ভিকারুননিসা মেরামতে অনেক পদক্ষেপ আসছে

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোটর্ এক ছাত্রীর (অরিত্রী) আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিয়ে অনেক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। সচিবালয়ে রোববার এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য জানান। ভিকারুননিসার পাকিস্তানি আমলের নাম পরিবতর্ন করা হবে কিনা সে প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের আগেই বলেছি আমরা অনেক পদক্ষেপ নেব। যতগুলো প্রশ্ন এসেছে, যতগুলো অভিযোগ এসেছে, ইতোমধ্যে আদালত একটি কমিটি করে দিয়েছে, আমরাও কমিটি করেছি। আমরাও পরিদশর্ন করব, বিভিন্নভাবে চেষ্টা করব। ‘যেসব অভিযোগ অভিভাবকরা করছেন, শিক্ষাথীর্রা করছে, আপনারা করছেন, সেগুলো থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আরও নিতে থাকব, যাতে একটা আদশর্ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে ।’ ঢাকার নামি এ স্কুলের পরিচালনা পষর্দ কীভাবে কাযর্কর থাকবে, শিক্ষকরা কীভাবে পরিচালিত হবেন, শিক্ষাথীর্রা কীভাবে ভালো থাকতে পারবে, ফলও ভালো হবে, সে রকম কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেয়া শুরু হয়েছে বলে জানান সচিব। রোববার সাকলেও ভিকারুননিসা নূন স্কুল নিয়ে বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যাতে প্রতিষ্ঠানটি ভালোভাবে চলে, শিক্ষক, অভিভাবকরা সন্তুষ্ট থাকেন, যাতে শিক্ষকদের মযার্দা অক্ষুণœ থাকে, শিক্ষাথীর্রা প্রকৃত নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে জন্য আমাদের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী গত ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় আত্মহত্যা করার পর থেকে উত্তেজনা চলছে রাজধানীর এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে। পরিবারের অভিযোগ, পরীক্ষার সময় অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়ার পর তার বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে অপমান করেছিলেন অধ্যক্ষ। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। তবে স্কুল কতৃর্পক্ষের দাবি, অরিত্রী বাষির্ক পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকলসহ ধরা পড়েছিল। অরিত্রীর মৃত্যুর পর টানা ৩ দিন স্কুলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে একদল শিক্ষাথীর্ ও অভিভাবক। এ আন্দোলনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্তে অরিত্রীর আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতার ও শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে চিহ্নিত করা হলে তাদের বরখাস্ত ও এমপিও বাতিল করা হয়। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও র‌্যাবকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই রাতেই গ্রেপ্তার হন শিক্ষক হাসনা হেনা, যার মুক্তির দাবিতে শিক্ষাথীের্দর আরেকটি দল গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে সচিব সোহরাব বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এটুকু বলতে পারি যিনি যা প্রাপ্য নন তিনি যেন তা না পান সে জন্য আমরা সচেষ্ট আছি। কোনো অবস্থাতেই যাতে কেউ অন্যায়ভাবে পরিস্থিতির শিকার না হন, সে চেষ্টাও করছি।’ প্রত্যেকেরই আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে মন্তব্য করে সচিব বলেন, যিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি আদালতে তার বক্তব্য রাখতে পারেন, আদালত সিদ্ধান্ত দেবে। ভিকারুননিসায় ভবিষ্যতে যেন অবৈধভাবে শিক্ষাথীর্ ভতির্ না হতে পারে সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান সচিব সোহরাব। ১৯৫২ সালের ১৪ জানুয়ারি তৎকালীন পূবর্ পাকিস্তানের গভনর্র ফিরোজ খান নূনের স্ত্রী ভিকারুননিসা নূনের উদ্যোগে ঢাকার বেইলি রোডে যাত্রা শুরু করে এ বিদ্যালয়টি। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ধারাবাহিকভাবে ঈষর্ণীয় ফলাফল দেখিয়ে আসা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের বিষয়ে অভিভাবকরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন অরিত্রীর মৃত্যুর পর। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ভাষায়, ‘থলের বিড়াল’ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রভাবশালীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া নিয়ে এক প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমার মন্ত্রী বা আমার বিভাগ, এমনকি মাউশি কখনো কোনো ভতির্র তদবির করেনি, চাকরি তো দূরের কথা। ‘শিক্ষক নিয়োগ আমরা করি না, এটি একটি প্রাইভেট স্কুল, সেখানে একটি ম্যানেজিং কমিটি আছে। তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন, তারাই সে কাজটি করেন। বাট এখন যে প্রমাণগুলো আসছে, ওটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’