এরশাদের সমস্যা বয়সের, বললেন ভাই কাদের

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
জিএম কাদের
জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার চিকিৎসায় ‘বাধা’ আসার অভিযোগ করলেও তার ভাই দলের কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন ভিন্ন কথা। জিএম কাদের বলছেন, ৮৮ বছর বয়সে ‘যতটা’ সুস্থ থাকার কথা, ‘ততটা’ সুস্থ এরশাদ আছেন। তার চিকিৎসা নিয়ে ‘ধূম্রজালের’ কোনো সুযোগ নেই। আর মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, এরশাদ বড় রকমের অসুস্থ- এটা মনে করার মতো কিছু ঘটেনি। তার বিদেশে যাওয়ার বিষয়েও কোনো বাধা নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পাটির্র বনানীর কাযার্লয়ে এক আলোচনা সভা শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন তার ভাই জিএম কাদের। তিনি বলেন, এরশাদ সাহেব একজন বয়স্ক রাজনীতিবিদ, উনার বয়স হয়েছে। এই বয়সে স্বাভাবিক কারণেই শারীরিক অনেক সমস্যা দেখা যায়। উনারও সমস্যা হচ্ছে। কাদের বলেন, চিকিৎসকরা এরশাদকে যতটুকু ‘দৌড়ঝঁাপ’ করার অনুমতি দিয়েছেন, তিনি তার চেয়ে বেশি করেন। এটা তার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ডাক্তাররা উনাকে বিধিনিষেধ দেন- ‘এখানে যেতে পারবেন, ওখানে যেতে পারবেন না। বসে থাকতে হবে, ঘুমাতে হবে।’ এমন বাধা তো আমরা অসুস্থ হলে আমাদেরও দিতেন চিকিৎসকরা।’ পর মুহূতের্ই কাদের বলেন, তবে তার চিকিৎসায় বাধা আছে বা তিনি ভীষণ খারাপ অবস্থার মধ্যে আছেন, তাও কিন্তু নয়। তবে উনি যে সম্পূণর্ সুস্থ আছেন, তাও নয়। এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য এরশাদের সিঙ্গাপুর যাওয়া নিয়ে দল ‘উৎকণ্ঠিত নয়’। ডাক্তাররা যদি বলেন, এখানে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে, তাহলে কেন তাকে নিয়ে যাব? তবে তারা যদি মনে করেন, এখানকার চিকিৎসা যথেষ্ট নয়, উনাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে হবে; তখন নিয়ে যাওয়া হবে। এটা নিয়ে আমরা উৎকণ্ঠিত নই। এরশাদের সবের্শষ শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে জাতীয় পাটির্র কো চেয়ারম্যান বলেন, তিনি যতটুকু সুস্থ থাকার কথা, ততটুকু আছেন। তবে সম্পূণর্ সুস্থ এটা বলা বোধ হয় ঠিক হবে না। শারীরিক অবস্থা যাই হোক, এরশাদ দলীয় সব কমর্কাÐে সম্পৃক্ত আছেন এবং তার নিদের্শনায়, তার নিয়ন্ত্রণেই জাতীয় পাটির্ চলছে বলে মন্তব্য করেন জিএম কাদের। এরশাদ ঠিক কী ধরনের অসুস্থতায় ভুগছেন জানতে চাইলে খানিকটা বিরক্ত হয়েই তার ভাই বলেন, অসুখের ব্যাপার হলো পারসোনাল ব্যাপার। অসুখের ইনফরমেশন দিতে আমি বাধ্য নই। এটা আমি দেব না। এটা কোনো হসপিটালে চাইলেও পাবেন না। নিবার্চনের আগে এরশাদের বিদেশে যাওয়া নিয়ে সরকারের দিক থেকে কোনো নিষেধ আছে কি না- এ প্রশ্নও জিএম কাদেরে কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি বলেন, কদিন আগে দলে বড় রদবদল হয়েছে (মহাসচিব পরিবতর্ন)। তিনি দল পরিচালনা করছেন। তিনি কন্ট্রোলে আছেন। এটার (নিষেধ) কোনো কারণ নেই। এটা নিয়ে আমি মনে করি, কোনো বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। বিধি নিষেধ যদি থাকত, তাহলে দলের রদবদল তো হলো, সেটা আর সম্ভব হতো না। কাদেরের ভাষায় এ ধরনের একটি কথা গতবার ‘রটেছিল’। এ কারণে এবারও তেমন আশঙ্কার কথা কেউ কেউ বলছেন। এরশাদের চিকিৎসায় বাধার অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জাতীয় পাটির্র নতুন মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এটা মনে করার কারণ নাই যে তিনি বড় ধরনের অসুস্থতার মধ্যে রয়েছেন। উনি যখনই মনে করেন যে অসুস্থতাজনিত কারণে তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে হবে, আমরা যাব। সেটা নিয়ে কোনো বাধা নাই। রাঙ্গার দাবি, মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির পরই এরশাদ সিঙ্গাপুরে যেতে চান। নমিনেশন পেপার উইথড্র করার সময় শেষ হচ্ছে ৯ তারিখে। আমরাই উনাকে বলছি, স্যার ৯ তারিখের পরে যান। অসুবিধার তো তেমন কিছু নাই। পাটির্র প্রধান দেশের বাইরে থাকলে আমাদেরও তো খারাপ লাগে। পাটির্র অফিসের সামনে গাড়িতে বসে দুপুরে কমীের্দর সঙ্গে কথা বলার পর এরশাদ বাসায় ফিরে যান। পরে অনুষ্ঠানে তিনি টেলিফোনের মাধ্যমে দলের নেতাকমীের্দর উদ্দেশে কথা বলেন। জাতীয় পাটির্ একটি ‘কঠিন সময়’ মন্তব্য করে এরশাদ বলেন, সামনে আরও কঠিন সময় আসবে। তবে পাটির্র জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। জাপা থাকবে, জাপা আছে। আমাদের সুদিন আসবে।