দেশে জ্বালানির দাম অন্যান্য দেশের চেয়ে কম :তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলেও তা এখনো অন্যান্য দেশের তুলনায় কম বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। শেখ কামালের ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে 'স্পর্ধিত তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি শেখ কামাল' শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'মূল্যবৃদ্ধির পর এদেশে জ্বালানি তেলের দাম যে পর্যায়ে গেছে, আশপাশের দেশগুলোতে এই পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি অনেক আগেই করেছে। তারপরও আরব আমিরাত, চীন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকংসহ অনেক দেশের চেয়ে তেলের দাম এদেশে কম এবং ভারতের সমান। অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধির পরও অনেক দেশের তুলনায় কম।' তেল পাচার রোধও দাম বৃদ্ধির কারণ উলেস্নখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভারতে ডিজেলের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ১১৪ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা অনেক আগে থেকেই। আমাদের দেশে দাম কম হওয়ার কারণে সীমান্ত দিয়ে প্রচুর জ্বালানি তেল পাচার হয়ে যাচ্ছিল।' হাছান মাহমুদ বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার জ্বালানি ও বিদু্যৎ খাতে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছিল। আশপাশের দেশগুলো এ ধরনের ভর্তুকি দেয়নি। সেসব দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক আগেই বাড়ানো হয়েছে। এ দেশের চেয়ে ওই দেশগুলোতে জ্বালানি তেলের মূল্য অনেক বেশি। তিনি বলেন, দেশের পক্ষে বর্তমানে এভাবে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভবপর নয়। এতে সাধারণ মানুষের কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। কেননা বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন হয়তো অনেক বিশেষজ্ঞ রাত ১২টায় টেলিভিশন গরম করবেন। এ দেশে তো নানা ধরনের বিশেষজ্ঞ রয়েছে। তারা সবজান্তা বিশেষজ্ঞ। কেউ ঢাবিতে আইন পড়ে এবং পড়িয়ে অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ, আবার কেউ অর্থনীতি পড়ে তেল-গ্যাস বিশেষজ্ঞ। অর্থাৎ সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা টেলিভিশনে নানা ধরনের কথা বলবেন। তেলের দাম বাড়ার সুযোগে পরিবহণ খাতে ভাড়া যেন অতিরিক্ত বেশি না হয় তা সরকার দেখবে বলেও আশ্বাস দেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, 'যদি একটি বাসে ৫০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা থাকে এবং এর মধ্যে যদি ৭০ ভাগ আসন পূর্ণ থাকে তাহলে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে মাত্র ২৯ পয়সা। বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৮০ পয়সা করে ভাড়া নেওয়া হয়। সেটি বেড়ে এখন দুই টাকা নয় পয়সা হবে। সরকার পরিবহণ সেক্টরসহ সবার সঙ্গে বসবে এবং মূল্যবৃদ্ধির অবৈধ সুযোগ যাতে কেউ নিতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে।' মন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। কয়েকদিন ধরে তারা বলছেন যে, বাংলাদেশ শ্রীলংকা হবে। শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ শ্রীলংকাকে ঋণ দিয়েছে আর শ্রীলংকা সারা পৃথিবীর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে। এটিই ওই দেশের সঙ্গে আমাদের প্রধান পার্থক্য। এছাড়া বাংলাদেশ দক্ষিণ সুদানকেও ঋণ দিয়েছে। এদেশ এখন যেমন ঋণ নেয়, তেমনি ঋণ দেয়ও। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিধায় অনেক বড় বড় দেশ খেলাপি হলেও ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ এক দিনের জন্যও খেলাপি হয়নি। কারণ এ দেশের অর্থনীতির ভিত অনেক গভীরে গ্রথিত।