শাবি ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি সংসদে

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
এদেশে প্রত্যেকটা ছাত্র আন্দোলন যৌক্তিকভাবে হয়েছে মন্তব্য করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে (ভিসি) অব্যাহতি দেওয়ার দাবি করেছেন দুই জন সংসদ সদস্য। রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ এবং পীর ফজলুর রহমান এই দাবি করেন। তারা প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ভাইস চ্যান্সেলর ও হাউজ টিউটরের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তারা ১১ দিন ধরে অনশনে আছেন, ১৬ জন ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গেছে। এতে কারও টনক নড়ছে না। শিক্ষামন্ত্রী আছেন, উনি বলেছিলেন যে তোমাদের দাবি-দাওয়া রেখে ঢাকা আস আমার সঙ্গে আলোচনা করতে। আমরা সবাই ছাত্র আন্দোলন করে এসেছি, আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে কখনও কোনো ছাত্ররা কারও সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা আসবে না, আমরা জানি। মন্ত্রীর উচিত ছিল ওখানে ডাবল মাস্ক পরে যাওয়া।' তিনি বলেন, 'মোনায়েম খান বহুবার আমাদের বঙ্গভবনে ডেকেছেন। আমরা তখন ছাত্র ছিলাম আমরা বিয়ের দাওয়াত পেতাম না, আমাদের মিলাদের দাওয়াতও দিত না। কিন্তু বঙ্গভবনের দাওয়াতও কিন্তু আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা কখনও কোনো আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গভবনের দাওয়াতে যাইনি। ছাত্ররা কেন আসবে আপনার কাছে।' এ সংসদ সদস্য বলেন, প্রত্যেকটা ছাত্র আন্দোলন এদেশে হয়েছে যৌক্তিকভাবে। যখনই যারা সরকারে থাকে সে আন্দোলনকে তারা অযৌক্তিক মনে করে। ভিসি এমন কোনো স্থায়ী পদ না যে সে চলে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। একটা ভিসিকে সরাতে গিয়ে ছাত্ররা যদি অনশন করে এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু নেই। তিনি বলেন, বুঝতে হবে ভাইস চ্যান্সেলরের ওপরে ছাত্রদের কোনো আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। তার কোনো ভালোবাসা নেই, শ্রদ্ধাবোধ নেই এবং থাকা উচিত না। তার যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ থাকতো উনি অবশ্যই এখান থেকে সরে আসতেন। উনি জোর করে বসে আছেন পুলিশ ঘেরাও করে। কোনো ছাত্র আন্দোলনকে ছোট করে দেখা উচিত না মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি অবিলম্বে আর কোনো তদন্ত রিপোর্ট নয়, কারো সঙ্গে আলাপ-আলোচনা নয়, শিক্ষামন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী আছেন ভাইস চ্যান্সেলরকে আজকের মধ্যেই ওখান থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসেন, ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যেতে সহায়তা করেন। একই দাবি জানিয়ে আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীরা ভিসির সঙ্গে আলাপ করতে গেলে লাঠিচার্জ, গ্রেনেড হামলা, লাঠিপেটা করা হয়েছে। ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করার কারণেই ভিসির পদত্যাগের দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে ভিসি কোনো আলোচনা না করার কারণে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে গেছে। অনশনে অসুস্থ হয়ে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ভিসি আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নির্লজ্জের মতো পদে আছেন। ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভিসিকে চায় না কিন্তু লক্ষীন্দরের বাসার মতো সুরক্ষা নিয়ে নিজের বাসায় বসে আছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন না। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন না। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে না চাইলে সরকারের উচিত আজকের মধ্যে তাকে অব্যাহতি দেওয়া।