রতিশ্রæতি দিতে হবে।’ রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতিতে ইতোমধ্যে এক গুণগত পরিবতর্ন হয়েছে। এ জন্য সরকার, দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের স্বাগত জানাই। উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে বলে গোটা জাতির মতোই আমরা প্রত্যাশা করছি।’ সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিমচন্দ্র ভৌমিক। এ ছাড়া সংগঠনটির অন্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।