জিয়াউর রহমানের জন্মদিন আজ

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের এইদিনে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বাঘমারা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মনসুর রহমান। প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বগুড়া ও কলকাতায় শৈশব ও কৈশোর অতিবাহিত করেন জিয়াউর রহমান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সমাদৃত। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোসের্র প্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের কাছে প্রথম পরিচিত হলেও পরে তিনি বাংলাদেশের একজন বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন। তিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদশের্র ভিত্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনের মধ্য দিয়ে দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতির সূচনা করেন। শহীদ জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কমর্সূচি দিয়ে দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যান। তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি দেশের মানুষের প্রিয় দল হিসেবে '৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ, '৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নিবার্চনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অধীনে অনুষ্ঠিত '৮৬ সালের তৃতীয় ও '৮৮ সালের চতুর্থ এবং মহাজোট সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালে দশম সংসদ নিবার্চন বিএনপি বর্জন করে। আর সপ্তম ও নবম সংসদ নিবার্চনে সংসদে বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে চরম ভরাডুবি হয় দলটির। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে '৭১ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা যেমন এ দেশের মুক্তিকামী মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছিল, তেমনি '৭৫ সালে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যখন হুমকির মুখে, তখন সিপাহি-জনতার অভু্যত্থান হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসীন হন। পরে দেশে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে জিয়াউর রহমান চীনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন সম্পকের্র সূচনা করেন। দক্ষিণ-পূবর্ এশিয়ার সাতটি দেশকে নিয়ে 'সার্ক' গঠনের উদ্যোগ তারই। ওআইসিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর সংহতি জোরদার করার জন্য তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর তৎকালীন সরকার তাকে বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৮১ সালে এক সামরিক অভু্যত্থানে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মর্মান্তিকভাবে মৃতু্যবরণ করেন। জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'স্বাধীনতাত্তোর দুঃসহ স্বৈরাচারী দুঃশাসনে চরম হতাশায় দেশ যখন নিপতিত, জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া যখন বাধাগ্রস্ত ঠিক সেই সংকটকালে সিপাহি-জনতার মহাবিপস্নবের তরঙ্গস্রোতে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। মিথ্যা প্রতিশ্রম্নতির অপরাজনীতি দ্বারা জনগণকে প্রতারিত করে ক্ষমতাসীন মহল যখন মানুষের বাক-ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়েছিল, দেশকে ঠেলে দিয়েছিল দুর্ভিক্ষের করাল গ্রাসে, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্তির মতো জাতির এ রকম এক চরম দুঃসময়ে ৭ই নভেম্বর সৈনিক জনতার ঐতিহাসিক বিপস্নবে জিয়া ক্ষমতার হাল ধরেন। জিয়া ছিলেন আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক আপসহীন দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক। জিয়ার জন্মদিনে তার প্রদর্শিত পথেই আমরা আধিপত্যবাদের থাবা থেকে মুক্ত হবো ও গণতন্ত্র ফিরে পাব। আর এর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। কর্মসূচি:জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে আজ সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং বেলা ২টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। একইদিন নয়া পল্টনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এবং আগামীকাল বিএনপির উদ্যোগে ফিল্ড মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকে জিয়াউর রহমানের ওপর ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে বিএনপি। ইতিমধ্যে জিয়াউর রহমানের ছবি সংবলিত পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।