ভারত ভ্রমণে এক নম্বরে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
তুলনামূলক ভালো স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা এবং নৈসগির্ক সব পযর্টন এলাকার টানে নিয়মিতই ভারতে ছুটে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা। ভিসাপ্রাপ্তি আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবেশী দেশটিতে গমনে বাংলাদেশিদের এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এখন ভারত ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিশ্বের সব দেশকে ছাপিয়ে এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দুই দেশের সৌহাদর্্যপূণর্ সম্পকর্ এগিয়ে নিতে সামনে আরও কিছু ‘চমক’ আসছে বিধায় বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণ আরও বেড়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, বতর্মানে প্রতিদিন ৬-৮ হাজার ভিসা ইস্যু করছে হাইকমিশন। যে বাংলাদেশিরা ভারতে যান, তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই যান ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে, ৩০ শতাংশ যান মেডিকেল ভিসা নিয়ে। বাকি ১০ শতাংশ যান অন্যান্য ভিসায়। ২০১৭ সালে ভারতের পযর্টন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরে প্রায় ১৪ লাখ বাংলাদেশি ভ্রমণ করেছেন ভারত। যেটা ছিল ভারত ভ্রমণে যাওয়া পযর্টকদের প্রায় ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ছাপিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র (প্রায় ১২ লাখ) এবং যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোকেও। ২০১২ সালে ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতে ঈদসহ বিশেষ ক্ষেত্রে অধিকসংখ্যক ভিসা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশন। নরেন্দ্র মোদি সরকারের সদিচ্ছা আর বতর্মান হাইকমিশনার হষর্ বধর্ন শ্রিংলার আন্তরিকতায় ভিসা প্রক্রিয়া হয়েছে অনেক সহজ ও কম সময়সাপেক্ষ। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ থেকে সহজতর হয়েছে বিধায়ই দেশটিতে বাংলাদেশিদের গমনের হারও বেড়ে চলেছে। ভারতের পযর্টন মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, ২০১৭ সালে যেখানে ভারত ভ্রমণকারী বিদেশিদের মধ্যে ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ছিল বাংলাদেশি, সেখানে ২০১৮ সালের মাচের্ এসে এ হার দেখা যায় ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর চলতি বছরের জুন মাসে এ হার দেখা গেছে ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। কেবল বাংলাদেশিই নয়, সাবির্কভাবেও ভারত ভ্রমণের হার বাড়ছেই। দেশটির ইমিগ্রেশন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জানুয়ারি-জুনে ভারতে ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭ জন বিদেশি ভ্রমণ করেছেন, আর ২০১৮ সালের জানুয়ারি-জুনে দেশটিতে গিয়েছেন ৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৪৩ জন বিদেশি। অথার্ৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশিদের ভ্রমণ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। দাজিির্লং, কাশ্মীর, আজমির, আগ্রা, গোয়া, কন্যাকুমারীর মতো নৈসগির্ক পযর্টন এলাকার টান; চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, ভেল্লোর, মুম্বাই, দিল্লির চিকিৎসা সেবার প্রতি আস্থা এবং সুলভ কেনাকাটার জন্য বাংলাদেশিদের আগ্রহের কেন্দ্রেই থাকে ভারত। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত কয়েক বছরে ঢাকা-কলকাতা, খুলনা-কলকাতা ননস্টপ ট্রেন চলাচল, হরিদাসপুর ও গেদে রুটে রুট ব্যারিয়ার তুলে নেয়া, ই-টোকেন ছাড়া ভিসা আবেদন, সিনিয়র সিটিজেনদের পঁাচ বছরের ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসায় সাধারণদের এক বছর ভিসা দেয়া প্রভৃতি গুরুত্বপূণর্ পরিবতর্ন এনেছে ভারত। এ ছাড়া ঢাকায় চাপ কমাতে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূণর্ জেলায় ভিসা সেন্টার খোলার ঘোষণা আগেই দিয়েছে হাইকমিশন। বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। এটিসহ আরও বেশকিছু সুখবর শিগগির মিলবে ভারত ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আগেই জানিয়েছে, সিকিম, লাদাখ, অরুণাচল, মণিপুর, মিজোরামের মতো দারুণ আকষর্ণীয় পযর্টনকেন্দ্রগুলোতেও বাংলাদেশিদের প্রবেশ সহজ হতে চলেছে। কবে নাগাদ তা হবে, সেটা সংবাদমাধ্যমগুলো স্পষ্ট না করলেও বলা হচ্ছে, ওই পযর্টনগুলোতে প্রবেশও সহজ হলে ভারতে বাংলাদেশি পযর্টক বেড়ে যাবে আরও কয়েকগুণ।