আ’লীগের করা আইনে সুবিধা পেল জামায়াত

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ডিগবাজির সুযোগ দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করায় নিবন্ধনহীন দলের প্রাথীর্ ও হঠাৎ দল পরিবতর্নকারীদের নিবার্চনে অংশ নেয়ার পথ খুলে যায়। আর এই সুযোগটিই এবার নিয়েছে নিবন্ধন হারানো দল জামায়াতের প্রাথীর্রা। নিবার্চন কমিশনের কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, শুধু জামায়াতের প্রাথীর্রাই নয়, অনেক প্রাথীর্ আছেন, যারা নিজের দল ছেড়ে হঠাৎ অন্য দলের যোগ দিয়ে প্রাথীর্ হয়েছেন। ইসির যুগ্ম-সচিব পযাের্য়র কমর্কতার্রা জানান, ২০১৪ সালের দশম সংসদ নিবার্চনের আগে একটি আইন ছিল, যেখানে বলা হয়েছেÑ কোনো দলের প্রাথীর্ হতে হলে সেই দলের যে কোনো পযাের্য় কমিটিতে অন্তত তিন বছর সদস্য হিসেবে থাকতে হবে। কিন্তু ২০১৩ সালে আরপিও থেকে সেই বিধানটি তুলে দেয়া হয়। ফলে ‘ডিগবাজি’ ওয়ালাদের পথ খুলে যায়। অথার্ৎ, প্রাথীর্ হওয়ার জন্য একটি দলের সদস্যপদে নিদির্ষ্ট সময় থাকার আর বাধ্যবাধকতা নেই। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অন্তত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াতের ২২ জন নেতা বিভিন্ন আসন থেকে প্রাথীর্ হয়েছেন। যারা স্বতন্ত্র থেকে না দঁাড়িয়ে বিএনপির প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রাথীর্ হিসেবে লড়ছেন। এ ছাড়া গোলাম মাওলা রনি, মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো লোকও বিএনপি প্রতীক নিয়ে নিবার্চন করছেন। রনি বিএনপিতে যোগ দিয়েই ধানের শীষ প্রতীক পেয়েছেন। আর মান্না নাগরকি ঐক্যের হলেও দলটির নিবন্ধন নেই। এরা সবাই আরপিও থেকে ওই আইনটি তুলে দেয়ার ফলে নিবার্চনে দল থেকে প্রাথীর্ হতে পেরেছেন। ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর দলীয় প্রাথীর্ হতে হলে তিন বছর সংশ্লিষ্ট দলের সদস্য পদে থাকার বিধানটি [১২-এর দফা ১(ঞ)] বিলুপ্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধন বিলের প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করে সংসদীয় কমিটি। এ প্রতিবেদন সংসদে তোলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বী মিয়া। এই বিধান বাতিল করার কথা গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে সে সময় বিএনপি এর বিরোধিতা করে। ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিএনপি হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, বাড়বাড়ি করলে ফল শুভ হবে না। বিশেষ দলকে সুবিধা দিতে আরপিও সংশোধন করতে দেয়া হবে না। বিএনপির ওই হুশিয়ারির পরও জাতীয় সংসদে ওই বিধানটি বিলুপ্ত করেই আরপিও সংশোধনের বিল পাস হয়। ফলে প্রাথীর্ হতে তিন বছর দলে থাকার বাধ্যবাধকতা উঠে যায়। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে নিবার্চন কমিশন আরপিওর কিছু বিধান সংশোধনের প্রস্তাব পাঠায় সরকারের কাছে। এরপর মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর তা সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করা হয়। সে সময় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিধানটি বাতিলের বিষয় জুড়ে দেয়। এ বিষয়ে নিবার্চন কমিশনের নিবার্চন পরিচালনা শাখার যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বলেন, এটা করা উচিত হয়নি। প্রাথীর্ হওয়ার জন্য অন্তত ছয় মাস হলেও দলের পদে থাকার বাধ্যবাধকতা আইনে থাকা দরকার ছিল। এতে রাজনীতিতে একটা শৃঙ্খলা থাকতো। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৩৯টি নিবন্ধিত দলই ভোটের অংশ নিচ্ছে। সবমিলিয়ে প্রাথীর্ রয়েছে ১৮৪৬ জন। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রাথীর্ ৯৬ জন।