খুচরা ও পাইকারিতে প্রায় ৮ টাকা বেড়েছে দাম

এবার মোটা চালের বাজারে উত্তাপ

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২২, ০০:০০ | আপডেট: ২৮ মে ২০২২, ০৯:১৯

ম যাযাদি রিপোর্ট

ক্রমেই নিয়ন্ত্রহীন হয়ে পড়ছে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার। সবধরনের আমদানি পণ্যের চড়া বাজারে কয়েকগুণ উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে চালের দাম। গত সপ্তাহে চিকন চালের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পর এবার দাম বেড়েছে মোটা চালের। সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে প্রায় ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মোটা চালের দাম; চড়াভাব অব্যাহত আছে চিকন চালেও। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার রাজধানীর বাজারে আরেক দফা দাম বেড়েছে ডিম, পেঁয়াজ ও গরম মসলার। আমদানিকৃত রসুনও বিক্রি হয়েছে গত সপ্তাহের মতো ২০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও চড়া দাম অব্যাহত রয়েছে মসুর ডাল, আটা-ময়দা, তেল ও চিনিসহ অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যে। 'চিকন চালের দামের প্রভাব পড়তে পারে মোটা চালে', গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের এমন আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। এদিন রাজধানীর পাইকারি বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে ৩ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৪৪ -৪৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে মানভেদে তা ৫-৬ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫০-৫২ টাকা দরে। আর চাহিদা বেশি থাকায় খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আটাশে প্রায় ৮-১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৫-৫৬ টাকা দরে। অন্যদিকে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৬৬-৭০ টাকা এবং নাজির শাইল বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা দরে। এছাড়া পাইকারিতে ৫০ কেজির পোলাওর চালের বস্তায় প্রায় ২৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৩০০ টাকা দরে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানায়, গত বুধবার থেকেই পাইকারিতে আটাশ ও স্বর্ণার দাম বাড়তি। বৃহস্পতিবার ২০ কেজির বস্তায় উভয় চালে প্রায় ১৫০ টাকা এবং শুক্রবার তা ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পায়। এতে ভোক্তা পর্যয়ে প্রতি কেজি মোটা চালের জন্য ব্যয় বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এদিকে সব ধরনের মৌলিক পণ্যের সীমাহীন চড়া দামে রীতিমতো বিপর্যস্ত সাধারণ ক্রেতারা। এরমধ্যে মোটা চালের দাম কেজিতে ৮-১০ টাকা বৃদ্ধিতে ক্রেতা অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। তেল চালের পাশাপাশি জিরা, দারচিনি ও এলাসসহ দাম বেড়েছে ভারতীয় পেঁয়াজেরও। প্রতি কেজি জিরা প্রায় ৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৪৩০ টাকা, দারচিনিতে ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা এবং ভালো মানের এলাসে প্রায় ৪০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও ৮-১০ টাকা দাম বেড়ে ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৮-৬০ টাকা দরে। তবে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির ডিমে। ঈদের পর গত কয়েক সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমে প্রায় ৪০ টাকা এবং সপ্তাহ ব্যবধানে প্রায় ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ১৬০ এবং ২৯০-৩০০ টাকা দরে। এছাড়াও আগের অর্থাৎ ৬৮০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছ গরুর মাংসের কেজি। অন্যদিকে চাল, ডাল, তেল ও ডিমের মতো অতি জরুরি ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে চাহিদা কমেছে সবজির বাজারের। ফলে গত সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় এ সপ্তাহেও কমতির দিকে রয়েছে সবজির দাম। এছাড়াও প্রায় অপরিবর্তি রয়েছে রাজধানীর মাছের বাজার। এদিন বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৫০০-১৬০০ টাকার উপরে। আর মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৯০০-১১০০ টাকার মধ্যে। প্রতি কেজি বোয়াল আকার ভেদে বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকা, আইর মাছের কেজিতে ৬০০-৭০০ টাকা, বায়লা মাছের কেজিতে ৮০০ টাকার উপরে। রুই মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩৭০ টাকা, কাতল মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকা, শোল মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা, পাবদার কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা, কৈ ও পাঙাশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা দরে। এছাড়া বড় গলদা চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা এবং ছোট হরিণা চিংড়ি বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।