শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
শাবিতে আন্দোলন

তহবিল ও মেডিকেল সাপোর্ট বন্ধ, সাবেক ৫ ছাত্র গ্রেপ্তার

ম সিলেট অফিস ও শাবি প্রতিনিধি
  ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

'গোপন ও সন্দেহজনক' লেনদেনের অভিযোগে শাবির আন্দোলন চালিয়ে যেতে গঠিত তহবিল ও সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সন্দেহজনক অর্থ সহায়তার দায়ে শাবির ৫ জন সাবেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিমের চিকিৎসা সেবা দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আয়োজিত জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অ্যাকাউন্ট সোমবার দুপুরের পর থেকে কাজ করছে না।

সবগুলো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

নাম না বলার শর্তে এ আন্দোলনকারী জানান, ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও রকেটের মোট ৬টি অ্যাকাউন্টে প্রতিদিন অনেক টাকা আসত সাবেকদের পক্ষ থেকে। আমাদের অনশনকারী ভাইবোনদের জন্য তারা পাঠাতেন। সোমবার দুপুরের পর থেকে লেনদেন করা যাচ্ছে না ওই একাউন্টগুলোতে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করে কোনো কাজ হয়নি।

এদিকে সিআইডি পুলিশ জানায়, এসএমপি পুলিশের অভিযানে সহায়তাকারী দল হিসেবে গতরাত থেকে শাবির আন্দোলনে অর্থ সহায়তা দানকারীদের বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তারা শাবির ৫ জন সাবেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেন। এর মধ্যে দুই জন হলেন- শাবিপ্রবির আর্কিটেকচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রেজা নূর মুঈন ও সিএসই বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান।

শাবির আরেক সাবেক শিক্ষার্থী শাহ রাজী সিদ্দিক জানান, উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর

থেকে সিআইডি পুলিশ হাবিবকে গ্রেপ্তার করে। আন্দোলনকারীদের ডোনেট করায় তাকে তুলে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) আশরাফ উলস্নাহ তাহের বলেন, সিআইডি ওই ৫ জনকে এসএমপির কাছে হস্তান্তর করেছে।

তবে তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শঙ্কায় রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তারা বিকল্প কোনো উপায়ে টাকা সংগ্রহ করবেন কিনা- সে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তবে, এখন আর বাইরের কারো কাছ থেকে টাকা না নিয়ে নিজেদের পকেটের টাকায় রান্নাবান্না করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিম বন্ধ করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি দল শাবিপ্রবিতে অনশনকারীদের চিকিৎসা সেবা দিতে শাবিপ্রবিতে আসেন। সোমবার থেকে তারা অনশনকারীদেরকে কোনো মেডিকেল সাপোর্ট দিচ্ছে না বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়।

আন্দোলনকারীদের এক মুখপাত্র আরিফুল ইসলাম চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানায়, অনশনরত শিক্ষার্থীদের সবার অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়ছেন। তারা সবাই খিঁচুনি, বস্নাডে অক্সিজেন ও সুগার লেভেল কমে যাওয়া, বস্নাড প্রেসারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় পড়ছেন। তারা অর্গান ড্যামেজের ঝুঁকিতে আছেন। এই শিক্ষার্থীরা জীবন-মৃতু্যর সন্ধিক্ষণে এসেও মেডিকেল সাপোর্ট পাচ্ছেন না তা নিয়ে আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন।

এ বিষয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. নাজমুল হাসান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রথম থেকেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। এখন শিক্ষার্থীদের এবং আমাদের চিকিৎসকদের মধ্য থেকে কয়েকজনের করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আমরা আপাতত সেবাটি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তীতে আমরা কী করব, সেটা জানিয়ে দেব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে