নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-কারিগরি) এমপিওভুক্তির সুপারিশ-সংক্রান্ত নথি, দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এমপিওভুক্তির নথি দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয় বলে মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার নথিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ফেরত নথিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কিছু 'অনুশাসন-পর্যবেক্ষণ' ছিল বলে জানা গেছে। ওইসব 'অনুশাসন-পর্যবেক্ষণ' সম্পন্ন করে নথিটি দ্রম্নত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছ।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক শাখার এমপিভুক্তির উইং-এর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গত বৃহস্পতিবার অনুমোদনের জন্য এমপিওভুক্তির ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা-সংক্রান্ত কিছু 'অনুশাসন-পর্যবেক্ষণ' দিয়ে তা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়। সে নথিটি মঙ্গলবার আবারও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তার সঙ্গে এমপিওভুক্তির তালিকা ঘোষণার অনুমতি চেয়ে একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে আসন্ন ঈদের আগেই এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেবেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রায় দুই হাজার নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে। যার মধ্যে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আড়াইশ' থেকে তিনশ'র মধ্যে থাকতে পারে। এ সংখ্যাটি বাড়তে-কমতে পারে।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্তির জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে এই কমিটিকে সহায়তা করতে আরও চার সদস্যের একটি উপকমিটি গঠিত হয়। এ কমিটিকে কারিগরি সহায়তা করতে ব্যানবেইসের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. আবু তাহের খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি কাজ করেছে। তার আগে এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ফৌজিয়া জাফরীন স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার শর্ত পূরণ করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে যায়যায়দিনকে বলেন, 'এমপিওভুক্তির নীতিমালা অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান কাম্য শর্ত পূরণ করেছে ও প্রাপ্ত তথ্য মাঠ কর্মকর্তারা সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে সেগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে, পৃথকভাবে মন্ত্রণালয় থেকেও যাচাই-বাছাই করেছি। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে তথ্য আনা হয়েছে। যাদের শর্ত পূরণ করেছে ও যাচাই-বাছাইয়ে সঠিক পাওয়া গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানকে খসড়া তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।'
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৯ সালের অক্টোবরে দুই হাজার ৬২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এরপর ২০২০ সালে নতুন করে আর কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারও আগে ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে নতুন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও'র কাজ শুরু হয়। তার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৯ মে '২১ এমপিওভুক্তির বিদ্যমান 'এমপিও নীতিমালা' সর্বশেষ দফায় সংশোধন করেছে। দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এমপিওভুক্ত হয়নি এখনো প্রায় ছয় হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
\হ
\হ
Copyright JaiJaiDin ©2022
Design and developed by Orangebd