কোনো স্থান ইজারা দেওয়ার অধিকার সিডিএর নেই

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোনো স্থান আইনগতভাবে ইজারা দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে না বলে জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম নামের একটি সংগঠন। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন সাত কিলোমিটার পরিসরের দেড় কিলোমিটার এলাকা বাদ রেখে বাকি পরিসরকে পর্যটন জোন-১ এবং পর্যটন জোন-২ হিসেবে ভাগ করে টেন্ডারের মাধ্যমে ২৫ বছরের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইজারা দিতে চাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), এমন তথ্য জানিয়ে শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সংগঠনের নেতারা। এছাড়া আইনগত যেকোনো জটিলতা এড়ানোর স্বার্থে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশে ব্যক্তিপর্যায়ে ইজারা প্রদানের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সিডিএকে অনুরোধ জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, যেকোনো উন্নতমানের নগরীতে সর্বশ্রেণির মানুষের অবকাশ ও বিনোদনের জন্য খেলার মাঠ, পার্ক ও উন্মুক্ত পরিসরের নেটওয়ার্ক থাকে। চট্টগ্রাম নগরীতে তার সিকিভাগও নেই। নানা উপায়ে তাতে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সীমিত বা বন্ধ করা হয়েছে। অথচ বর্তমানে উন্নত বিশ্বের পরিশীলিত নগরগুলোতে উন্মুক্ত পরিসর বৃদ্ধির জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। ব্যক্তিগত খাতে ইজারা দিয়ে বিস্তৃত সৈকত বা নদীতীরে প্রবেশ মূল্যের বিনিময়ে \হকোথাও প্রবেশের অধিকার হরণ করা হয়েছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। সম্মেলনে বলা হয়, সিডিএ কর্তৃক নগরের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা এবং বিস্তৃত অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) পতেঙ্গা সৈকতকে পাবলিক ওপেন স্পেস বা সর্বজনের উন্মুক্ত পরিসর হিসেবে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। সুভাষ বড়ুয়া আরও জানান, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণপিপাসুদের আগমন উন্মুক্ত রেখেও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। সৈকতে আগতদের বিনোদন ও অবসরের পরিপ্রেক্ষিতে জলযান ভ্রমণ, ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট, হরেক রকমের দোকান, খেলার ব্যবস্থা ইত্যাদি নির্মাণ করে চউকের নিয়ন্ত্রণাধীনে রেখে এসব পরিচালনার সুযোগ ব্যক্তিগত খাতে ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। যাতে বিনিয়োগকারী কর্তৃক নিরাপত্তাসহ ভ্রমণকারীদের সকল সুবিধা নিশ্চিত করে সহজেই মুনাফা উঠিয়ে আনা যায়। চউককে সেই পথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ঢাকায় তুরাগ নদের দখল ও দূষণ নিয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের ১৮ক, ২১, ৩১ ও ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের উলেস্নখ করে 'পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, সব উন্মুক্ত জলাভূমি, সমুদ্র, সমুদ্রসৈকত, নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড়, বিল, নদীর পাড়, পাহাড়-পর্বত, টিলা, বন এবং বাতাস ইত্যাদি কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানিকে বাণিজ্যিকভাবে ইজারা দেওয়া চলবে না' মর্মে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন উলেস্নখ করে সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কার্যত সিডিএ কোনো স্থান আইনগতভাবে ইজারা দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে না। ফোরামের নেতারা বলেন, কোনো স্থাপনা বা এলাকার সংরক্ষণ ব্যয় সংস্থানের জন্য কেবলমাত্র সেই স্থাপনা বা এলাকাকে বেসরকারি পর্যায়ে লিজ দেওয়াই একমাত্র সমাধান নয়- এই কথাটি নীতি-নির্ধারকদের বিবেচনায় আসতে হবে। যেকোনো শর্তেই লিজ দেওয়া হোক না কেন চূড়ান্ত বিচারে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সভাপতি ডক্টর সেকান্দর হোসেন খানসহ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।