চিকিৎসাসেবা: আস্থার সংকটে নতুন মাত্রা

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

সাখাওয়াত হোসেন
চিকিৎসকরা বিভিন্ন অজুহাতে যখন-তখন চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেয়ায় রোগীরা প্রায়ই এ ধরনের দুভোের্গ পড়েন। ছবিটি গত রোববার চট্টগ্রাম থেকে তোলা Ñফাইল ছবি
একশ্রেণির চিকিৎসকের অদক্ষতা-অবহেলা এবং সরকারি-বেসরকারি বিপুল সংখ্যক চিকিৎসাকেন্দ্রে নিম্নমানের সেবাসহ বিভিন্ন কারণে দেশীয় চিকিৎসাব্যবস্থায় দীঘির্দন ধরে আস্থার সংকট থাকলেও এবার এতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। গত কয়েকদিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি নামিদামি হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আকস্মিক অভিযানে মেয়াদোত্তীণর্ রি-এজেন্ট (ডায়াগনোস্টিক টেস্টে রোগ নিণের্য়র জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান) ও অস্ত্রোপচারে ভেজাল ওষুধের ব্যবহার ধরা পড়ায় এবং চিকিৎসকদের অদক্ষতা-অবহেলায় বেশ কয়েকজন রোগীর মৃত্যু ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেবাপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতার পাশাপাশি এক ধরনের ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য ‘উদ্বেগজনক’ বলে সেবা-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। চিকিৎসাসেবায় এই নেতিবাচক অবস্থানের জন্য অনেকে একশ্রেণির চিকিৎসকের অদক্ষতা, দাম্ভিকতা, নিষ্ঠাহীনতা এবং সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিমুনাফালোভী অপকৌশলকে দায়ী করলেও সেবা-সংশ্লিষ্টরা বলছেন ভিন্ন কথা। চিকিৎসা খাতে এই সংকটের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তা ও এলোমেলো পরিকল্পনাকেই বিশেষভাবে দায়ী করছেন তারা। তাদের ভাষ্য, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দুবর্ল নজরদারির সুযোগে রাজধানীসহ সারাদেশে বিপুলসংখ্যক অনুমোদনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক গজিয়ে উঠেছে। নামিদামি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নানা অনিয়ম-দুনীির্ত চলছে। অথের্লাভী হাসপাতাল মালিকরা নিম্নমানের সেবা দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংক হাতিয়ে নিচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। ফলে চিকিৎসা খাতে সহজেই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এদিকে শুধু নিষ্ক্রিয়তা কিংবা এলোমেলো পরিকল্পনাই নয়, ব্যক্তিগত নানা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊধ্বর্তন কমর্কতার্রা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোকে অনিয়ম-দুনীির্ত করার সুযোগ করে দিচ্ছে বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করলে দেশের সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মান অনেকাংশে উন্নত হতো। যা দেশের মানুষের আস্থার সংকট সহজেই কাটিয়ে দিতে পারত। অনুমোদনহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক পরিচালনা, নিম্নমানের চিকিৎসা ও সেবাপ্রত্যাশী মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত অথর্ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুনীির্তকে পরোক্ষভাবে প্রশ্রয় দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একশ্রেণির কমর্কতার্ আথির্কভাবে লাভোবান হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টরা। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন নিবার্হী ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে অন্যতম। এই অধিদপ্তরের প্রধান কাজ দেশের সবর্স্তরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, কমর্পরিকল্পনা এবং প্রশাসনিকভাবে বিভিন্ন নীতি কাযর্কর করা। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়কে স্বাস্থ্যসেবা-সম্পকির্ত দিকনিদের্শনা প্রণয়নে কারিগরি সহযোগিতাও প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, দেশীয় চিকিৎসায় আস্থাহীনতার কারণে প্রতিবছর শুধু চিকিৎসার জন্যই তিন লাখের বেশি বাংলাদেশি দেশের বাইরে পা রাখছেন। এর বড় অংশই যাচ্ছেন ভারতে, যাদের সংখ্যা বছরে দুই লাখের কম নয়। মেডিকেল ট্যুরিজমের বাজার, কারা যাচ্ছে, কারা তাদের আকৃষ্ট করছে, তা নিয়ে দেশীয় ও আন্তজাির্তকভাবে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। এ ধরনের একটি গবেষণা করেছেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুল আলী ও অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড ইউনিভাসিির্টর শিক্ষক ড. অনীতা মাধেকার। গবেষণায় তারা বাংলাদেশি রোগীদের বিদেশমুখিতার গতিপ্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। দেশীয় চিকিৎসাসেবা বাদ দিয়ে কেন তারা বিদেশমুখী হচ্ছেন, চেষ্টা করেছেন এর কারণ খেঁাজার। বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল ট্যুরিজম নিয়ে এক দশক ধরে কাজ করছেন এই দুই গবেষক। প্রথমপযাের্য় তারা ভারতে চিকিৎসা নিয়ে ফেরা ছয়টি বিভাগ ও দুটি জেলার এক হাজার ২৮২ জনের ওপর একটি জরিপ চালান। তাদের তথ্য সংগ্রহ করেন ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের জানুয়ারি পযর্ন্ত। দ্বিতীয় পযাের্য় থাইল্যান্ডে চিকিৎসাসেবা নেয়া ১১৩ জনের ওপর ২০১৭ সালের ফেব্রæয়ারি থেকে জুন পযর্ন্ত আরেকটি জরিপ চালান তারা। উভয় জরিপের ফলাফলেই চিকিৎসক ও নাসের্দর প্রতি আস্থার সংকট বিদেশমুখিতার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রথমপযাের্য়র জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে বিদেশে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রায় ২৬ শতাংশ মানুষ দেশীয় চিকিৎসকের অদক্ষতার কথা জানান। নাসের্র অদক্ষতাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ১২ শতাংশ মানুষ। অপযার্প্ত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, রোগীর নিরাপত্তা, উচ্চব্যয়, ভুল চিকিৎসা, নিম্নমানের ওষুধ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতার কথাও বলেন অনেকে। তবে তাদের সংখ্যা নগণ্য। গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব আলী মনে করেন, এই আস্থাহীনতা ক্রমেই বাড়ছে। দেশে বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের কোনো ধরনের জবাবদিহির আওতায় আনা হয় না। এ ছাড়া আমাদের দেশে আরেকটি বড় সমস্যা, হাসপাতালগুলোয় বায়োটেকনোলজিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন চিকিৎসকের লক্ষ্য হওয়া উচিত রোগীর সন্তুষ্টি অজর্ন। শুধু রোগমুক্তি নয়, চিকিৎসকের আচার-ব্যবহার-নৈতিকতাও এর সঙ্গে জড়িত। চিকিৎসক একটু ভালো কথা বললে, সহমমীর্ হলে রোগীরা ভালো অনুভব করেন। এটি রোগীর মানসিক শক্তিও বাড়িয়ে দেয়। তবে চিকিৎসকের সবচেয়ে বড় যে গুণ থাকতে হয়, তা হলো দক্ষতা। অথচ দেশি চিকিৎসাব্যবস্থায় এর যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এদিকে দেশের উচ্চ আদালতও দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর পাবলিক পারসেপশন এবং ডাক্তারদের ব্যবহার ভালো না বলে মন্তব্য করেছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ‚মিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য অথর্নীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও পরিচালক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ মনে করেন, স্বাস্থ্যসেবার ওপর মানুষের আস্থা বিনষ্ট হলে চিকিৎসক সমাজও ভুগবে। মানের দিক থেকে স্বাস্থ্য খাতের বতর্মান অবস্থান সম্পকের্ তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে গুণগত মান দুটি অংশের ওপর নিভর্রশীল। এর একটি হচ্ছে মেডিকেল কেয়ার, যেটিকে আমরা বলি থেরাপিউটিক কেয়ার বা কোর মেডিকেল কেয়ার। চিকিৎসকের প্রথম কাজ হলো রোগ নিণর্য় করা। রোগ নিণর্য় করতে পারলে চিকিৎসা করা যায়। গুণগত মানের মেডিকেল কেয়ারের শতর্ হলো, সঠিকভাবে রোগ নিণর্য় করা এবং সঠিক প্রেসক্রিপশন দেয়া বা সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা। রোগ নিণর্য় ও প্রেসক্রিপশন সঠিক হলে রোগ নিরাময় হয়। ট্রিটমেন্ট বলতে শুধু প্রেসক্রিপশন কিংবা চিকিৎসককে বোঝায় না। এর সঙ্গে অন্য অনেক বিষয় যুক্ত। এখানে চিকিৎসকের ভ‚মিকা যেমন লাগে, তেমনি রোগী বা রোগীর পরিবারের ভ‚মিকাও প্রয়োজন। চিকিৎসকের কাজ সঠিকভাবে রোগ নিণর্য় করা এবং সেই অনুযায়ী প্রেসক্রিপশন দেয়া। বাংলাদেশে আগে ডায়াগনোস্টিক টেস্টের সুযোগ কম থাকায় চিকিৎসকরা ম্যানুয়ালি রোগ নিণের্য়র চেষ্টা করতেন। এখন এই সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসকরা সাধারণত ডায়াগনোস্টিক টেস্ট দিয়ে দেন। এটি দেয়ার পেছনে চিকিৎসকদের যুক্তি ও অধিকার রয়েছে। সমস্যা তখনই হয়, যখন এই ডায়াগনোসিস সঠিক হয় না। ফলে চিকিৎসক যে প্রেসক্রিপশন দেন, তা ভুল হয়। অথচ গুণগত চিকিৎসার প্রথম শতর্ হচ্ছে, সঠিক ডায়াগনোসিস। আর সঠিক ডায়াগনোসিস করতে হলে ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলো মানসম্মত হতে হবে। বাংলাদেশে এই জায়গাটিতে অনেক দুবর্লতা রয়েছে। ভরসা করার মতো দেশে একটি ল্যাবও নেই, যেখানে পরীক্ষা করালে তা আন্তজাির্তক মানের হবে। এর প্রভাব সাজাির্রতেও পড়ে এবং রোগী কিছু ক্ষেত্রে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়। চিকিৎসক যদি সঠিকভাবে রোগীর সঙ্গে কথা বলেন, রোগের ইতিহাস জানেন এবং রোগের সিম্পটমের সঙ্গে ডায়াগনোস্টিক টেস্টের রিপোটর্ মেলান, তাহলে ডায়াগনোস্টিক টেস্টের মান কতটা নিভুর্ল, তা বুঝতে পারবেন। চিকিৎসকের এটি খেয়াল রাখাও গুণগত স্বাস্থ্যসেবার একটি অংশ বলে মনে করেন অধ্যাপক আবদুল হামিদ। স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমাদের দেশে মনে করা হয়, গুণগত চিকিৎসক নিয়োগ দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বাস্তবে তা নয়। আসলে গুণগতমানের চিকিৎসাসেবা দিতে হলে বিভিন্ন স্কেলের (যেমন সাজর্ন, নাসর্, অ্যানেস্থেশিওলজিস্ট) নিদির্ষ্টসংখ্যক লোকবল ও সরঞ্জাম প্রয়োজন। যা আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারের উপযুক্ত পরিকল্পনা ও এর সঠিক বাস্তবায়ন প্রয়োজন। আগামী ৫ বা ১০ বছরে কত অ্যানেস্থেশিওলজিস্ট, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ দরকার, তা তৈরি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া নাসর্ বা অন্যান্য টেকনিশিয়ানের যে ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণও জরুরি। অথচ এ ব্যাপারে সরকার বরাবরই নিষ্ক্রিয় ভ‚মিকা পালন করে আসছে বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, মেয়াদোত্তীণর্ রি-এজেন্ট (ডায়াগনোস্টিক টেস্টে রোগ নিণের্য়র জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান) ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করায় ও মেয়াদোত্তীণর্ ওষুধ বিক্রি করায় ২ জুলাই রাজধানীর ধানমÐির পপুলার ডায়াগনোস্টিক সেন্টারকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র?্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র?্যাব)-২-এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর মাত্র দুইদিন পর অপারেশন থিয়েটারে মেয়াদোত্তীণর্ ওষুধ রাখায় জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালকে আট লাখ টাকা জরিমানা করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপরিষ্কার পরীক্ষাগারে রোগ নিণর্য় ও নোংরা পরিবেশের কারণে ইবনে সিনা হাসপাতালকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে একই আদালত। গত ৮ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চট্টগ্রামের আলোচিত ম্যাক্স হাসপাতালেও নানা অনিয়ম ও দুনীির্ত ধরা পড়ে। এর আগে ম্যাক্স হাসপাতালের কতর্ব্যরত চিকিৎসক, নাসর্ ও হাসপাতাল কতৃর্পক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গত ৫ মাচর্ চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চোখের ছানি অপারেশন করতে গিয়ে ২০ জন ভুল চিকিৎসার শিকার হন। তাদের মধ্যে ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়েছে।