শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জয় দিয়ে বিপিএল শুরু করল সাকিবের বরিশাল

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১২৫/৮ ফরচুন বরিশাল:১৮.৪ ওভারে ১২৬/৬ ফল :ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী
ম ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

জয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করল সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। অষ্টম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে গতকাল ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে হারায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে।

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পুঁজিটা বড় ছিল না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। তবে সাদামাটা পুঁজি নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ঘূর্ণির মায়াজালে লড়াই জমিয়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু সতীর্থ বোলারদের ব্যর্থতায় শেষ রক্ষা করতে পারেননি। মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ ওভারে ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।

প্রথম ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৫ রান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। জবাবে ৮ বল বাকি রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বরিশাল। এতে পূর্ণ ২ পয়েন্ট নিয়ে এবারের আসর শুরু করল ৩ মৌসুম পর বিপিএলে ফেরা বরিশাল।

শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রামের পক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটরক্ষক কেনার লুইস ও ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস। ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেন লুইস। স্পিনার নাইম হাসান প্রথম বলেই ছক্কা খেলেও তৃতীয় বলে লুইসকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান। ৩ বলে ৬ রান করে ফিরেন লুইস।

দ্বিতীয় উইকেটে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেছিলেন জ্যাকস ও তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তারা। আফিফকে ব্যক্তিগত ৬ রানে থামান বরিশালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার আলজারি জোসেফ। আফিফ-জ্যাকস জুটিতে করেন ১৬ রান।

দলীয় ২২ রানে আফিফের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ১৪ ওভারে ৬৩ রানে ৬ উইকেটে পরিণত হয় তারা। সাব্বির রহমান ৮, জ্যাকস ১৬, অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ৯ ও শামিম হোসেন ১৪ রান করে ফিরেন।

দ্রম্নত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়া চট্টগ্রামকে তিন অংকের কাছাকাছি নিয়ে যান সপ্তম উইকেটে জুটি বাঁধা নাইম ইসলাম ও ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল। ৩২ রান যোগ করেন তারা। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে নাইমকে ১৫ রানে থামিয়ে জুটি ভাঙেন জোসেফ।

একই ওভারে পরের পাঁচ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান আদায় করে নেন হাওয়েল। এতে চট্টগ্রামের দলীয় স্কোর তিন অংকে পা রাখে। শেষ ওভারে ব্রাভোর তৃতীয় ডেলিভারিতে আরও ১টি ছক্কা হাকান হাওয়েল। পঞ্চম বলে হাওয়েলকে শিকার করেন ব্রাভো। আর শেষ বলে বাউন্ডারি আসে মুকিদুল ইসলামের ব্যাটে। শেষ ৫ ওভারে ৫২ রান তুলে সম্মানজনক সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।

শেষ দিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৫ রান করে চট্টগ্রাম। ৩টি করে চার-ছক্কায় ২০ বলে ৪১ রান করেন হাওয়েল। বরিশালের জোসেফ ৩২ রানে ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া নাইম ২টি, সাকিব-লিন্টট ও ব্রাভো ১টি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১২৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বরিশাল। মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার হয়ে ১ রান করে ফেরেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর দলের রানের চাকা সচল করেন আরেক ওপেনার সৈকত আলি ও অধিনায়ক সাকিব। জুটিতে ২৫ রান যোগ করে আউট হন সাকিব। সাকিবকে ১৩ রানে আউট করে চট্টগ্রামকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন মিরাজ।

সাকিবের বিদায়ের পর ৩৪ রানের জুটি গড়ে বরিশালকে লড়াইয়ে রাখেন সৈকত ও তৌহিদ হৃদয়।

মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটার হৃদয়-ইরফান শুক্কুর ১৬ রান করে করেন। ৩৫ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন সৈকত। মিরাজের করা ১৫তম ওভারে ইরফান-সৈকত ও সালমান আউট হন। রানের খাতা খোলার আগেই রান আউট হন সালমান। এতে ৯২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বরিশাল।

এমন অবস্থায় শেষ ৫ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪ রান দরকার পড়ে বরিশালের। সপ্তম উইকেটে ২২ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের জুটি গড়ে বরিশালকে জয় এনে দেন ব্রাভো ও জিয়াউর রহমান।

১৭তম ওভারে ১৮ রান নেন ব্রাভো-জিয়াউর। ১৮তম ওভারে নেন ৯ রান। আর ১৯তম ওভারের প্রথম চার বলে ৩ রান নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন ব্রাভো-জিয়াউর।

ব্রাভো ১০ বলে অপরাজিত ১২ ও জিয়াউর ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রান করেন। ব্রাভো ১টি চার এবং জিয়াউর ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১২৫/৮, (হাওয়েল ৪১, জ্যাকস ১৬, জোসেফ ৩/৩২)।

ফরচুন বরিশাল: ১৮.৪ ওভারে ১২৬/৬, (সৈকত ৩৯, ইরফান ১৬, মিরাজ ৪/১৬)।

ফল : ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: মেহেদি হাসান মিরাজ (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে