হানাদারমুক্ত ময়মনসিংহ মাদারীপুর-জামালপুর

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আজ ১০ ডিসেম্বর। একাত্তরের এ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে পাকসেনাদের পরাজিত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। পাক হানাদারমুক্ত হয় ময়মনসিংহ, মাদারীপুর ও জামালপুর জেলা। সেখানে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ায় মুক্তিকামী জনতা। উল্লসিত চিত্তে বিজয় উদযাপন করেন তারা। একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর ঐক্যবদ্ধ হয়ে চারদিক থেকে ময়মনসিংহ শহরের দিকে অগ্রসর হন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিবাহিনীর চতুমুর্খী আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পিছু হটতে শুরু করে পাক হানাদার বাহিনী। এক পযাের্য় শম্ভুগঞ্জ রেলব্রিজ ধ্বংস করে পালিয়ে যায় তারা। পরে ১০ ডিসেম্বর শহরের সাকির্ট হাউস মাঠে বিজয় পতাকা উড়িয়ে জেলাকে শত্রæমুক্ত ঘোষণা করেন মুক্তিসেনারা। জেলায় বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে দেড়শ’ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। একাত্তরের ২২ এপ্রিল মাদারীপুরে বিমান থেকে গোলাবষর্ণ শুরু করে পাক বাহিনী। শহরে হানাদার ক্যাম্প স্থাপন করে একের পর এক হত্যা করে অসংখ্য নিরীহ বাঙালিকে। তবে ধীরে ধীরে সংগঠিত হতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারাও। ৩ দিন, ২ রাত টানা সম্মুখ যুদ্ধের পর ১০ ডিসেম্বর মাদারীপুরকে হানাদারমুক্ত করেন তারা। একাত্তরের ৯ ডিসেম্বর রাতভর জামালপুরে পাকবাহিনীর প্রধান ক্যাম্প পিটিআই ঘঁাটির ওপর হামলা চালায় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা। এতে ৪ শতাধিক সদস্যকে হারিয়ে দুবর্ল হয়ে পড়ে পাাকিস্তানি সেনাবাহিনী। পরে ১০ ডিসেম্বর সকালে ঘঁাটি ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা। উল্লাসে মেতে ওঠেন জামালপুরের মুক্তিকামী জনতা। এছাড়া ভোলা ও নড়াইল জেলাকেও এদিন মুক্ত করে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ান মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭১ সালের আজকের এ দিনে যুদ্ধ পরিস্থিতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়ায় তাতে পাকিস্তান বাহিনীর কাছে পরাজয়ের স্পষ্ট বাতার্ পৌঁছে যায়। আত্মসমপের্ণর প্রস্তুতি চলে পাকিস্তান শিবিরে। জাতিসংঘ থেকেও সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, সাধারণ পরিষদ গৃহীত যুদ্ধবিরতি ও সৈন্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব পাকিস্তান মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিন ভারত সরকারের সাথে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের সাথে ভারতে বাংলাদেশি ১ কোটি শরণাথীর্ ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সমঝোতা চুক্তি হয়। এ ব্যাপারে ভারতীয় সরকারের মুখপাত্র জানান, দুই দেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে শান্তিপূণর্ভাবে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহী জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত উ থান্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নয়াদিল্লিতে বলেন, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জাতিসংঘের আহŸান ভারত প্রত্যাখ্যান করেনি বা গ্রহণও করেনি। তিনি বলেন, বতর্মান পরিস্থিতিতে বিজয় শুধু তখনই সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশ সরকার কায়েম হবে এবং বতর্মানে ভারতে অবস্থানরত এক কোটি শরণাথীর্ তাদের বাস্তুভিটায় ফিরে যেতে পারবে।